Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

36খােলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭:  ‘একজন ব্যক্তির স্বার্থে আঘাত লাগায়’ মিথ্যা অভিযোগ তুলে বিশ্ব ব্যাংক পদ্মা সেতুর অর্থায়ন থেকে সরে গিয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো প্রকল্প পদ্মা সেতুতে অর্থায়নের জন্য চুক্তি করেও পরে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে তা স্থগিত এবং পরে বাতিল করে। পরে তাদের বাদ দিয়েই নিজস্ব অর্থায়নে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ।

পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ তদারকির পাঁচ কোটি ডলারের কাজ পেতে এসএনসি-লাভালিনের কর্মীরা ২০১০ ও ২০১১ সালে বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের ঘুষ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন বলে মামলা হয়েছিল কানাডার আদালতে। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে কানাডার আদালত গত শুক্রবার ওই মামলার তিন আসামিকে খালাস দেয়।
রায়ে বিচারক বলেছেন, এই মামলায় প্রমাণ হিসেবে যেগুলো উপস্থাপন করা হয়েছে সেগুলো ‘অনুমানভিত্তিক, গাল-গল্প ও গুজবের বেশি কিছু নয়’।
মঙ্গলবার একনেক বৈঠকে শুরুতে প্রধানমন্ত্রী কারও নাম উল্লেখ না করে বলেন, ওই ‘মিথ্যা অভিযোগের’ পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে বলে তিনি মনে করেন।
“একটা ব্যক্তির স্বার্থে আঘাত লাগল বলে, সেই ব্যক্তি দেশের এত বড় একটা মূল্যবান প্রোজেক্টৃ যা হলে আমাদের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নতি হতে পারতৃ।”
শেখ হাসিনা বরাবরই বলে আসছেন, পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের অভিযোগ তোলা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ এবং এতে বাংলাদেশিরাও জড়িত ছিলেন।
সম্প্রতি সংসদে তিনি বলেন, হিলারি ক্লিনটনকে দিয়ে পদ্মা সেতুতে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ন আটকেছিলেন নোবেলজয়ী বাংলাদেশি মুহাম্মদ ইউনূস এবং তাতে বাংলাদেশের এক সম্পাদকেরও ভূমিকা ছিল।
মঙ্গলবার একনেকের বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের বিরুদ্ধে যে সমস্ত অভিযোগ করা হয়েছিল বা মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আমাদের কাজের গতিকে ব্যাহত করতে যারা তৎপর ছিলৃ সেটাও যে মিথ্যা, তা প্রমাণিত হয়েছে। ওই সময়ও আমি বলেছি, এখন আন্তর্জাতিকভাবে এটা প্রমাণিত।”
নির্ধারিত সময়ে পদ্মা সেতুর কাজ শুরু হলে এতোদিনে তা শেষ হয়ে যেত মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন যা প্রবৃদ্ধি আছে, তা আরও এক ভাগ বেশি হতে পারত।
“আমরা ৮ ভাগে চলে যেতে পারতাম। সে সম্ভাবনাকে ব্যাহত করে দিয়েছিল,” বলেন তিনি।
দুর্নীতির ওই ষড়যন্ত্রে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে পদত্যাগে বাধ্য হন সেই সময়ের যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেন। অভিযোগ ছিল সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরীর বিরুদ্ধেও। তখনকার সেতু সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াকে ওই মামলায় কারাগারেও যেতে হয়।
তবে তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনো তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে দুদকের পক্ষ থেকে তদন্তের পর জানানো হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, “ওয়ার্ল্ড ব্যাংক আমাদের প্রতি মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছিল। তাদের এই মিথ্যা অভিযোগে আমাদের একটা সচিবকে অযথা একটা বছর জেল খাটতে হয়। এর থেকে আর লজ্জাজনক কিছুই নাই। একটা মানুষ জীবনে কতটা আঘাত পেতে পারে?
“একজন সচিব তার জীবনে যে মূল্যবান সময় নষ্ট করল, তার সেবা থেকে দেশকে বঞ্চিত করা হল, একটা মিথ্যা অভিযোগ থেকেৃ অহেতুক একটা মিথ্যা অপবাদ দেওয়া।”
দুদক চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ায় ২০১৪ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশে পদ্মা দুর্নীতি মামলার অবসান ঘটে। সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াসহ সাত আসামির সবাইকে অব্যাহতি দেয় আদালত।