Wed. Apr 30th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪, বুধবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭:  33 ঢাকার রাজপথের ভাষা আন্দোলনের ডাক শুনে কুষ্টিয়ায়ও সেদিন কলেজপড়–য়া যুবকেরা রাস্তায় নেমে এসেছিল। মায়ের মুখের ভাষা বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষায় আন্দোলনে নেমেছিল। সেদিনের কথা মনে হলে আজও তাদের বুক কাঁপে। তবে যে লক্ষ্য, উদ্দেশ্যে নিয়ে সেদিন ভাষা আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল তারা। গত ৬৫ বছরেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। এমন কথা জানালো কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজ মাঠে গতকাল আয়োজিত ৫ ভাষা সৈনিকের এক সংম্বর্ধনা পুর্ব আলোচনা সভায় ভাষা আন্দোলনে অংশ নেয়া সংম্বর্ধিত ভাষা সৈনিকরা।

কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজের উদ্যোগে আয়োজিত ৫২’র ভাষা আন্দোলনে কুষ্টিয়ায় সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে অংশ নেয়া রাজপথে আন্দোলনের বেঁচে থাকা ৫ ভাষা সৈনিকের এক সংম্বর্ধনার আয়োজন করা হয়। ইসলামিয়া কলেজের অধ্যক্ষ নওয়াব আলীর সভাপতিত্বে সংম্বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোঃ সেলিম তোহা, বিশেষ অতিথি ছিলেন কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা.ইফতেখার মাহমুদ, কুষ্টিয়া সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এ্যাডঃ আ স ম আখতারুজ্জামান মাসুম, শহর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতা ও এ্যাডঃ সামসুর রহমান বাবু প্রমুখ।

তৎকালীন সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নজম উদ্দিন আহমেদ, আন্তজার্তিক খ্যাতি সম্পন্ন আইনজীবি ব্যারিষ্টার এম আমির-উল ইসলাম, প্রবীণ সাংবাদিক আলহাজ্ব ওয়ালিউল বারী চৌধুরী, প্রাক্তন অধ্যাপক সুদিন কুমার লাহিড়ী ও আলোকচিত্র শিল্পী আব্দুল হামিদ রায়হায়কে এ সংম্বর্ধনা প্রদান করা হয়।

কুষ্টিয়া শহরের বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ সদর উদ্দিন আহমেদের বড় ছেলে কুষ্টিয়া কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র নজমউদ্দিন আহমেদ ছিলেন তখন সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক। ঢাকার আন্দোলন সংগ্রামের কথা শুনে সে ব্যারিষ্ট্রার আব্দুল হক, জুলফিকার হায়দারসহ তারা অনেকে রাজপথে নেমেছিল। সেটিই ছিল প্রথম পুর্বপাকিস্তানে পুলিশের গুলিতে কোন ছাত্র নিহত হওয়ার ঘটনা। এত বছরপর আজকের এই সংম্বর্ধনায় তারা বেশ আনন্দিত গর্বিত। তবে ভাষা আন্দোলনের ৬৫ বছরেও মূল লক্ষ্য, উদ্দেশ্যে অর্জিত হয়নি। এমন অভিযোগ করলেন তার বক্তব্যে।

সংম্বর্ধনা সভায় সংম্বর্ধিত ভাষা আন্দোলনের সংগঠক ও মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণাপত্রের রচয়িতা ও সংবিধান প্রণেতা ব্যারিষ্টার এম আমির-উল-ইসলাস জানালেন, ঢাকাতে ভাষা আন্দোলন শুরু হলেও এর রেশ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছিল। সারাদেশের সেই দিনের আন্দোলন সংগ্রামের ইতিহাস, ব্যক্তিকে সঠিক ভাবে সংরক্ষণ জরুরী। তিনি আরও জানান, ভাষা আন্দোলনের সুত্র ধরেই বাঙ্গালী মুক্তিযুদ্ধের অনুপ্রেরণা পেয়েছিল। আয়োজক কমিটির সদস্য আকরাম হোসেন জানান, পত্রিকান্তে তারা জানতে পেরেছে ৫২’র ভাষা আন্দোলনে কুষ্টিয়াতেও পুলিশের ১শ ৪৪ ধারা ভঙ্গ করে র‌্যালি ও সমাবেশ হয়েছিল। সেই সুত্র ধরেই এখানকার ভাষা সৈনিকদের নাম সংগ্রহ করেছেন। তাদের মধ্যে বেছে বেছে ৫ জন ভাষা সৈনিককে সংম্বর্ধনা দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তিনি জানান, এই প্রথম কোন জেলা শহরে ভাষা সৈনিকদের গণসংম্বর্ধনার আয়োজন করা হলো। এটি প্রথম কুষ্টিয়াতে এ ধরণের আয়োজন করা হলো। প্রতি বছরই এমন আয়োজন করা হবে বলে তিনি তার অঙ্গিকার ব্যক্ত করলেন। আলোচনা সভা শেষে সংম্বর্ধিত ভাষা সৈনিকদের ক্রেষ্ট প্রদান করা হয়। এর পর এক সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।