খােলা বাজার২৪, শনিবার, ২৮ জানুয়ারি ২০১৭: গাইবান্ধার সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের হত্যাকারীদের আড়াল করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
লিটন স্মরণে শনিবার বিকালে গাইবান্ধায় এক শোকসভায় তিনি একথা বলেন।
“যারা বিভ্রান্তির কুয়াশা সৃষ্টি করে লিটন হত্যাকারীদের আড়াল করতে চায়, তাদের এই ঘৃণ্য উদ্দেশ্য সফল হবে না। হত্যাকারী যেই হোক যত প্রভাবশালীই হোক তাদের খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় আনতে সরকার সংকল্পবদ্ধ।”
গত ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সুন্দরগঞ্জের শাহবাজ গ্রামে নিজ বাড়িতে গুলিতে আহত হন ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে এর দেড় ঘণ্টা পরে তিনি মারা যান।
এ ঘটনার ২৫ দিন পর গত বুধবার গাইবান্ধা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে নানা প্রশ্ন নিয়ে হাজির হন লিটন হত্যা মামলার বাদী তার ছোট বোন ফাহমিদা বুলবুল কাকলী, বড় বোন আফরোজা বারী জোছনাসহ স্বজনরা।
এ হত্যাকাণ্ডের আগে ও পরের কিছু ঘটনাক্রম নিয়ে এই স্বজনরা তাদের উদ্বেগেরে কথা জানান সংবাদ সম্মেলনে।
পরিকল্পিতভাবে ভাড়াটে খুনি দিয়ে লিটনকে হত্যা করা হয়েছে বলে ওইদিন তারা দাবি করেন। তবে কারও বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ তোলেননি।
শোকসভায় কাদের বলেন, “লিটন হত্যাকাণ্ড কে পরিকল্পনা করেছে, কে হত্যা করেছে এতকিছু বুঝি না, তবে এটা বুঝি যে লিটনের হত্যার বিচার হতেই হবে। লিটনের রক্তের দাগ এখনও শুকায়নি। তার লাশ নিয়ে কেউ রাজনীতি করবেন না। এর পরিণাম ভালো হবে না।”
“নিজ ঘরে শত্রু থাকলে বাইরের শত্রুর প্রয়োজন হয় না” মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, “নিজেদের মধ্যে কলহ করে দুর্বল হলে শত্রুরা আঘাত হানবে। ভেদাভেদ ভুলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে প্রতিহত করতে হবে।”
“এমপি লিটন হত্যায় আমাদের হৃদয়, মন, চেতনা ও অনুভূতিতে আঘাত করেছে; তাই সুন্দরগঞ্জবাসীর পাশে জননেত্রী শেখ হাসিনা আছেন এবং থাকবেন।”
লিটনের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের উপ-নির্বাচনে মনোনয়ন নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের কাড়াকাড়ি না করার আহ্বান জানান তিনি।
“মনোনয়ন নিয়ে কাড়াকাড়ি করবেন না। শেখ হাসিনা তাকেই মনোনয়ন দিবেন সুন্দরগঞ্জের মানুষ যাকে চায় এবং তিনিই হবেন মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের যোগ্য উত্তরসূরী।”
শোক সভায় অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম প্রমুখ।
শোক সভা শেষে ওবায়দুল কাদের সবাইকে নিয়ে মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের সাহাবাজ মাস্টারপাড়া গ্রামের বাড়িতে যান এবং তার কবর জিয়ারত করেন।