খােলা বাজার২৪, বুধবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ : রোহিঙ্গাদের জন্য ত্রাণবাহী মালয়েশিয়ার জাহাজটি ইয়াঙ্গুনে বিরূপ অভিজ্ঞতার পর বাংলাদেশে এসে চট্টগ্রাম বন্দরে ভেড়ার খবরে বাংলাদেশ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নজিব রাজাক।
মঙ্গলবার ফেইসবুকে ধন্যবাদ জানিয়ে তার ওই পোস্ট নিয়ে মালয়েশিয়ার পত্রিকায় প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছে।
নাজিব রাজাক লিখেছেন, “রোহিঙ্গাদের জন্য দুই হাজার টন পণ্য নিয়ে নটিক্যাল আলিয়া বাংলাদেশে পৌঁছেছে। মালয়েশিয়ার স্বেচ্ছাসেবী ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অভিনন্দন। ধন্যবাদ জানাই বাংলাদেশকে এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে, যিনি এর শুভসংকেত দিলেন।”
১৯৭৩ সালে যখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন মালয়েশিয়া সফরে যান, তখন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন নাজিব রাজাকের বাবা আব্দুল রাজাক হুসেন। দুই প্রধানমন্ত্রীর উত্তরসূরি হাসিনা ও নাজিব বর্তমানে দেশ দুটির সরকার প্রধানের দায়িত্বে।
গত অক্টোবরে মিয়ানমারের তিনটি সীমান্ত পোস্টে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদীদের’ হামলায় সেদেশের নয় সীমান্ত পুলিশের মৃত্যুর পর রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত জেলাগুলোয় শুরু হয় সেনাবাহিনীর দমন অভিযান। নিপীড়নের মুখে পালাতে থাকা রোহিঙ্গাদের ঢল নামে বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত চার মসে প্রায় ৬৯ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন । আর মালয়েশিয়া সরকার নিবন্ধিত ১ লাখ ৪৯ হাজার ৪৭৪ শরণার্থীর দেখভাল করছে, যাদের মধ্যে ৫৫ হাজার ৫৬৫ জনই রোহিঙ্গা মুসলমান।
গোলযোগপূর্ণ রাখাইন রাজ্যে নিপীড়নের শিকার রোহিঙ্গাদের জন্য খাবার ও জরুরি ত্রাণ নিয়ে মালয়েশিয়ার জাহাজ নটিক্যাল আলিয়া এ মাসের শুরুর দিকে মালয়েশিয়া থেকে রওনা হয়ে ৯ ফেব্র“য়ারি ইয়াঙ্গুনে পৌঁছালে বিক্ষোভের মুখে পড়ে।
৫০০ টন খাবার ও ওষুধসহ বিভিন্ন সামগ্রী ইয়াঙ্গুনে সরবরাহের পর বাকি পণ্য নিয়ে জাহাজটি বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওনা হয় এবং মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছায়।
মালয়েশিয়ার মুসলিম সংগঠনগুলোর পাশাপাশি দেশীয় এবং বিদেশি ত্রাণ সংগঠনগুলো এসব পণ্য বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য পাঠিয়েছে।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মিয়ানমারে মুসলিম রোহিঙ্গাদের ওপর দমনপীড়ন নিয়ে প্রকাশ্যেই কড়া সমালোচনা করে আসছেন। মিয়ানমার সরকারকে রোহিঙ্গাদের ওপর ‘হামলা’ বন্ধেরও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
তবে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ওপর দমনপীড়নের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতার বেশিরভাগ খবরই ‘অতিরঞ্জিত’ বলে দেশটির সরকারের দাবি।