খােলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭: মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে পঞ্চগড় জেলা শিশু একাডেমী কর্তৃক আয়োজিত শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় চরম অব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অংশগ্রহণকারী শিশুদের অভিভাবকরা। ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা এর জন্য জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তার গাফিলতির অভিযোগ তোলেন।
সোমবার রাতে পঞ্চগড় জেলা সদরের শিশু একাডেমী চত্ত্বরে শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় এইসব অভিযোগ করেন প্রতিযোগি ও অভিভাবকরা। এমনকি তারা শিশু একাডেমীর দায়িত্বরত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
অভিভাবকরা জানান, শুধু আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে শিশু একাডেমী চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার জন্য শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেয় শিশু একাডেমী। ২১ ফেব্রুয়ারি সকালে তারা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিশুরা প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার জন্য জড়ো হতে থাকে জেলা শিশু একাডেমী চত্ত্বরে। কিন্তু আসন বিন্যাসসহ কোন সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার বালাই নেই শিশু একাডেমীর। মেঝেতে বসার জায়গা না পেয়ে কাঁদতে শুরু করে অনেক শিশু। মাত্র ৫০ জন প্রতিযোগি অংশ নেয়ার জায়গায় প্রায় শতাধিক প্রতিযোগিকে গাদাগাদি করে বসানো হয়। একজনের উপর দিয়ে যাচ্ছে আারেক জন। এই অবস্থা শুধু একদিনের নয় দীর্ঘদিন ধরেই এভাবেই চলছে শিশু একাডেমী। দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে নিয়মিত অফিসে পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ করেন অভিভাবকরা। এমনকি জাতীয় দিবসগুলো ছাড়া কোন কর্মসূচি থাকেনা শিশু একাডেমীর।
এ ঘটনায় শিশু একাডেমী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হন অভিভাবকরা। পরে বিষয়টি পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক অমল কৃষ্ণ মন্ডলকে অবহিত করা হলে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আশরাফুল মোমিন খান ঘটনাস্থলে এসে অভিভাবকদের শান্ত করেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে আশ্বস্ত করেন।
অভিভাবক আঞ্জুমান আরা বেগম জানান, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে শিশু একাডেমী চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। কিন্তু এখানকার চরম অব্যবস্থাপনা দেখে আমরা হতাশ হয়েছি।
তার মতো খন্দকার রবিউল করিম নামে আরেক অভিভাবক জানান, শিশু একাডেমীর কর্মকর্তাদের গাফিলতির কারণেই এমন হ-য-ব-র-ল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। শিশুরা বসার জায়গা পর্যন্ত পাচ্ছে না। গাদাগাদি করে বসানো হচ্ছে। এভাবে প্রতিযোগিতার জন্য ডেকে শিশুদের কোমলমতি মনে আঘাত করা হচ্ছে।
পঞ্চগড় পৌরসভার কাউন্সিলর হাসনু আরা শাম্মি জানান, সরকারিভাবে জেলা শিশু একাডেমীতে যেসব অনুদান আসে তার সঠিক ব্যবহার হয়না। তাই দায়সারা গোছের আজকের এই চিত্রাঙ্কর প্রতিযোগিতা। দিনের পর দিন এই অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়েই চলছে শিশু একাডেমী।
এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়াও দাবি তোলেন তিনি। এ বিষয়ে জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা শাহীন উদ্দিনের সাথে কথা বললে তিনি কৌশলে এরিয়ে যান। পঞ্চগড় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আশরাফুল মোমিন খান বলেন, অব্যবস্থাপনার বিষয়ে জেলা প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।