খােলা বাজার২৪, শুক্রবার, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ : টরডিস এলভা, ১৯৯৬ সালে ১৬ বছর বয়সে ধর্ষণের শিকার হন। স্কুলে নাচের এক পার্টিতে ধর্ষণ করেন তারই বয়ফ্রেন্ড টম স্ট্রেঞ্জার। এরপর যা ঘটে তা এক কথায় অবিশ্বাস্য! এক বছর পর আইসল্যান্ডের বাসিন্দা তরুণী টম স্ট্রেঞ্জারকে একটি মর্মস্পর্শী চিঠি লেখেন, যেখানে শান্তির প্রত্যাশা ফুটে ওঠে।
এলভা ধরেই নিয়েছিলেন, টম তার চিঠির জবাব দেবেন না। কিন্তু তাকে ততটাই বিস্ময় উপহার দিয়ে ফিরতি চিঠি লেখেন টম। এরপর এলভা কিছুটা দ্বিধায় পড়ে যান। কিন্তু ধন্যবাদ জানিয়ে আরেকটি চিঠি লেখেন। এভাবে পরস্পরের মধ্যে চিঠি আদান-প্রদানের এক পর্যায়ে তারা মুখোমুখি হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং এক পর্যায়ে দু’জন মিলে ধর্ষণ এবং তার ক্ষত কাটিয়ে উঠা নিয়ে একটি বই লেখার সিদ্ধান্ত নেন।
এলভা এবং টম সম্প্রতি এক সঙ্গে ‘টেড টকে’র স্টুডিওতে বসে বলেছেন ধর্ষণ পরবর্তী তাদের সেই পুনর্মিলনীর গল্প। তাদের এই অনুষ্ঠানের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ৭ ফেব্র“য়ারি ফেসবুকে পোস্টের দিনই সহস্রাধিক মন্তব্য এবং পৃথক তিন হাজার ৭শ’ ফেসবুক আইডি থেকে শেয়ার হয়।
টেড টকে টম জানান, অস্ট্রেলিয়া থেকে আইসল্যান্ডে যাওয়ার সময় ১৯৯৬ সালে এক অনুষ্ঠানে এলভার সঙ্গে তার দেখা হয়। এরপর স্কুলের এক নাচের পার্টিতে নিজের টিনেজ রোমান্ড আবিষ্কার করেন ১৮ বছর বয়সী টম। সেই নাচের পার্টিতেই টম এলভাকে ধর্ষণ করেন। এরপর তিনি অস্ট্রেলিয়া চলে যান। তবে টিভি অনুষ্ঠানে আপ্লুত টম বলেন, সে ঘটনার পর আমি কয়েক সপ্তাহ স্বাভাবিক ছিলাম না।
‘অঝোরো কেঁদেছি। ভাবতেও পারিনি আমি কেন আমার গার্লফ্রেন্ডকে ধর্ষণ করলাম’, বলে চলেন টম। এলভাও টিভি অনুষ্ঠানে জানান, এ ঘটনায় নিজেকেই বারবার দোষী মনে হয়েছে। কারণ সে আমার বয়ফ্রেন্ড, আমারই বিছানায় বাহুডোরে নিয়ে এ ঘটনা ঘটাতে পেরেছিল।
আর এ কারণেই এলভা সেটি চেপে রাখার সিদ্ধান্ত নেন এবং যা বলার টমকেই বলবেন ভেবে চিঠি লেখেন। চিঠি আদান-প্রদানের এক পর্যায়ে তারা কেপ টাউনে একত্রিত হন এবং পরস্পরের প্রতি আরও শ্রদ্ধাশীল হয়ে প্রায় সপ্তাহ খানেক অন্তরঙ্গ সময় কাটান।
সেখানেই ধর্ষণ, এর ক্ষতি ও তা কাটিয়ে ওঠার ওপর বই লেখার সিদ্ধান্ত নেন টম-এলভা। মূলত অন্যদের বিষয়টি সম্পর্কে সচেতন করার জন্যই তারা এই বই লিখেছেন বলে জানান।