খােলা বাজার২৪, সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ : মৌলভীবাজার জেলার ৭ টি উপজেলার মধ্যে ৩ টি উপজেলায় মনু নদীর বন্যা প্রতিরক্ষা বাধেঁর ৪০ টি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। শুকনো মৌসুম শেষ হতে চললেও গত বছর বর্ষায় ভেঙ্গে যাওয়া এসব স্থান এখনও মেরামত করা হয়নি। সামনে আসছে বর্ষাকাল। প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে মনু নদীতে পানি বাড়লেই সেব স্থানগুলো ভেঙ্গে এলাকায় বন্যা দেখা দিতে পারে এর ফলে লাখ লাখ মানুওষর বসত ঘর ও ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে বলে এলাকাবাসী আশঙ্কা প্রকাশ করছেন।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড, জনপ্রতিনিধিসহ প্রাপ্ত বিভিন সূত্রে জানা গেছে, মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া, রাজনগর ও মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মনু নদীর ডান ও বাম তীরের ১৭৫ কিলোমিটারের মধ্যে প্রায় ৪০ টি স্থান নদী ভাঙ্গনের হুমকির মুখে রয়েছে। গত বর্ষায় এইসব স্থানগুলোর বাধেঁর মাটি ধসে পড়েছে। ফলে এবার বর্ষা মৌসুমে পানি বাড়লেই এসব স্থানগুলো ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কা স্থানীয়দের । ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে ডানতীরের কুলাউড়া উপজেলার ১২ টি, রাজনগর উপজেলার ৭ টি এবং মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ১ টি এবং বামতীরে আছে কুলাউড়া উপজেলার ৭ টি এবং রাজনগর উপজেলার ৮ টি এবং সদর উপজেলার ৫ টি এই মোট ৪০ টি স্থান। গত শুক্রবার সরেজমিনে কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের মন্দিরা এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, মনু নদীর পাড়ের কয়েকশ ফুটের মত জায়গায় মাটি ধসে পড়েছে। এই স্থানের পাশেই রয়েছে পাকা, আধাপাকা ও কাঁচা বাড়িঘর। এর দক্ষিণ পাশেই আরও একটি স্থানের মাটি ধসে পড়েছে। সেখানেও গত বর্ষার বিশাল ভাঙন এখনও মেরামত করা হয়নি।
কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো: আব্দুল বাসিত জানান, তার ইউনিয়নের মনু নদীর প্রতিরক্ষা বাধেঁ অন্তত ১০ টি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে কথা বলেও এখন পযর্ন্ত কোন সুরাহা হয়নি। চলতি বছরের এপ্রিলের মধ্যে এসব স্থান মেরামত না করা হলে একাধিক স্থান ভেঙ্গে আগাম বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।
রাজনগর উপজেলার টেংরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো: টিপু খান জানান, তার ইউনিয়নের মনু নদীর অন্তত ২০ টা পয়েন্টে ভাঙ্গন রয়েছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, মনু নদী বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাধঁ পূর্নবাসন প্রকল্প নামে একটি প্রকল্প প্রধান কার্যালয়ে জমা দেয়া হয়েছে। এই প্রকল্পে সাড়ে ১০ কিলোমিটার স্থায়ী প্রতিরক্ষা মূলক কাজ, ১৩২ কিলোমিটার বাধঁ পুন:নিমার্ণ করা এবং ১৫০ কিলোমিটার লুপ কাটিংয়ের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এতে প্রাথমিক ব্যায় ধরা হয়েছে ২২৩ কোটি টাকা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড মৌলভীবাজার কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী বিজয় ইন্দ্র শঙ্কর চক্রবর্তী এই প্রতিনিধিকে জানান, বাধেঁর ভাঙনগুলোর অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। এ ব্যাপারে একটি প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে তা বাস্তবায়িত হলে এইসব এলাকা স্থায়ীভাবে বন্যামুক্ত হয়ে যাবে।