খােলা বাজার২৪, সোমবার, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭: সদ্যসমাপ্ত ২২তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবি আর) চার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করেছে। তবে সময়মতো ভ্যাট পরিশোধ না করায় ১০৯টি প্রতিষ্ঠানের মালপত্র জব্দ করে রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এদিকে এবারের মেলায় ১২ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করেছে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর। দুই সংস্থা থেকে প্রাপ্ত তথ্যে এসব জানা গেছে।
মেলায় ভ্যাট আহরণে দায়িত্বে থাকা এনবি আরের ঢাকা পশ্চিম ভ্যাট ও কাস্টমসের কমিশনার মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, মেলায় স্টল দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে শুরু থেকেই ভ্যাট পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দৈনিক লেনদেন শেষে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে এনবি আরের নির্দিষ্ট স্টলে ভ্যাট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তিনি জানান, এবারের মেলায় তিন কোটি ৭৮ লাখ ৫৩ হাজার ৮৭৯ টাকার ভ্যাট আদায় করা হয়েছে। গত বছর আদায় করা হয়েছিল দুই কোটি ৩২ লাখ ৩৭ হাজার টাকা।
এনবি আর সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবছরের মতো এবারও বাণিজ্য মেলায় ভ্যাট আদায়ের জন্য একটি বুথ স্থাপন করা হয়। ভ্যাট পরিশোধে সোনালী ব্যাংকের একটি বুথও স্থাপন করা হয়। তবে গ্রাহকদের কাছ থেকে ভ্যাট আদায় করলেও মেলার শেষ দিন পর্যন্ত শতাধিক প্রতিষ্ঠান তা এনবি আরকে দেয়নি। এর মধ্যে কিছু প্রতিষ্ঠান শেষ দিনে ভ্যাট পরিশোধ করলেও তাদের প্রতিদিন না দেওয়ায় তাদের শুনানি সাপেক্ষে দু-এক দিন পর ছাড় দেওয়া হবে। আর যেসব প্রতিষ্ঠান শেষ দিনেও ভ্যাট দেয়নি তাদের মালপত্র ছাড় করতে এনবি আরের কাছ থেকে সনদ নিতে হবে। এই তালিকায় শতাধিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে বলে জানিয়েছেন মেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও ঢাকা পশ্চিম কমিশনারেটের অতিরিক্ত কমিশনার শাকিলা খাতুন।
ভোক্তা অধিদপ্তরের জরিমানা : জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবারের বাণিজ্য মেলায় খাবারের দাম বেশি রাখা, প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপন, পণ্যে ভেজালসহ বিভিন্ন অভিযোগে ৪১ প্রতিষ্ঠানকে প্রায় ১২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণে সহকারী পরিচালক আব্দুল জাব্বার মণ্ডল বলেন, ‘মেলার শেষ দিন পর্যন্ত ৭০টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। এর মধ্যে ৬৮টি আমলযোগ্য অভিযোগ ছিল। ‘ তিনি বলেন, অভিযোগকৃত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৪১টি প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন জরিমানা করা হয়েছে। আর বাকি ২৯টি প্রতিষ্ঠানে সমঝোতার মাধ্যমে অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হয়েছে। ভোক্তারা মেলা প্রাঙ্গণে অবস্থিত অধিদপ্তরে (অস্থায়ী কার্যালয়) এসে এসব অভিযোগ করেছে। কেউ কেউ অনলাইনেও অভিযোগ করেছে।
আব্দুল জাব্বার আরো বলেন, ‘মেলায় একটি প্রতিষ্ঠান বলেছে, টাক মাথায় চুল গজানো হয়। আমরা তাকে জিজ্ঞাসা করেছি কার চুল গজিয়েছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি কারো নাম দিতে পারেনি। এরপর তাদের ব্যানারে লেখা হয়েছে, টাক মাথায় চুল গজাতে সাহায্য করা হয়। আরেক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এক ক্রেতা অভিযোগ করেন সেখান থেকে ভাগ্য পরিবর্তনের পাথর নিয়ে তার ভাগ্য ফেরেনি। এটা সমঝোতার মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে। পাথরের আট হাজার টাকা প্রতিষ্ঠানটি ফেরত দিয়েছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো জানিয়েছে, এবারের ২২তম মেলা থেকে ২৪৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকার পণ্যের রপ্তানি আদেশ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া এবারের মেলায় ১১৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকার পণ্য বিক্রি হয়েছে। ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত বাণিজ্য মেলায় ২৩৫ কোটি ১৭ লাখ টাকার রপ্তানির আদেশ হয়েছিল।