খােলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭: দিনাজপুর জেলায় লিচুর জন্য খ্যাত বিরল উপজেলার লিচু চাষীরা লিচুর পাশাপাশী সাথী ফসল হিসেবে মিষ্টি কুমড়া চাষ করে লাভের মুখ দেখছেন। লিচু তলায় খুব সহজেই কম খরচে মিষ্ঠি কুমড়ার চাষ করা যায়। ফলে লিচুর পাশাপাশী মিষ্টি কুমড়া চাষ করে লাভবান হচ্ছে কৃষকরা। এছাড়াও যে সব জমি পুর্বে পতিত হয়ে থাকতো, সে সব জমিতেও এখন মিষ্টি কুমড়ার চাষ হচ্ছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শে ও তত্তাবধানে বিরল উপজেলা জুড়ে এখন চাষ করা হচ্ছে মিষ্টি কুমড়া।
বিরল উপজেলায় প্রায় ২ হাজার ৫শত হেক্টর লিচুর বাগান রয়েছে। এই বাগান গুলির বয়স ১৫ থেকে ২০ বছর। একটি গাছ থেকে অন্য একটি লিচুর গাছের মাঝখানে প্রায় অনেক খানি জমি অকেজ হয়ে পড়ে থাকে। ব্লক সুপারভাইজার শামসুল হক এর তত্তাবধানে এবার এই পতিত জমি গুলিতে মিষ্টি কুমড়া আবাদ করেন কৃষকরা। এক বিঘা জমিতে মিষ্টি কুমড়া আবাদ করতে খরচা হয় প্রায় ১০ হাজার টাকা। আবাদ করা মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হয় প্রায় ৪০ হাজার টাকায়। এসব মিষ্টি কুমড়া সম্পুর্ন রাসায়নিক বিষ মুক্ত বিধায় শরীরের কোন ক্ষতি করেনা। কৃষকরা অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হওয়ায় বিরল উপজেলায় মিষ্টি কুমড়ার চাষ কৃষকদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
কৃষকদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, পুর্বে এই জমি গুলিতে কোন ফসল হতো না। কৃষকদের ধারণা ছিল লিচু গাছের তলায় কোন ফসল হবেনা। কিন্তু কৃষি অফিসের পরামর্শে এই পতিত জমি গুলিতে মিষ্টি কুমড়া আবাদ করে যথেষ্ট সাফল্য পেয়েছেন কৃষকরা। তারা দিন দিন লিচুর সঙ্গে সাথী ফসল হিসেবে মিষ্টি কুমড়া চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। সামান্য সেচ ও গোবর সার এবং ছাই দিয়ে মিষ্টি কুমড়া চাষ করা হয়। কৃষি শ্রমিকের অতটা প্রয়োজন হযনা। তাই সাথী ফসল হিসেবে মিষ্টি কুমড়া চাষ করে যে অর্থ উপার্জন করেন, তা দিয়ে কৃষকরা সংসারের খরচ ভালো ভাবেই চলে।
লিচুর সাথী ফসল হিসেবে মিষ্টি কুমড়ার চাষ হয় এটা বিরল উপজেলার কৃষকদের নিকট অজানা ছিল। কিন্তু বর্তমান উপজেলা কৃষি অফিসার আশরাফুল আলম গবেষনায় ও পরামর্শকে কাজে লাগিয়ে রাসায়নিক বিষমুক্ত কৃষকরা মিষ্টি কুমড়ার চাষ শুরু করেন। প্রায় ২ হাজার ৫শত হেক্টর লিচু বাগানের সাথী ফসল হিসেবে আবাদ হচ্ছে মিষ্টি কুমড়া।
লিচুর সাথী ফসল হিসেবে বিরল উপজেলায় প্রচুর পরিমানে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ হচ্ছে। কিন্তু সরাসরী বিপননের ব্যবস্থা না থাকায় উৎপাদিত মিষ্টি কুমড়া দালাল এবং ফরিয়াদের মাধ্যমে বিক্রি করেতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষকরা। ফলে উপযুক্ত দাম তাদের হাতে এসে পৌচাচ্ছেননা। অথচ বাজারে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মিষ্টি কুমড়া। তাই উপজেলা প্রশাসন মিষ্টি কুমড়ার ন্যায্য মুল্য ও সহজে বিপননের ব্যবস্থা নিবেন এই প্রত্যাশা বিরল বাসীর।