খােলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭: বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক সমিতির (বিজিএমইএ) বহুতল ভবন ভাঙ্গার আপিল বিভাগের রায় পুনঃবির্বেচনা (রিভিউ) চেয়ে আনা আবেদন শুনানির জন্য আগামী ২ মার্চ দিন ধার্য করা হয়েছে।
মঙ্গলবার আদালত সূত্র জানায়, প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতেৃত্বে আপিল বিভাগের বেঞ্চ এই দিন ধার্য করে আদেশ দেন।
এর আগে ২০১৬ সালের ৮ ডিসেম্বর রিভিউ পিটিশন দায়ের করে বিজিএমইএ। পিটিশনে আপিল বিভাগের রায় স্থগিত করে বহুতল ভবনটি ভেঙ্গে ফেলার জন্য তিন বছরের সময় চাওয়া হয়।
আপিলের রায়ে বলা হয়, অবিলম্বে ভাঙ্গতেই হবে এই বহুতল অবৈধ ভবন। ভবন ভাঙ্গার যাবতীয় খরচ বিজিএমইএকেই বহন করতে হবে। বিজিএমইএ না ভাঙ্গলে রায়ের কপি পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে রাজউককে ভবনটি ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ দেয় আপিল বিভাগ। এ জন্য যে অর্থ প্রয়োজন তা বিজিএমইএর কাছ থেকে নিতে বলা হয়েছে। বিজিএমইএর ‘লিভ টু আপিল খারিজের’ পূর্ণাঙ্গ রায়ে এ নির্দেশ দেয় আপিল বিভাগ।
হাইকোর্ট ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল ভূমির মালিকানা স্বত্ব না থাকা এবং ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ও জলাধার আইন ভঙ্গ করায় বিজিএমইএ ভবন নির্মাণ অবৈধ ঘোষণা করে।বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) ভবন অবৈধ ঘোষণা করে ভেঙে ফেলা সংক্রান্ত আপিল বিভাগের ৩৫ পৃষ্ঠায় দেয়া পূর্নাঙ্গ রায় গত বছর ৮ নভেম্বর প্রকাশ করা হয়েছে।
এর আগে গতবছর ২ জুন আপিল বিভাগ বেঞ্চ সংক্ষিপ্ত রায় দিয়েছিলো। এ ভবনটি বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির প্রধান কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। রাজধানীর হাতিরঝিল প্রকল্প এলাকায় পরিবেশের ক্ষতি করে বে আইনিভাবে প্রায় ২০ বছর আগে বহুতলবিশিষ্ট বিজিএমইএ ভবন নির্মাণ করা হয়।
হাইকোর্ট ২০১১ সালে এক রায়ে জলাধার রক্ষা আইন লঙ্ঘন করে হাতিরঝিলে গড়ে তোলা বহুতল এ ভবনটি ভাঙার নির্দেশ দেয়। রায়ে বলা হয়, বিজিএমইএ ভবনটি সৌন্দর্যমন্ডিত হাতিরঝিল প্রকল্পে একটি ক্যান্সারের মতো। ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ ৬৯ পৃষ্ঠায় রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের পর তার বিরুদ্ধে আপিল করে বিজিএমইএ।
উল্লেখ্য, রাজউক-এর অনুমোদন ছাড়া বিজিএমইএ ভবন নির্মাণ বিষয়ে ২০১০ সালের ২ অক্টোবর একটি ইংরেজি দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি আদালতের দৃষ্টিতে আনেন আইনজীবী ডি এইচ এম মুনিরউদ্দিন। বিষয়টি আমলে নিয়ে ওই বছরের ৩ অক্টোবর হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ স্বঃপ্রণোদিত হয়ে বিজিএমইএ ভবন ভাঙার নির্দেশ কেন দেয়া হবে না-এ প্রশ্নে সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল জারি করে। ওই রুলের ওপর চুড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল হাইকোর্ট বিজিএমইএ ভবন অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন।