খােলা বাজার২৪, শনিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭: বাংলাদেশেই জাল ভারতীয় নোট ছাপা হচ্ছে বলে তদন্তে জেনেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা আইবি। করাচির টাঁকশালে ছাপা জাল ভারতীয় নোট দুবাই হয়ে বাংলাদেশ আনায় ঝুঁকি ও ঝক্কি দুই-ই অনেক বেড়েছে। কেন্দ্রীয় আইবির দাবি, এবার তাই বাংলাদেশেই গোটা পাঁচেক অফসেট প্রেস বসিয়ে জাল ভারতীয় নোট ছাপার বন্দোবস্ত করে ফেলেছে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই।
কেন ‘নিরাপদ’ করাচি ছেড়ে বাংলাদেশে জাল নোট ছাপার ব্যবস্থা করল আইএসআই? আনন্দবাজার
জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ-এর এক কর্তা জানান, ২০১৪ পাকিস্তান থেকে আসা ৬ কোটি ৪০ লক্ষ ভারতীয় টাকার জাল নোট ধরা পড়ে ঢাকা বিমানবন্দরে। আবার, পরের বছরেই চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরে পৌনে ৩ কোটি টাকার ভারতীয় জাল নোট উদ্ধার করা হয়। করাচির টাঁকশালে ছাপা এই নোট পাকিস্তান থেকে দুবাই হয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছিল। এর পরেই কৌশল বদলে জাল নোটের কারবারিরা বাংলাদেশে ছাপাখানা বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এক গোয়েন্দা কর্তা বলেন, ‘নভেম্বরে ১০০০ এবং ৫০০ টাকার পুরনো নোট বাতিলের পর তড়িঘড়ি ডিসেম্বরেই চাঁপাইনবাবগঞ্জে দুটি, চট্টগ্রামে দুটি ও ঢাকার মিরপুরে একটি অফসেট প্রেস বসানো হয়েছে।’ অফসেট প্রেস বসেছে ডিসেম্বরের গোড়ায়, ছাপা শুরু হয়েছে জানুয়ারিতে। আইবি জেনেছে, পরের ধাপে মিনি মিন্ট বা ছোট মাপের টাঁকশাল বসানোর পরিকল্পনাও করেছে আইএসআই। শুধু নতুন ২০০০ এবং ৫০০ টাকার নোট নয়, ভারতীয় টাকার ১০০, ৫০, ২০, ১০ টাকারও নোটেরও নকল ছাপার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে সেখানে।
এনআইএ জানাচ্ছে, অফসেটে ছাপা বলে ‘সিকিওরিটি থ্রেড’ নেই অফসেটে ছাপা জাল নোটের ডান পাশে, নিচের দিকে কালচে সবুজ রঙে ইংরেজিতে ২০০০ লেখার গায়ে খরখরে ভাবটিও অনুপস্থিত।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি মুর্শিদাবাদের ইসলামপুরে আজিজুর রহমান নামে এক যুবক ২০০০ টাকার ৪০টি জাল নোটসহ ধরা পড়ে। ১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার কিরণগঞ্জে ২৩ লক্ষ টাকার ভারতীয় জাল নোটসহ দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছে পাওয়া যায় ২০০০ টাকার ১১৫০টি জাল নোট। জানুয়ারি মাসে মালদহের বৈষ্ণবনগরে দুদফায় দুটি করে ২০০০ টাকার জাল নোট পেয়েছিল বিএসএফ। মঙ্গলবার কালিয়াচকে এক যুবক ২০০০ টাকার তিনটি জাল নোট নিয়ে ধরা পড়ে। এগুলোর সবই চাঁপাইনবাবগঞ্জের অফসেট প্রেসে ছাপা বলে দাবি আইবির। ওই জেলার ঠিক এ পারেই মালদহ।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, কিরণগঞ্জে ধৃত দুই ব্যক্তির নাম মুখলেসুর রহমান ও জসিম আলি। এরা ছাড়াও ওই চক্রে আরও ১০ জন আছে, যারা এখনো অধরা। বস্তুত, ওই ঘটনার তদন্তে নেমেই বাংলাদেশ পুলিশ সে দেশের অফসেট প্রেসে জাল ভারতীয় নোট ছাপার বিষয়টি জানতে পারে। খবর আমাদের সময়.কমের