Wed. Mar 12th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

48খােলা বাজার২৪, রবিবার, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ : দেশের বাজারে সয়াবিন তেলের ৫ লিটারের একটি বোতলের দাম কাক্সিক্ষত দরের চেয়ে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেশি নিচ্ছে উৎপাদন ও বিপণনকারী কোম্পানিগুলো। বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের (সিটিসি) দ্রব্যমূল্য মনিটরিং সেলের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী বাজারে এখন ৫ লিটারের একটি তেলের বোতলের কাক্সিক্ষত দাম হওয়া উচিত ৫০০ টাকা, বিপরীতে কোম্পানিগুলো নিচ্ছে ৫২০ থেকে ৫৩০ টাকা। ফলে ৫ লিটারের একটি বোতল কিনলে গ্রাহককে বাড়তি দিতে হচ্ছে লিটারপ্রতি ৪ থেকে ৬ টাকা।
সম্প্রতি দেশের বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৫ টাকা বাড়িয়েছে কোম্পানিগুলো। এ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধিকে যুক্তি হিসেবে দেখিয়েছে তারা। দেশের বাজারে মূল্যবৃদ্ধির কথা জানিয়ে গত জানুয়ারি মাসের শুরুতে ট্যারিফ কমিশনকে চিঠি দেয় বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। চিঠিতে বলা হয়, প্রতি লিটার তেলের নতুন দাম হবে ১০৫ টাকা।

প্রস্তাবিত এ দর বিশ্লেষণ করে ট্যারিফ কমিশনের দ্রব্যমূল্য মনিটরিং সেল একটি প্রতিবেদন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে দিয়েছে। মন্ত্রণালয় সূত্রে পাওয়া ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, এখন বাজারে ১ লিটারের বোতল ১০৩ থেকে ১০৫ টাকায় বিক্রি হওয়া উচিত। অন্যদিকে ২ লিটারের বোতলের দাম হওয়া উচিত ২০০ টাকা। এখন ১ লিটারের বোতল ১০৫ থেকে ১০৭ টাকা ও ২ লিটারের বোতল ২০৮ থেকে ২১০ টাকা সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ করেছে কোম্পানিগুলো।
সব মিলিয়ে দেখা যাচ্ছে, বোতল বড় হলেই বেশি লাভ হচ্ছে কোম্পানিগুলোর। একসঙ্গে বেশি পরিমাণ তেল কিনে ক্রেতাদের যে একটু বেশি সাশ্রয় হওয়ার কথা, তা হচ্ছে না। তবে এবার দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে নিয়ম মেনেছে কোম্পানিগুলো। ১৫ দিন আগেই তা দ্রব্যমূল্য মনিটরিং সেলকে জানিয়েছে। ট্যারিফ কমিশনের হিসাব করা কাক্সিক্ষত দরের সঙ্গে বাজারদরের আগের মতো বিরাট পার্থক্য আর নেই। দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে সরকারের অনুমোদনও নিয়েছে তারা।
জানতে চাইলে সিটি গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, ‘আমরা যে দর প্রস্তাব করেছি, তা ট্যারিফ কমিশন অনুমোদন দিয়েছে। মৌখিকভাবে তারা জানিয়েছে, এটি অনুমোদিত। এর পরই বাজারে দাম বাড়ানো হয়েছে। এর আগে গত অক্টোবর মাসে সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৬ টাকা বাড়িয়েছিল। তখনো আগাম অনুমোদন নিয়েছিল তারা। অবশ্য তখন ১ লিটার তেলের দাম ঠিক করা হয়েছিল ১০০ থেকে ১০২ টাকা। ট্যারিফ কমিশনের সুপারিশ ছিল ৯৭ টাকা।
দেশের ভোজ্যতেলের বাজারের নিয়ন্ত্রণ মূলত সিটি গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ ও বাংলাদেশ এডিবল অয়েলের হাতে। তারা কত দামে তেল বিক্রি করবে, তা তাদের ওপর নির্ভর করে। অবশ্য দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার এসব কোম্পানি খুব বেশি মুনাফা করছে কি না, তা নজরে রাখে। এ ক্ষেত্রে একটি ব্যয় বিররণী অনুসরণ করে তেলের দাম হিসাব করা হয়। এ ব্যয় বিবরণীতে ১ লিটারের একটি বোতলের দাম ধরা হয় ১৫ টাকা। আর ৫ লিটারের বোতলের দাম ধরা হয় ৫০ টাকা। যদিও এসব বোতলের উৎপাদন খরচ আরও কম।
ট্যারিফ কমিশন ৫ লিটার ধারণক্ষমতার বোতলের দর ৫০ টাকা ধরলেও কোম্পানিগুলো রাখে ৭০ টাকা। এতেই বাড়তি দাম পড়ে। উল্লেখ্য, ২০১২ সালে ট্যারিফ কমিশন বোতলের সম্ভাব্য দাম হিসাব করেছিল। তাতে দেখা যায়, ১ লিটারের বোতলের উৎপাদন খরচ ৭ টাকা ১২ পয়সা। ২ লিটারের বোতলের উৎপাদন খরচ ১২ টাকা ৬৬ পয়সা এবং ৫ লিটারের বোতলের উৎপাদন খরচ ২৪ টাকা ৮৬ পয়সা।