খােলা বাজার২৪, বুধবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ : দেশের স্মার্টফোন বাজার এখন দেশীয় ব্র্যান্ড সিম্ফনি ও দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাংয়ের দখলে রয়েছে। বিক্রির হিসাবে সিম্ফনি শীর্ষে থাকলেও আর্থিক মূল্যের হিসাবে এক নম্বরে রয়েছে স্যামসাং। একই সঙ্গে বাজারে ক্রমেই বাড়ছে হুয়াওয়ে, অপো, লাভার মতো চীনা ব্র্যান্ডের প্রাধান্য। মুঠোফোন আমদানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমপিআইএ) পরিসংখ্যানে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
২০১৬ সালে দেশে বৈধভাবে আমদানি করা মুঠোফোনের হিসাবে এসব তথ্য-উপাত্ত তৈরি করেছে সংগঠনটি। বিএমপিআইএ বলছে, ২০১৬ সালে দেশে বৈধ পথে ৮২ লাখ স্মার্টফোন আমদানি হয়েছে। ২০১৫ সালে স্মার্টফোন আমদানির পরিমাণ ছিল ৫৬ লাখ। অর্থাৎ এক বছরে স্মার্টফোনের বাজার বেড়েছে ৪৫ শতাংশ। আর ২০১৬ সালে সাধারণ ফোন ও স্মার্টফোন মিলিয়ে মোট ৩ কোটি ১০ লাখ ইউনিট মুঠোফোন আমদানি হয়েছে, যা আগের বছর ছিল ২ কোটি ৮০ লাখ।
আমদানি হওয়া মুঠোফোনের বাজারমূল্য ছিল ৮ হাজার কোটি টাকা, যার মধ্যে স্মার্টফোনের বাজারমূল্য ৬ হাজার কোটি টাকা।বিএমপিআইএ মহাসচিব রেজওয়ানুল হক বলেন, ‘গত বছর স্মার্টফোন বিক্রি ভালো হলেও তা আরও বেশি হওয়ার সুযোগ ছিল। চলতি বছরে বাজার আরও ভালো হবে বলে আশা করছি।’
২০১৬ সালে সিম্ফনি ৩৪ লাখ স্মার্টফোন আমদানি করেছে, যার আর্থিক মূল্য ছিল ১ হাজার ৮৩০ কোটি টাকা। একই সময়ে স্যামসাং ১ হাজার ৮৯৭ কোটি টাকার বাজারমূল্যের ১৫ লাখ স্মার্টফোন আমদানি করেছে। অর্থাৎ আমদানি কম করলেও বেশি দামের কারণে সিম্ফনির চেয়ে এগিয়ে আছে স্যামসাং। বাজারমূল্যের ভিত্তিতে তৃতীয় স্থানে রয়েছে চীনা ব্র্যান্ড হুয়াওয়ে। ২০১৬ সালে হুয়াওয়ে ৬০০ কোটি টাকা মূল্যের ৭ লাখ স্মার্টফোন আমদানি করেছে।
দেশীয় ব্র্যান্ড ওয়ালটন এ সময়ে ৯ লাখ স্মার্টফোন আমদানি করেছে, যার বাজারমূল্য ছিল ৫১১ কোটি টাকা। মুঠোফোন আমদানিতে কর ও শুল্ক বাবদ গত বছর সরকার ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা রাজস্ব পেয়েছে। বিএমপিআইএ বলছে, অবৈধভাবে মুঠোফোন আমদানি কমানো গেলে সরকারের এ খাত থেকে রাজস্ব দ্বিগুণ বাড়তে পারে। কারণ, আমদানি কর কমলে দেশে মুঠোফোনের বিক্রি ও ব্যবহার বাড়বে।
অন্যদিকে বৈধ পথে মুঠোফোন আমদানি বাড়বে, এতে সরকার বেশি রাজস্ব পাবে। সংগঠনটির হিসাবে বর্তমানে ২৫ শতাংশ মুঠোফোন অবৈধভাবে আমদানি হচ্ছে।বিএমপিআইএর সভাপতি রুহুল আলম আল মাহবুব বলেন, অ্যাপলের আইফোনের ৯০ শতাংশ ও স্যামসাংয়ের ৪০ শতাংশ হ্যান্ডসেট অবৈধভাবে দেশে আসছে। আমদানি শুল্ক কমানো হলে এই প্রবণতা অনেকটাই রোধ করা সম্ভব।
আর্থিক মূল্য দুই হাজার কোটি টাকা হলেও সাধারণ ফোনের আমদানি ২০১৬ সালেও বেড়েছে। গত বছর দেশে ২ কোটি ৩০ লাখ ইউনিট সাধারণ মুঠোফোন আমদানি হয়েছে, যা আগের বছর ছিল ২ কোটি ২০ লাখ। বিএমপিআইএর হিসাবে, বর্তমানে গড়ে ন্যূনতম ৩ হাজার টাকায় একটি স্মার্টফোন এবং ১ হাজার টাকায় একটি সাধারণ ফোন কিনতে পাওয়া যায়।