খােলা বাজার২৪, বুধবার, ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭: শিক্ষাব্যবস্থা বিকৃত করে জাতিকে ভয়াবহ পরিণতির দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। বলেছেন, ‘চলমান শিক্ষাব্যবস্থাকে সাম্প্রদায়িক করা হচ্ছে, শিক্ষাকে ব্যবসায় পরিণত করা হচ্ছে, শিক্ষাকে পাকিস্তানিকরণ করা হচ্ছে। এক কথায় গোটা শিক্ষাব্যবস্থাকে বিকৃত করা হয়েছে। এই প্রচেষ্টা অত্যন্ত ভয়াবহ।’ গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘বাংলাদেশের শিক্ষা ধারার গতিপ্রকৃতি’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বদিউল আলম মজুমদার এসব কথা বলেন। গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন। ২০১০ সালে নতুন শিক্ষানীতি প্রণয়ন করে সরকার। এরপর থেকে হেফাজতে ইসলামসহ ধর্মভিত্তিক দলগুলো শিক্ষানীতি বাতিলের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। এবারের পাঠ্যবইয়ে যে পরিবর্তন করা হয়েছে তাকে নিজেদের আন্দোলনের সফলতা হিসেবে দেখছে হেফাজতে ইসলাম। কোনো কোনো শিক্ষাবিদ মনে করছেন শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে স্বাধীনতাবিরোধী একটি চক্রের ইন্ধনে এবারের পাঠ্যবইয়ে এতবড় পরিবর্তন আনা হয়েছে। শিক্ষাব্যবস্থা বিকৃতির মাধ্যমে জাতিকে ভয়াবহ অন্ধকারের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘শিক্ষাব্যবস্থা বিকৃত করা একটি ভয়াবহ প্রচেষ্টা। একটি অন্ধকারাচ্ছন্ন জাতিকে যেকোনো দিকে নিয়ে যাওয়া যায়। এই অবস্থা জাতির জন্য আত্মঘাতী হবে।’
বিকৃত শিক্ষাব্যবস্থা মুসলমানদের জন্যও আত্মঘাতী উল্লেখ করে সুশীল সমাজের এ প্রতিনিধি বলেন, ‘যারা শিক্ষাব্যবস্থাকে ইসলামিকরণ করছেন এটা মুসলমানদের জন্যও আত্মঘাতী। কারণ অতীতেও দেখা গেছে, যতক্ষণ মুসলমানরা জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা করছে, ততদিন মুসলমানরা বিশ্বের মধ্যে ক্ষমতাধর ছিল।’
শিক্ষাব্যবস্থাকে একমুখী করার তাগিদ দিয়ে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘আজকে শিক্ষাব্যবস্থা তিনটি ধারায় বিভক্ত। মাদ্রাসা থেকে যারা পাস করে তারা ভবিষ্যতে কী করবে? খোঁজ নিয়ে দেখেন মৌলবাদীদের ছেলেমেয়েরা ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ে। নিম্নবিত্ত যারা তারা পড়ায় মাদ্রাসায়। সমস্ত কিছু ঢেলে সাজিয়ে শিক্ষাব্যবস্থাকে একমুখী করা প্রয়োজন।’
পাঠ্যবইয়ের ভুল চরম অদক্ষতার পরিচয় মন্তব্য করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘পাঠ্যবইয়ে পরিবর্তন হয়েছে চরম দুর্নীতি। হেফাজত বা একজন লোক এসে বলল আর অমনি পাঠ্য বই পরিবর্তন হলো, এমনটি নয়। এটা হয়েছে চরম অদক্ষতা, চরম দুর্নীতি এবং অযোগ্যতার কারণে।’