খােলা বাজার২৪, শুক্রবার, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭: রাজশাহীর তানোরে বোরো রোপণের ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষক। তবে এ কাজে আদিবাসী নারী শ্রমিকরা বৈষম্যের স্বীকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পুরুষ শ্রমিকদের সঙ্গে সারাদিন সমান কাজ করেও তারা ন্যায্য মজুরি পাচ্ছে না। জীবনের পুরোটা সময় কৃষি শ্রমিক হিসাবে কাজ করছে। অথচ মজুরির ক্ষেত্রে চরম বৈষম্যের স্বীকার হচ্ছে। তানোর পৌর এলাকার তালন্দ উপরপাড়া আদিবাসী শ্রমিক ৫০ বছর ধরে এ বৈষম্যের স্বীকার হয়েও বাঁচার তাগিদে কাজ করে যাচ্ছেন রানী কিস্কু (৬০)। ফলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন আদিবাসী এই নারী কৃষি শ্রমিক। তালন্দ পার হয়ে রাস্তার পূর্ব দিকে বিলকুমারী বিলের জমি রোপণ করতে করতে আক্ষেপ করে কথাগুলো বলেন তিনি। গতকাল শুক্রবার সেখানে গিয়ে কথা হয় আরো ৬ জন আদিবাসী নারী শ্রমিকদের সাথে। তারা বলেন, তাদের দরিদ্রের কষাঘাতে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা শেষ করে নামতে হয় কৃষি কাজে। তারা আফসোস করে জানান, কাজ করেও ন্যায্য মজুরি পায় না আমরা। ৩৫ থেকে ৪০ বছর ধরে কৃষি কাজ করছি। অথচ কৃষি কাজে ব্যাপক পরিবর্তন হলে আমাদের বৈষম্যের পরিবর্তন হয় নি। মনে হয় সমাজে আমরা আজীবন অবহেলিত হয়ে থাকে যাবো। একই সময় ব্যয় করে একই কাজ করে পুরুষ শ্রমিকরা পায় ২শ থেকে ২৫০ টাকা। আর আমরা পাই ১২০ থেকে ১৫০ টাকা। আমরা ৬ শ্রমিক সকাল থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত দুই বিঘা থেকে আড়াই বিঘা জমিতে চারা রোপণ করে থাকেন। অন্যদিকে পুরুষ শ্রমিকরা সমান কাজ করে তারা মূল্য পায় বেশি। তারা এই বৈষম্যের প্রতিকার চান। এনিয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম জানান, এবারে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩ হাজার ২শ হেক্টর জমিতে। পুরো উপজেলায় চারা রোপণ শুরু হয়েছে। আর কয়েক দিনের মধ্যে অনেক জমির চারা রোপণ শেষ হবে বলে জানান তিনি। মজুরি বৈষম্যের বিষয়ে তিনি বলেন, পুরুষ ও নারী শ্রমিকরা সমান কাজ করে, সেহেতু তাদের মজুরি সমান হওয়া উচিত।