Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪, বুধবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭:  13 ইট পাথর ও বালি দিয়ে শহীদ মিনার তৈরী হয়নি। বুকের তাজা রক্ত দিয়ে শহীদদের স্মরণে স্মৃতির মিনার তৈরী করা হয়েছে। বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলনে, আব্দুল জব্বার, রফিক উদ্দিন আহমদ, বরকত, আবদুস সালাম ও শফিউর রহমানসহ নাম না জানা অনেকে মাতৃভাষা বাংলাকে রক্ষার জন্য শহীদ হলেও সকল ক্ষেত্রে বাংলা ভাষার সঠিক ব্যবহার হচ্ছে না। শুধু মাত্র ২১ শে ফেব্রুয়ারী আসলে প্রতিযোগীতা করে শহীদ মিনারে লাখো জনতা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানালেও জীবিত ভাষা সৈনিক ও তাদের পরিবারের খোঁজ নিচ্ছেন না কেউ।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২টায় গাজীপুর শহরের শিববাড়ির ব্যাংকার্স রোডে অবস্থিত গ্রীন গার্ডেন কমিউনিটি সেন্টারে ভাষা শহীদদের স্মরণে গাজীপুর সিটি প্রেস ক্লাব আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভাষা সৈনিক ও প্রবীণ আইনজীবি মো. আলাউদ-দীন হোসেন এসব কথা বলেন।

এসময় তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের মতো ভাষাসৈনিকদেরও রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করার দাবি জানান।

ভাষা সৈনিক আলাউদ-দীন হোসেন ৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিচারন করতে গিয়ে বলেন, অনেক অজ্ঞাত ভাষা শহীদের নাম ৬৫ বছরেও আমরা জানি না। তিনি বলেন, নারীরাই প্রথম ভাষার জন্য রাজপথে নেমেছিল। কিন্তু তাদের নাম ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে গেছে। সেই সাথে নারী ভাষা সৈনিকদের অবদানের কথা আমরা ভুলে গেছি। বর্তমানে ছেলে-মেয়েদের বাংলা ভাষা সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান নেই। যার প্রদান কারণ অভিভাবকরা ইংলিশ মিডিয়ামে বাচ্চাদের পড়াশোনা করাতে বেশি আগ্রহী হয়ে উঠছে।

তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের স্বজনদের নানা সুযোগ-সুবিধাসহ মর্যাদা বাড়ানোর উদ্যোগ নিলেও ভাষা শহীদ পরিবারে প্রতি সরকার উদাসীন। মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের শুরুটা হয়েছিল মূলত ভাষা আন্দোলনের হাত ধরেই। বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলনই পরবর্তী সময়ে আমাদেরকে স্বাধীন জাতি হতে অনুপ্রেরণা জাগিয়েছিল।

প্রবীণ ভাষা সৈনিক বলেন, ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো বাংলা ভাষা আন্দোলন, মানুষের ভাষা এবং কৃষ্টির অধিকারের প্রতি সম্মান জানিয়ে ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে যা বৈশ্বিক পর্যায়ে সাংবার্ষিকভাবে গভীর শ্রদ্ধা ও যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে উদযাপন করা হয়। একুশে ফেব্রুয়ারীকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ের উদ্যোক্তাকে আজও পুরস্কৃত করা হয়নি। তার কাজের স্বীকৃতি আমরা দিতে পারিনি। আমরা কম্পিউটারে ও ইন্টারনেটে যার অবদানে বাংলা লিখতে পারছি তার কথাও ভুলে গেছি। সে কি একুশে পদক পাওয়ার যোগ্য নয়।

গাজীপুর সিটি প্রেস ক্লাবের সভাপতি মঞ্জুর হোসেন মিলনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভাষা সৈনিক ও প্রবীণ আইনজীবি মো. আলাউদ-দীন হোসেন, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাবিদ ও বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রিন্সিপাল ইকবাল সিদ্দিকী, প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এ্যাডভোকেট মো. আসাদুল্লাহ্্ বাদল। এসময় অন্যান্যের মধ্যে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের গাজীপুরের সভাপতি ফেডরিক মুকুল বিশ্বাস, সাংবাদিক রেজাউল বারী বাবুল, কবি ও সাংবাদিক ইজাজ আহমেদ মিলনসহ স্থানীয় বিশিষ্ট আইনজীবি ও মিডিয়াকর্মীবৃন্দ বক্তব্য প্রদান করেন। এছাড়াও আলোচনায় ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ অংশগ্রহন করেন।