খােলা বাজার২৪।। মঙ্গলবার, ৭ মার্চ ২০১৭: জনবল সংকটের কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়া বাংলাদেশ রেলওয়ের ৬০টি স্টেশন আবার চালূ করছে কর্তৃপক্ষ। আগামী ১৬ মার্চ বৃহস্পতিবার নরসিংদীর ঘোড়াশাল স্টেশন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ স্টেশনগুলো চালুর ঘোষণা দিবেন রেলমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক। ইতিমধ্যে এ সব বন্ধ স্টেশনগুলোতে মাস্টার নিয়োগসহ আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি শেষে পর্যায়। এখন শুধু মন্ত্রী ঘোষণা দিলেই পুনরায় কার্যক্রম চালু করবে স্টেশনগুলো। রেলওয়ে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানাগেছে এ তথ্য।
রেলপথ মন্ত্রী মো. মুজিবুল হক বলেন, লোকবল সংকটের কারণে দীর্ঘদিন থেকে এই রেলস্টেশনগুলো বন্ধ ছিলো। বন্ধ স্টেশনের মধ্যে প্রাথমিকভাবে ৬০ চালু করা হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে সকল বন্ধ স্টেশন চালু করা হবে। ৬০টি স্টেশনের জন্য ১২০জন স্টেশন ম্যানেজার নিয়োগ দেয়া হবে। পাশাপাশি নিয়োগ দেয়া হবে পয়েন্টম্যান, সুইপার। স্টেশন ম্যানেজার ১২ ঘন্টা করে রোস্টারিং পদ্ধতিতে দ্বায়িত্ব পালন করবেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ১৯৯১-৯২ সাল থেকে অপ্রয়োজনীয় মনে করে বিএনপি সরকার রেল স্টেশন পর্যায়ক্রমে বন্ধ করা শুরু হয়। এরপর দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় এসেই ২০০১ সাল থেকে বন্ধ করে দেয় রেলের জনবল নিয়োগ। তাছাড়া প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার লোকবল গোল্ডেন হেন্ডশেক দিয়ে বিদায় দেয়া হয় সেসময়। পাশাপাশি ছাঁটাই করা হয় বিপুল সংখ্যক কর্মচারী। ফলে ধীরে ধীরে ১৪০টি রেল স্টেশন বন্ধ হয়ে যায়। এতে এক দিকে যেমন যাত্রী দুর্ভোগ বেড়েছে, অন্য দিকে সরকারও বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে রেল বিভাগকে রক্ষা করতেই এ উদ্যোগ হাতে নেওয়া হয়েছে বলে রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
জানাগেছে, সারা দেশে রেল স্টেশন রয়েছে ৪৫৯টি। এর মধ্যে বন্ধ রয়েছে ১৪০টি। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ দেশের বিভিন্ন জেলাকে রেল নেটওয়ার্কের আওতায় আনার পরিকল্পনা নিলেও দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ এসব স্টেশন। এবার এগুলো চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। রেলওয়ে সূত্র জানায়, আগামী ১৬ মার্চ প্রথম দফায় ৬০টি বন্ধ স্টেশন চালু করা হবে। এদিন রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হক টঙ্গী-ভৈরব সেকশনের ঘোড়াশাল স্টেশনে উপস্থিত থেকে বন্ধ স্টেশনটি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করবেন। ওই দিন ঢাকা বিভাগের ২১টি, চট্টগ্রাম বিভাগের ১২টি, পাকশী বিভাগের ২৩টি এবং ৪টি স্টেশন চালু করা হবে। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে বন্ধ থাকা বাকি স্টেশনগুলো চালু করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।
প্রথম দফায় চালু হওয়া স্টেশনগুলো হলো, ঘোড়াশাল, আমীরগঞ্জ, শ্রীনিধি, ভাওয়াল গাজীপুর, সাতখামাইর, ধলা, উমেদ নগর, পিয়ারপুর, কেন্দুয়া বাজার, ভূয়াপুর, বিস্কা, সোহাগী, নান্দাইল রোড, কালিকাপ্রসাদ, ঠাকুরকোনা, বারহাট্টা, শাহাজীবাজার, মুকুন্দপুর, সাতগাঁও, লংলা বরমচাল, মুহুরীগঞ্জ, ফাজিলপুর, শর্শদী, নাওটী, ময়নামতি, দৌলতগঞ্জ, খিলা, নাথেরপেটুয়া, বজরা, শাহাতলী, সরকারহাট, ঝাউতলা, ফুলতলা, রূপদিয়া, মেহেরুল্লানগর, সফদারপুর, আনসারবাড়ীয়া, মিরপুর, পাকশী, আজিমনগর, মাধনগর, রানীনগর, হিলি, ভাবানীপুর, ডোমার, কাঁকনহাট, নাচোল, বেনাপোল, কুমারখালী, খোকসা, পাংশা, পাঁচুরিয়া জংশন, আমিরাবাদ, ফরিদপুর, মধুখালী জংশন, আলতাফনগর, ভেলুরপাড়া, মহিমাগঞ্জ ও অন্নদা নগর।
এ ব্যাপারে রেল সচিব ফিরোজ সালাহউদ্দীন বলেন, প্রাথমিকভাবে ৬০টি বন্ধ স্টেশন চালু করা হলেও পর্যায়ক্রমে সব স্টেশন চালু হবে। তবে জনবল সংকটের কারণে স্টেশনগুলো চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। আমাদের সময়.কম