Wed. Jun 18th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪, শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭: 35প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ হবে আত্মমর্যাদাশীল একটি দেশ। আর এটি বাস্তবায়ন করতে হলে প্রয়োজন দেশে ব্যাপক শিল্পায়ন এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা।’ রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে শনিবার দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজিত ঢাকা অ্যাপারেল সামিট-২০১৭ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
‘ঞড়মবঃযবৎ ভড়ৎ ধ নবঃঃবৎ ঃড়সড়ৎৎড়’ি এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে তৈরি পোশাকশিল্প প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) উদ্যোগে এ অ্যাপারেল সামিটের আয়োজন করা হয়।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অর্থনৈতিকভাবে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতার ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমরা রূপকল্প ২০২১ ঘোষণা করেছি। এ রূপকল্প অনুযায়ী ২০২১ সালের মধ্যে দারিদ্র্যের হার ১৫ শতাংশে নীচে নামিয়ে আনা হবে এবং আমরা হবো মধ্যম আয়ের দেশ। আর এটি বাস্তবায়ন করতে হলে প্রয়োজন দেশে ব্যাপক শিল্পায়ন এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পোশাকশিল্প আজ নিঃসন্দেহে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম চালিকাশক্তি। আমাদের রফতানি আয়ের প্রায় ৮০ শতাংশই আসে এ খাত থেকে। প্রত্যক্ষভাবে ৪০ লাখ শ্রমিকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে এ খাতে, যার মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশই নারী। পরোক্ষভাবে প্রায় চার কোটিরও বেশি মানুষ এ শিল্পের ওপর নির্ভরশীল।’
তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের পর পোশাকশিল্পের স্বার্থে বেশকিছু পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ শিল্পে অগ্রিম আয়কর ১.৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে দশমিক ৭০ শতাংশ করা হয়েছে। তৈরি পোশাকশিল্পে করপোরেট করের হার ৩৫ ভাগ থেকে কমিয়ে ২০ ভাগ করেছি। এ ছাড়া মালিক-শ্রমিক সম্পর্ক উন্নয়নে আমরা ব্যাপক পদক্ষেপ নিয়েছি। শ্রমিক-মালিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন, শ্রমিকদের আইনগত অধিকার নিশ্চিতকরণ এবং শ্রম কল্যাণে বহুবিধ কর্মসূচি যেমন-শ্রমকল্যাণ ফাউন্ডেশন এবং রফতানিমুখী শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের জন্য কল্যাণ তহবিল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছি।’
‘২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করার লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এ ক্ষেত্রে পোশাকশিল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। যদিও বিশ্বের পোশাক বাজারে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়, কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, এখাতে বাংলাদেশের অংশীদারিত্ব মাত্র ৫.১ ভাগ’ যোগ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তারা যাতে ২ শতাংশ সুদে ঋণ নিয়ে শ্রমিকদের জন্য নিজস্ব জমিতে ডরমিটরি স্থাপন করতে পারেন, সে ব্যবস্থাও করে দিয়েছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে রোল মডেল। গত বছর ৭.১ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। রফতানি আয় ৩৪.২৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। গত ৮ বছরে ৫ কোটিরও বেশি মানুষ নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্তে উঠে এসেছে। বর্তমানে মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৪৬৬ ডলার। মেট্রোরেল ও বি আরটি প্রকল্পের কাজ চলছে। জয়দেবপুর- ময়মনসিংহ ও ঢাকা- চট্টগ্রাম মহাসড়ককে ৪-লেনে উন্নীত করা হয়েছে। ২০১৮ সালে পদ্মা সেতুতে যানবাহন চলবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে, এটা আমি আপনাদের আশ্বস্ত করছি। ইতোমধ্যেই আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ১৫ হাজার ৩০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করেছি। ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। গ্যাসের সঙ্কট মোকাবিলার জন্য এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সারাদেশে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কাজ চলছে। ঢাকায় ও চট্টগ্রামে দুটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বিজিএমইএ’কে দেওয়া হবে। ৪-লেন বিশিষ্ট ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ককে ৬-লেনে উন্নীত করার বিষয়টি আমাদের পরিকল্পনায় রয়েছে।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত রয়েছেন—অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ।