খােলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ : মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষাশহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদিতে রাষ্ট্রপতি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপরই শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তারা ভাষাশহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে কিছুক্ষণ নীরবতা পালন করেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রীপরিষদের সদস্যদের নিয়ে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। তারপর ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া, বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ।
এরপর ঢাকার দুই মেয়র, তিন বাহিনীর প্রধান, পুলিশ প্রধান, এরপর কূটনীতিবিদ, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের নেতাকর্মীরা শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।তাদের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর শহীদ মিনার সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আশপাশে রয়েছে হাজারো মানুষের ঢল। অনেকেই বুকে কালো ব্যাজ ধারণ করেছেন।শাহবাগ, আজিমপুর, নীলক্ষেতসহ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে যাবার প্রতিটি প্রবেশপথেই ছিল মিছিলের সারি। শহীদ মিনারের আশপাশের এলাকায় মাইকে অনবরত বাজানো হচ্ছে একুশের গান।
অনেকের হাতে-গালে শহীদ মিনারের প্রতীক শোভা পাচ্ছে। শহীদ মিনারে আসা নগরবাসীর পোশাকেও রয়েছে একুশের চেতনার ছাপ। পোশাকে সাদা আর কালো রঙের ব্যবহার বেশি। তাতে খচিত রয়েছে বর্ণমালা, কবিতার চরণ বা গানের কলি। আবার লাল-সবুজের বাংলাদেশকে ধারণ করতে দেখা গেছে কারো পোশাকে। রাস্তার পাশে ছোট দোকানে এবং হাতে করে ফেরিওয়ালারা বিক্রি করছেন পতাকা, একুশের বাণী লেখা মাথায় বাঁধার ফিতা, শহীদদের ছবিসহ পোস্টকার্ড।
শাহবাগ, পলাশী, কাঁটাবন, নীলক্ষেত মোড়সহ শহীদ মিনারের আশপাশে সময় গড়ার সঙ্গে বাড়ছে এ ভিড়। রাত ১১টার পর থেকেই শহীদ মিনার এলাকায় আসতে শুরু করে সাধারণ জণগন।
১৯৫২ সালে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে বাঙালির আত্মদানের দিনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে মহান শহীদ দিবস। বাঙালির অহংকারের দিন। জাগরণের দিন। তবে এ অর্জন এখন শুধু বাংলাদেশেরই নয়, ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে পালিত হয় সারা বিশ্বে। ১৯৯৯ সালে ইউনেসকো একুশে ফেব্র“য়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।