খােলা বাজার২৪, রবিবার, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭: কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায় আলু ক্ষেতে নাভিধ্বসা ও ছত্রাক রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে।এতে কৃষকরা এ রোগে আক্রান্ত হওয়ায় হতাশায় পড়েছে। গত কয়েকদিনের ঘন কুয়াশা ও কনকনে ঠান্ডায় আলু ক্ষেতগুলোতে এ রোগের প্রকোপ বেড়েই চলেছে। ঔষধ ও কীটনাশক ছিটিয়েও কোন প্রতিকার না পেয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে এখানকার কৃষকরা। এবছর প্রথম থেকে আলুর আবাদ ভাল হওয়ার প্রত্যাশা করলেও এখন সে আশা কৃষকদের নিরাশের দিকে যাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে।
খােঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজারহাট উপজেলার দূর্গারাম, হাড়িডাঙ্গা, উপনচৌকি, মেকুরটারী সহ শতাধিক আলু ক্ষেতের অধিকাংশ আলু ক্ষেত নাভিধ্বসা ও ছত্রাক জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। উপজেলার দূর্গারাম গ্রামের মোকছেদ আলী জানান,তিনি প্রায় ১একর জমিতে আলু লাগিয়েছেন যেখানে এ রোগ এখন খাড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে। একই গ্রামের কৃষক আরিফুল জানান,সাড়ে ৫একর জমি লিজ নিয়ে এ্যাষ্টারিজ ও ডায়মন্ড জাতের আলু চাষ করেছি। ফলন ভালোই হয়েছিল কিন্তু হঠাৎ নাভিধ্বসা রোগে আলু গাছের মড়ক শুরু হওয়ায় এখন খুবই চিন্তায় আছি। কৃষক আবু বক্কর জানান,নাভিধ্বসা রোগ ও ছত্রাক গ্রাস করে ফেলেছে আলু ক্ষেত। প্রতিদিন স্প্রে করেও কাজ হচ্ছে না। তাদের পার্শ্ববর্তী গ্রাম হাড়িডাঙ্গা গ্রামের মোস্তাক আলী জানান, তার পুরো ক্ষেতের আলুগাছ মরে গেছে। এখন আলু চাষের ক্ষতি কিভাবে পুষিয়ে নিবেন এই নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন তিনি। একই অবস্থা দূর্গারাম গ্রামের রেজাউল হকের ৮ একর, এরশাদের ৫ একর, নজরুলের ২একর জমির আলুক্ষেতসহ আশেপাশের অনেক আলুক্ষেতেই ছত্রাক ও নাভি ধ্বসা রোগের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে।
আবহাওয়ার উন্নতি ও দ্রুত এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব না হলে আলু চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বেন বলে আশংকা প্রকাশ করছেন সকল কৃষক। এ অঞ্চলে তাপমাত্রা নিম্নগামী হওয়ায় এবং নিয়মিত সূর্য তাপ বিকিরন না করায় শতশত একর জমির আলু ক্ষেতে ব্যাপক নাভিধ্বসা ও ছত্রাক জনিত রোগ বিস্তার লাভ করেছে। আলু ক্ষেতের কিছু কৃষকের জমি ঘুরে জানা গেছে,গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে রাজারহাট উপজেলার ছিনাই, ঘড়িয়ালডাঙ্গা, উমরমজিদ, নাজিমখা, বিদ্যানন্দ, চাকিরপশা ও রাজারহাট ইউনিয়নের শতশত একর আলু ক্ষেতে নাভিধ্বসা রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। রাজারহাট উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে রাজারহাট উপজেলায় ১হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হলেও আলু চাষ হয়েছে ২হাজার ২শ হেক্টর জমিতে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আলু ক্ষেতে নাভিধ্বসা রোগে আক্রান্ত হওয়ার কথা স্বীকার করে রাজারহাট উপজেলা কৃষি অফিসার ষষ্টি চন্দ্র রায় জানান, আলু ক্ষেত রক্ষায় আমরা প্রতিদিন কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করছি। কৃষকদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ঠান্ডার প্রকোপ কমে গেলে এবং নিয়মিত আলু ক্ষেতে স্প্রে করলে এই রোগ থেকে মুক্ত হবে আলু ক্ষেত।