Thu. May 1st, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪ শুক্রবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭: 2আপাদমস্তক রাজনৈতিক ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত যে এক সময় মঞ্চেও অভিনয় করেছিলেন, অনেকের অজানা সেই কথা উঠে এল তার স্মরণ সভায়।
বৃহস্পতিবার ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নাগরিক স্মরণসভায় নাট্য ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার বলেন, “অভিনেতা থেকে রাজনৈতিক নেতা হয়েছিলেন সুরঞ্জিত।”

শওকত ওসমানের উপন্যাস থেকে তৈরি হওয়া ‘ক্রীতদাসের হাসি’ নাটকে সুরঞ্জিতের সঙ্গে মঞ্চে কাজ করার স্মৃতিচারণ করেন রামেন্দু মজুমদার।
“ক্রীতদাসের হাসি নাটকে আমরা এক সাথে অভিনয় করেছি। সে বড় ভালো মানুষ ছিলেন।”
গত শতকের ষাটের দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে ঢাকা সেন্ট্রাল ল কলেজ থেকে এলএলবি করেন সুরঞ্জিত। কিছুদিন আইন পেশায় যুক্ত থাকলেও পুরে পুরোপুরি রাজনীতিক বনে যান তিনি।
স্মরণ সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসলেই তিনি শিক্ষার্থীদের কথা জানতে চাইতেন। কেমন আছে শিক্ষার্থীরা, তাদের সুযোগ-সুবিধায় ঘাটতি আছে কি না জানতে চাইতেন। নিজের প্রতিষ্ঠানের খোঁজ-খবর নিতেন।”
ছাত্র ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে আন্দোলনে পা রাখা সুরঞ্জিত নানা বাম দল হয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। সর্বশেষ দলটির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ছিলেন তিনি।
রাজনৈতিক অঙ্গনে বাকপটু হিসেবে খ্যাত সুরঞ্জিতের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম তাকে ‘ফরোয়ার্ড প্লেয়ার’ অভিহিত করেন।
“সুরঞ্জিতদা রাজনীতি করতেন একটা সাধনা হিসেবে। তাই রাজনীতিতে তিনি সব সময়ই ছিলেন ‘ফরোয়ার্ড প্লেয়ার’। রাজনীতি, সংসদসহ সর্বক্ষেত্রে তিনি ফরোয়ার্ড প্লেসে থাকতেন। সবাইকে তিনি কথার জালে আবিষ্ট করে রাখতেন।”
আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার আগে ‘ছোট দলের বড় নেতা’ হিসেবে পরিচিত পাওয়া সুরঞ্জিত বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেন। সংসদীয় রাজনীতিতে তাকে ‘নম্বর ওয়ান’ বলেন অনেকে।
সেলিম বলেন, “কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা ছিলেন না সুরঞ্জিতদা। তিনি ছিলেন জননেতা, মূলত তিনি ছিলেন ‘নেচারাল লিডার’।”
সংসদের আইন কানুন সম্পর্কে কোনো সমস্যায় পড়লে প্রথমেই সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের কাছে ছুটে যেতেন বলে জানান যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেণ শিকদার।
তিনি বলেন, “সমস্যায় পড়লেই আমি দাদার কাছে ছুটে যেতাম। অবাক করার মতো ব্যাপার, সংসদের এবং সংবিধানের সকল আর্টিকেল মুখে মুখে বলে দিয়ে সহযোগিতা করতেন তিনি।”
জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের দৃঢ় অবস্থানের কথা স্মরণসভায় তুলে ধরেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু।
তিনি বলেন, “সুরঞ্জিত সেন গুপ্তকে হারিয়ে গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে অসম্প্রদায়িক চেতনায় প্রগতিশীল শক্তির অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। সত্তরে আমরা এক সাথে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলাম। বাংলাদেশ সৃষ্টির শুরু থেকে সংবিধানের সর্বশেষ সংশোধনীতেও সুরঞ্জিত সেনের ভূমিকা ছিল।”
নাগরিক এই স্মরণ সভায় ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়েশা খানম, আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিব দ্রং, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথ, গণতন্ত্রী পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা নূরুর রহমান সেলিম, অধ্যাপক নিমচন্দ্র ভৌমিক বক্তব্য রাখেন।