খােলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারি ২০১৭: অনেক সময় দাম্পত্য সম্পর্কের জ্বলজ্বলে ত্রুটিগুলোও সাদা চোখে ধরা পড়ে না। আর সেই কথা মাথায় রেখেই বিজনেস ইনসাইডার ৭টি বিজ্ঞানসম্মত লক্ষণ জড়ো করেছে যেগুলো আপনার রোমান্টিক স্বর্গ যে সমস্যায় পাড়ে গেছে তার নির্দেশক। তবে আপনার দাম্পত্য সম্পর্কেও যদি এগুলোর এক বা একাধিক লক্ষণ দেখা যায় তার মানে এই নয় যে, আপনার দাম্পত্য সম্পর্কটিও ভাঙ্গনের পথে এগিয়ে যাবে।মনে রাখবেন যে, এই লক্ষণগুলো মূলত সাধারণ কিছু প্রবণতার প্রতিনিধিত্ব করে। যা হয়তো আপনার বিশেষ দাম্পত্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে নাও প্রাসঙ্গিক হতে পারে। আর আপনার যদি মনে হয় যে, আপনার সম্পর্কে সমস্যা আছে তাহলে তা একান্তই আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার যে আপনি কীভাবে সে সমস্যার সমাধান করবেন। সুতরাং ভ্রমবাতুলতায় আক্রান্ত না হয়ে বরং গভীর চিন্তাশীলতার সঙ্গে বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখুন।
১. আপনার জীবন সঙ্গী বা সঙ্গিনী বাস্তবে যেমন তারচেয়ে আপনি তাকে আরো বেশি বা কম করে দেখেন প্রচুর সংখ্যক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব দম্পতিদের মধ্যে পরস্পরের ব্যাপারে “ইতিবাচক মোহ” কাজ করে তাদের সম্পর্ক স্থায়ী হয়। স্থিতিশীল ও সন্তোষজনক দাম্পত্য সম্পর্কে লোকে পরস্পরকে আদর্শায়িত করে এবং তাদের মধ্যকার সেরা গুনটি দেখেন। উদারহণত, আপনি হয়তো আপনার সঙ্গী বা সঙ্গিনীকে তারা বাস্তবে যা বা তারা নিজেকে যা মনে করে তার চেয়ে বেশি আকর্ষণীয়, বেশি দয়ালু এবং বেশি স্মার্ট হিসেবে দেখতে পারেন। অন্যদিকে, আপনি যদি এখনো আপনার সঙ্গী বা সঙ্গিনীর চেহারা, বুদ্ধিমত্তা এবং দয়াকে সাধারণ মাত্রার মনে করেন এবং আপনার কল্পনার আদর্শ জীবন সঙ্গী বা সঙ্গিনীর চেয়ে পুরোপুরি আলাদা মরেন করেন তাহলে তা সম্ভবত কোনো ভালো লক্ষণ নয়।
২. আপনি আপনার সঙ্গী বা সঙ্গিনীকে খাটো করে দেখেন ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞনী এবং গোটম্যান ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা জন গোটম্যান দাম্পত্য সম্পর্কের সন্তুষ্টি এবং স্থিতিশীলতা বিষয়ক বিজ্ঞান নিয়ে কয়েক দশক পড়াশোনা করেছেন। তিনি বলেন, সঙ্গী বা সঙ্গিনীকে নিজের চেয়ে খাটো করে দেখাটা কোনো সম্পর্কের জন্য মৃত্যু চুম্বনের মতো।
৩. আপনি ভাবেন আপনার এর চেয়ে ভালো কোনো বিকল্প সঙ্গী বা সঙ্গিনী আছে আপনি যদি ভাবেন আপনি আপনার কোনো বন্ধুর সঙ্গে সম্পর্ক গড়লে আরো বেশি সুখি হতেন। আর সেই ব্যক্তিও আপনার সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে আগ্রহী তাহলে আপনি নিশ্চিতভাবেই সমস্যায় আছেন।
৪. আপনার এমন অনুভূতি হয় যে আপনি সম্পর্কের ফাঁদে আটকা পড়ে গেছেন গবেষণায় দেখা গেছে, বৈষয়িক বন্ধন- যেমন যৌথ অ্যাকাউন্ট বা অংশীদারিভিত্তিক লিজ থাকলে সম্পর্ক সহজে ভাঙ্গে না। অন্যদিকে, কেউ যদি মনে করে তারা সম্পর্কের ফাঁদে আটকা পড়েছেন তাহলে মাত্র আট মাসের মধ্যেই তাদের বিচ্ছেদ ঘটে।
৫. আপনি বা আপনার জীবন সঙ্গী বা সঙ্গিনী সম্পর্ক নিয়ে অসন্তুষ্ট নরওয়েতে, কয়েকহাজার গর্ভবতী নারীর ওপর পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, লিঙ্গ ভেদে সম্পর্ক ভাঙ্গার পূর্ব লক্ষণগুলো ভিন্ন হয়। বিশেষকরে, কোনো দম্পতির নারী সদস্যটি যদি তার সম্পর্ক নিয়ে অসন্তুষ্ট হন তাহলে তাদের সম্পর্ক শেষ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। ওই গবেষণায় অংশ নেওয়া নারীদের ২০% ছিলেন সবচেয়ে কম অসন্তুষ্ট। আর সন্তুষ্ট নারীদের তুলনায় তাদের সম্পর্ক ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল তিনগুন বেশি। তবে যুক্তরাষ্ট্রে পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে, পুরষদের অসন্তুষ্টিও সম্পর্ক ভাঙ্গার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৬. আপনার সম্পর্কে নাটকীয় উত্থান-পতন আছে গবেষণায় দেখা গেছে, নাটকীয়তা পছন্দকারী দম্পতির সদস্যরা তাদের জীবন সঙ্গী বা সঙ্গিনীর প্রতি করা প্রতিশ্র“তিগুলোর ব্যাপারে স্থির থাকতে পারেন না। এরা আলাদাভাবে অনেক বেশি সময় কাটান; সম্পর্ক বিষয়ে তাদের মতামতও কম থাকে; আর তাদের পরিবার এবং বন্ধুরাও তাদের সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার ব্যপারে কম সহযোগিতামূলক হন।
৭. আপনারা পরস্পরের সামাজিক বিচরণের ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে সংযোগ স্থাপন করেন না ২০১৩ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, কোনো দম্পতির ফেসবুক বন্ধুর নেটওয়ার্ক পর্যবেক্ষণ করেই বলে দেওয়া সম্ভব তাদের সম্পর্ক টিকবে কিনা। যে দম্পতিদের ফেসবুক বন্ধুর তালিকায় মিউচুয়াল ফ্রেন্ড বা উভয়েরই বন্ধু এমন বন্ধুর সংখ্যা কম তাদের সম্পর্ক খুব দ্রুত ভেঙ্গে যায়।