Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭: 12হাত-পা অথবা চোখ ছাড়া বেঁচে থাকা সম্ভব হলেও রক্ত ছাড়া বাঁচার কথা কল্পনাও করা যায় না। মানবদেহে রক্ত তাই অপরিহার্য। জীবন রক্ষার অন্যতম উপায় রক্ত পরিসঞ্চালন কখনো কখনো তৈরি করতে পারে জটিলতা।
রক্তবাহিত রোগের সংক্রমণ এখনো একটি প্রধান সমস্যা। হেপাটাইটিস বি, হেপাটাইটিস সি, এইডসসহ বিভিন্ন প্রাণঘাতী জীবাণু সহজেই রক্তের মাধ্যমে রক্তগ্রহীতার দেহে প্রবেশ করতে পারে। এই পরিস্থিতির মূল কারণ রক্ত পরিসঞ্চালনের আগে রক্তটি জীবাণুমুক্ত কি না, তা যথাযথভাবে পরীক্ষা না করা। অনুমোদনহীন এসব রক্ত বিক্রি করা হয়। আর তা আসে মূলত নেশাসক্ত পেশাদার রক্তদানকারীদের থেকে। এ ছাড়া মেয়াদোত্তীর্ণ রক্ত বা ভেজাল রক্তও এসব ব্লাড ব্যাংক থেকেই আসে।

ভুলক্রমে এক গ্রুপের রক্ত অন্য গ্রুপের রোগীদের দিলে রক্ত হয়ে উঠতে পারে প্রাণঘাতী। এ ধরনের ঘটনা কম হলেও একেবারেই হয় না, তা নয়। এসব ক্ষেত্রে রক্ত সংগ্রহকারী ও পরীক্ষাকারী ব্লাডব্যাংক, চিকিৎসক অথবা নার্স যে কারো ভুল বা অসতর্কতা দায়ী। রোগী সাধারণত বুকে-পিঠে ব্যথা বা শ্বাসকষ্টের অভিযোগ করে থাকে। চিকিৎসক দ্রুত ব্যবস্থা নিলে পরবর্তী জটিলতা থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব হয়। এ ছাড়া যেকোনো পরিসঞ্চালনেই কাঁপুনি ও জ্বর আসা এবং অ্যালার্জি জাতীয় ছোটখাটো সমস্যা হতে পারে।
যাদের কিছুদিন পরপর রক্ত নিতে হয়, তাদের দেহে লৌহের আধিক্যসহ অন্যান্য সমস্যা হতে পারে।
অনেক সময় অধিক রক্ত দ্রুত প্রবেশ করলে বৃদ্ধ অথবা হৃদরোগীর হার্ট ফেইলিউর জাতীয় সমস্যা হতে পারে।
অবশ্য রোগী বা তাঁর আত্মীয়স্বজন সবচেয়ে বড় সমস্যায় পড়েন, রক্ত পরিসঞ্চালনের আগেই যখন দেওয়ার জন্য রক্ত খুঁজতে থাকেন। পাড়ায় পাড়ায় ব্যাঙের ছাতার মতো অবৈধ ব্লাড গড়ে উঠলেও নিরাপদ রক্ত এখনো দুর্লভ। বিশেষ করে জরুরি মুহূর্তে রক্ত প্রয়োজন হলে, তা হয়ে ওঠে সোনার হরিণ। এ ছাড়া যাদের ঘন ঘন রক্ত নিতে হয়, তাদের বেশিরভাগ সময় যায় রক্তের খোঁজে। দুর্লভ দলের রক্ত হলে তো কথাই নেই।
আমাদের কী করা উচিত
রক্ত যে কারোরই যেকোনো সময় প্রয়োজন হতে পারে—এ কথা মনে রেখে আমরা যদি এখনই প্রস্তুতি নিয়ে রাখি, তবে রক্ত পরিসঞ্চালনের সমস্যা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব। আমাদের যেসব উদ্যোগ নিতে হবে তা হলো :
নিজের, আত্মীয়স্বজন এবং বন্ধুবান্ধবদের রক্তের গ্রুপ জেনে রাখা।
নিকটস্থ ব্লাড ব্যাংকের ঠিকানা ও ফোন নম্বর জেনে রাখা।
শুধু নিবন্ধনকৃত ব্লাড ব্যাংকে রক্তদান ও গ্রহণ করা।
পেশাদার রক্তদাতার রক্ত না কেনা।
নিজে নিয়মিত রক্তদান করা এবং সকলকে উদ্বুদ্ধ করা।
রক্তবাহিত রোগে সংক্রমিত হলে রক্তদান না করা।