
ব্যাংকগুলোর মধ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্যোগে তিনটি, এনআরবি, এনআরবি গ্লোবাল ও এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক। বাকি ছয়টি ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছেন দেশীয় উদ্যোক্তারা। এগুলো হলো- ইউনিয়ন, মেঘনা, মিডল্যান্ড, মধুমতি, দ্য ফারমার্স ও সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক।
ব্যবসা শুরুর চার বছর পার হলেও উচ্চসুদে আমানত সংগ্রহ আর আগ্রাসী ঋণ বিতরণেই ব্যস্ত তারা। ফলে খেলাপি ঋণ বাড়ার পাশাপাশি নানা অনিয়মেও জড়িয়ে পড়ছে ব্যাংকগুলো। রাজনৈতিক বিবেচনায় চতুর্থ প্রজন্মের ৯ ব্যাংকের অনুমোদন প্রাপ্তির পূর্বশর্ত ছিল, কৃষি ও গ্রামীণ অর্থনীতিকে গুরুত্ব দেয়া ও সেবায় নতুনত্ব আনা। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো নতুন পণ্য আনতে পারেনি এসব ব্যাংক। নানা চ্যলেঞ্জের মধ্যে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে আগ্রাসী ব্যাংকিং কার্যক্রম চালাচ্ছে তারা।
এদিকে গ্রামে শাখা খোলার ক্ষেত্রে কিছুটা অগ্রগতি হলেও পিছিয়ে আছে ঋণ বিতরণে। তবে প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করতে না পারলেও চেষ্টা অব্যাহত আছে বলেছেন সংশ্লিষ্টরা। অপরদিকে কৃষি ও গ্রামীণ অর্থনীতিকে গুরুত্ব দিতে বলা হলেও তা বাস্তবায়নে তেমন অগ্রগতি নেই ব্যাংকগুলোর। শাখা খোলার ক্ষেত্রে সাধারণ নিয়ম মানছে না ব্যাংকগুলো। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নতুন ৯টি ব্যাংকের মোট শাখা খোলা হয়েছে ৩২৪টি, যার মধ্যে শহরে ১৬৯টি, গ্রামে ১৫৫টি। চতুর্থ প্রজন্মের ব্যাংকগুলোর মধ্যে সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের শহরের তুলনায় গ্রামে শাখা বেশি। ব্যাংকটির মোট ৫৩টি শাখার মধ্যে ২৭টি গ্রামে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘রাজনৈতিক বিবেচনায় অনুমোদন পাওয়া নতুন ব্যাংকগুলোর সুনির্দিষ্ট কোনো দিকনির্দেশনা নেই। এছাড়া নতুন ব্যাংক হিসেবে তাদের কোনো নতুনত্বও নেই। তারা এখন পর্যন্ত বিশেষ কোনো পণ্য বাজারে নিয়ে আসতে পারেনি। গ্রাম পর্যায়ে শাখা করার কথা থাকলেও তেমন আগ্রহ নেই ব্যাংকগুলোর। এছাড়া তাদের কোনো সৃজনশীলতাও নেই। পুরনো ব্যাংকগুলোর মতোই আমানত সংগ্রহ করে ঋণ প্রদান করছে। তিনি বলেন, ‘ব্যাংকগুলো পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা রয়েছে। ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে তেমন যাচাই-বাছাই করতে পারছে না। ফলে নানা অব্যবস্থাপনা অনিয়মে খেলাপি ঋণ বেড়ে যাচ্ছে। তাই নতুন ব্যাংকগুলোর বিভিন্ন কার্যক্রমের ওপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নজরদারি বাড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি।