খােলা বাজার২৪।। সোমবার, ৬ মার্চ ২০১৭: জাতীয় পাট দিবস আজ। ‘সোনালি আঁশের সোনার দেশ, পাট পণ্যের বাংলাদেশ’ এই স্লোগানে নিয়ে সারাদেশে এবারই প্রথমবারের মতো পালিত হলো ‘জাতীয় পাট দিবস-২০১৭’। এ উপলক্ষে আজ সোমবার সকালে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। রাজধানীসহ সারাদেশে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে পাট ও পাটজাত পণ্য সহযোগে বর্ণিল আলোক সজ্জা করা হয়েছে।
এ র্যালিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী মুহাঃ ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম । এছাড়াও বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাংসদ সাবিনা আক্তার তুহিনসহ বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ ও এর আওতাধীন দপ্তর/সংস্থার কর্মকর্তাবৃন্দ, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত পাটচাষী বৃন্দ, পাটের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল ব্যাবসায়ীক প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন ।
বর্ণাঢ্য এ দিবসের আয়োজনে ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা, বিভাগীয় শহর থেকে পাট চাষীসহ পাটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে এর সাথে অর্ন্তভূক্ত করা হয় । ঢাকাসহ সারাদেশে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে পাট ও পাটজাত পণ্য সহযোগে বর্ণিল আলোক সজ্জা করা হয়েছে। র্যালি, ব্যানার, পোস্টারসহ পাট চাষ সংশ্লিষ্ট এলাকা গুলোতে বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। পাট মিল এলাকাগুলোতে আলোক সজ্জা সহ তোড়ন নির্মান করা হয়।
মন্ত্রী মুহাঃ ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক বলেন, বিশ্বখ্যাত সোনালী আঁশ পাট ও পাটজাত দ্রব্যই ছিল এদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের প্রধান উৎস। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু জনস্বার্থে পাট ও বস্ত্রকলসমূহ জাতীয়করণ করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে এ ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হয়নি। কালের পরিক্রমায় তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার মৃতপ্রায় পাটকে আবার সোনালী আঁশের ঐতিহ্যে ফিরিয়ে এনেছেন। পাট এখন পরিবেশবান্ধব ও বহুমুখি পণ্যের উপাদান। বাংলার অন্যরকম গৌরব। বাংলার পাট বিশ্বমাত-এটাই এখন বাস্তব।
প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম বলেন, ‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন-২০১০’ ও ‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার বিধিমালা-২০১৩’ অনুযায়ী (ধান, চাল, গম, ভুট্টা, সার, চিনি,মরিচ,হলুদ,আদা, পেয়াজ,রসুন, ডাল,ধনিয়া,আলু, আটা,ময়দা ও তুষ-খুদ-কুড়া) এ সতেরটি পণ্য যে কোনো পরিমাণ সংরক্ষণ ও পরিবহনে পাটজাত মোড়ক বাধ্যতামূলক ব্যবহার নিশ্চিত হয়েছে। এতে পাটের অভ্যন্তরীণ চাহিদা বেড়েছে, পাট চাষীরা ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে পাটকে বিশ্ব বাজারে তুলে ধরতে জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার (জেডিপিসি) এ ১৩৫ প্রকার বহুমুখী পাটপণ্যের স্থায়ী প্রদর্শনী ও বিক্রয় কেন্দ্র চালু হয়েছে। পাট থেকে অমিত সম্ভাবনাময় ভিসকস ফাইবার, চারকোল, কম্পোজিট জুট টেক্সটাইল, পাট পাতার কোমল পানীয়, নদীর ভাঙ্গনরোধে পরিবেশবান্ধব জুট জিও-টেক্সটাইল, পলিথিনের বিকল্প পাটের শপিং ব্যাগ উৎপাদনের মাধ্যমে পাটখাতে নতুন দিগন্ত উম্মোচিত হচ্ছে । ফলশ্রুতিতে পাট ও পাটজাত পণ্যের চাহিদা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে । বাংলাদেশের কৃষক তাদের উৎপাদিত সোনালী আঁশ বিক্রি করে কাঙ্খিত মূল্য পাবেন ।
উল্লেখ্য আগামী ৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে মূল অনুষ্ঠান উদ্বোধন করবেন। এছাড়াও ৯-১১ মার্চ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে তিনদিন ব্যাপি পাটপণ্যের মেলা অনুষ্ঠিত হবে ।