খােলা বাজার২৪, বুধবার, ২৫ জানুয়ারি ২০১৭: নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে চলতি সপ্তাহেই সার্চ কমিটি গঠন করা হবে। এখন শেষ মুহূর্তের কাজ করছে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন মঙ্গলবার এই তথ্য জানিয়েছেন। সে হিসেবে আগামী দু’দিনের মধ্যে সার্চ কমিটি গঠিত হতে যাচ্ছে।
প্রেস সচিব বলেন, “নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে চলতি সপ্তাহেই সার্চ কমিটি গঠন সংক্রান্ত চিঠি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হবে।”
গত বারের মতো এবারও সার্চ কমিটি গঠনের পর এর সাচিবিক দায়িত্ব পালন করবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
সার্চ কমিটি গঠনের কথা এর আগে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বললেও রাষ্ট্রপতির কার্যালয় থেকে মঙ্গলবারই প্রথম তা নিশ্চিত করা হল।
রাষ্ট্রপতি একটি আইনের অধীনে ইসি গঠন করবেন বলে সংবিধানে বলা হলেও সেই আইনটি এখনও হয়নি।
আগের রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের পর একটি সার্চ কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে মনোনীতদের নামের তালিকা থেকে নতুন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দিয়েছিলেন।
সেবার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন নেতৃত্বাধীন চার সদস্েযর সার্চ কমিটি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) হিসেবে দুজনের নাম প্রস্তাব করেছিলেন; তার মধ্য থেকে বেছে নেওয়া হয়েছিল সাবেক আমলা কাজী রকিবকে।
সার্চ কমিটির প্রস্তাব করা ১০টি নাম থেকে পাঁচজন নির্বাচন কমিশনার বেছে নিয়েছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি।
কাজী রকিব নেতৃত্বাধীন সেই ইসি ফেব্র“য়ারির প্রথম সপ্তাহে মেয়াদ শেষ করবে। এরপর পাঁচ বছর মেয়াদী অনধিক পাঁচজন নিয়ে নতুন ইসি গঠন করতে হবে রাষ্ট্রপতির।
আইন না হওয়ায় এবারও একই পদ্ধতিতে ইসি গঠন করতে যাচ্ছেন বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এলক্ষ্েয তিনি সংলাপ করেছেন এবং রাজনৈতিক দলগুলো আশা করছে যে তিনি একটি গ্রহণযোগ্য ইসি গঠন করবেন।
গত ১৮ ডিসেম্বর সংসদের বাইরে থাকা বিএনপির সঙ্গে সংলাপ শুরু করেন আবদুল হামিদ। একমাস ধরে ৩১টি দলের সঙ্গে চলা ওই সংলাপ ১৮ জানুয়ারি শেষ হয়।
অধিকাংশ দল আইন প্রণয়নের তাগিদ দিলেও তা না হওয়া পর্যন্ত সার্চ কমিটির পক্ষে সায় দিয়েছে। সার্চ কমিটিতে কাদের কাদের রাখা যায়, সে প্রস্তাবও এসেছে দলগুলো থেকে।
বঙ্গভবনের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শতে বলেন, “এবার সার্চ কমিটির সদস্য সংখ্যা গতবারের চেয়ে বাড়তে পারে।
“উচ্চ আদালতের দুজন বিচারপতি, সরকারি কর্ম কমিশন ও মহাহিসাব নিরীক্ষকের বাইরেও একাধিক ব্যক্তি কমিটিতে থাকতে পারেন।”
সার্চ কমিটিতে প্রস্তাবিত নাম নিয়ে ইতোমধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং তাদের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপির মধ্যে বাদানুবাদ চলছে।
বিএনপি সার্চ কমিটিতে সাবেক প্রধান বিচারপতি কে এম হাসানের নাম প্রস্তাব করেছে বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দাবি করার পর থেকে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য চলছে।
বিএনপি এই নাম প্রস্তাব করেনি দাবি করে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনার খবর ক্ষমতাসীন দল জানতে পারলে নিরপেক্ষ ইসি গঠন নিয়ে সন্দেহ থেকে যায়।
এর পাল্টায় ওবায়দুল কাদের ইসি গঠনের সরকারি কোনো হস্তক্ষেপ নেই দাবি করে বলেন, বিএনপি যদি নাম প্রস্তাব নাই করে, তাহলে গোপনীয়তা ভঙ্গের অভিযোগ করে কীভাবে?