খােলা বাজার২৪।। শনিবার, ৪ মার্চ ২০১৭: শেরপুর জেলা সিংহভাগ লোক কৃষক ফসল উৎপাদন করে জীবন-জীবিকা চালায়। উৎপাদিত ফসল নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি ফসল বিক্রি করে দেশের খাদ্য চাহিদায় যোগান্তকারী রেখে আসছে যুগ যুগ ধরে। যে কারণে শেরপুর জেলার বাসমতি চাউলসহ অন্যান্য চাউলের চাহিদা দেশ জুড়েই রয়েছে। তাই অত্র জেলার সু-স্বাদু চাউলের চাহিদা ব্যাপক। প্রতি বছরের ন্যায় এবারো অত্র জেলায় বোরো ফসল চাষাবাদ হয়েছে। বিগত বছরের তুলনায় এবার একটু বেশী বোরো ফসল চাষাবাদ করেছে কৃষকরা। কারণ ধানের বাজার ফাল হওয়ায় কৃষকরা বোরো ধান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। কিন্তু মৌসুমের শুরুতেই বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কবলে পড়েছে বোরো আবাদ। আর আসা-যাওয়ার খেলায় সেচ সংকটে পড়েছেন কৃষকরা। প্রয়োজন অনুসারে পানি সেচ দিতে না পারায় বোরো ক্ষেত শুকিয়ে ফাটল ধরতে শুরু করেছে। অপরদিকে শেরপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলার বোরা চাষীদের কাছ থেকে গভীর নলকুপের মালিকরা তাদের ইচ্ছামত সেচের টাকা আদায় করছে। কৃষকরা টাকা দিতে ব্যর্থ হলে সেচ সংকটে ফেলে দেয় কৃষকদেরকে। প্রতি একর জমিতে সেচ খরচ বাবদ ৩ হাজার থেকে শুরু ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত গুনতে হয় বোরো চাষীদের। একদিকে যেমন লোডশিডিংয়ের কবলে পড়ে অপরদিকে গভীর নলকুপ মালিকদের সেচের টাকার চাপে পড়েছে। এতে কৃষকরা বোরো চাষে উভয় সংকটে পড়ে হিমশিম খাচ্ছে।
উল্লেখ্য, জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় এবার প্রায় ৯৫ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে মাঠ পর্যায়ে খোজ নিয়ে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমের শুরুতেই শেরপুরের বিভিন্ন অঞ্চলে দীর্ঘসময় ধরে পল্লী বিদ্যুৎ ও পিডিপি’র লোডশেডিং থাকছে। এক-দুই ঘণ্টা পর বিদ্যুৎ আসলেও কিছুক্ষন পর আবার চলে যাচ্ছে। দিন-রাতে মাত্র ৫-৬ ঘণ্টা বিদ্যুৎ মিললেও আবার কোন কোন সময় এরচেয়ে কম সময় বিদ্যুৎ থাকায় বোরো রোপনের জমিতে চাহিদা অনুয়ায়ী সঠিকভাবে পানিসেচ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। ভুক্তভোগী কৃষকদের মতে, বিদ্যুৎতের ওই সমস্যার সমাধান না হলে বোরো আবাদে তারা ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।
বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা যায়, চাহিদার তুলনায় কম বিদ্যুৎ পাওয়ায় বাধ্য হয়ে লোডশেডিং দিতে হয়। লোডশেডিং থাকলেও বোরো আবাদের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই। এছাড়া চাহিদা ৩৬ মেগাওয়াট থাকলেও বর্তমানে পাওয়া যাচ্ছে ২০ থেকে ২২ মেগাওয়াট।