খােলা বাজার২৪।। বুধবার, ৮ মার্চ ২০১৭: জয়পুরহাট জেল সুপার কাওয়ালিন নাহার একজন সফল ও সাবলম্বি নারী বলে সুপরিিিচতি লাভ করেছেন ইতোমধ্যেই।
জানা গেছে, জেল সুপার কাওয়ালীন নাহার পাবনার সাথিয়া উপজেলার বেড়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯৮৩ সালে তিনি জন্ম গ্রহন করেন। বাবা আলহাজ্ব আব্দুল করিম বিআইডব্লিউটি এর সাব-এ্যাসিসটেন্ট ইঞ্জিনিয়ার, আর মা মিসেস হোসনে আরা করিম গৃহিনী।
৩০ তম ব্যাচে বিসিএস পাশ করে জেল সুপার হিসাবে কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে ২০১২ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর যোগদান করেন, তারপর তিনি জয়পুরহাট জেলা কারাগারে বদলী হন ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। এর মধ্যে ২০১৩ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন কৃষিবিদ সিরাজুল ইসলাম সাজু নামের একজন কৃষি কর্মকর্তার সাথে এবং ইতোমধ্যে একটি কন্যা সন্তানেরও জন্ম দেন এই দম্পতি। চাকুরী জীবনের অভিজ্ঞতা বর্ননা করতে গিয়ে তিনি বলেন, প্রথম অবস্থায় চাকুরী করতে গিয়ে তিনি প্রথম দিকে কিছুটা হলেও বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পরেন। কারণ হিসাবে উল্লেখ করেন, ‘অপরাধীদের নিয়ে চাকুরি করতে, কথন কি হয়, এসব আর কি। তারপর আবারো পরিবারের অনুপ্রেরনা আর উৎসাহে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।’
জয়পুরহাটের এই নারী জেল সুপারের কৃতিত্বের সাক্ষ্য দেন অনেক কয়েদীই। জেলা শহরের বিশ্বাসপাড়া রেল বস্তির এলাকার গোলাম মোস্তফার এক সময়ের মাদকাসক্ত ছেলে রতন মিয়া, জেলার পাঁচবিবি উপজেলার শাইলট্টি গ্রামের নূরুল ইসলাম, নিলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার পাটোয়ারীপাড়া গ্রামের মুমিনুর আজাদ, ঢাকা কামরাঙ্গির চর এলাকার নবেল হোসেনসহ অনেক কয়েদী জানান, জেল সুপার কাওয়ালীন স্যারের ত্বত্তাবধানে জয়পুরহাট জেলা কারাগারে এখন সেলাই, পাট দিয়ে দড়ি তৈরী, বাঁশ ও বেতের তৈরী ঘর-গৃহস্থালীর সামগ্রী, টাইলসসহ রাজমিস্ত্রির কাজসহ যেসব হস্তশিল্পের প্রশিক্ষন দেওয়া হচ্ছে তা পূর্ণবাসনে যথেষ্ট সহায়ক হবে। এসব কাজ শিখে বাড়িতে গিয়ে আত্মকর্ম সংস্থানের পথ উন্মুক্ত হয়েছে। ফলে জয়পুরহাট জেল থেকে বের হয়ে অধিকাংশই স্বাভাবিক ও সুস্থ জীবনে ফিরে গেছেন।
জয়পুরহাট জেল পরিদর্শন কমিটির সদস্য সাবেক সদর উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান আসমা খাতুন জানান, জেল সুপার কাওয়ালীন আপা কয়েদীদের জন্য খাদ্য তালিকার সুষ্ঠু বন্টন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষনসহ বিভিন্ন ইতিবাচক কর্মকান্ড করে যাচ্ছেন যা, ইতোপূর্বে আর কখনো দেখা যায়নি।
জয়পুরহাট জেলা প্রশাসক আব্দুর রহিম বলেন, সার্বিক অর্থে কাওয়ালীন একজন সৎ ও সফল কর্মকর্তা, একজন ভালো গৃহিনী ও আদর্শ মা। কাওয়ালীনের দৃষ্টান্ত অনুস্মরন করে আরো নারীরা দেশ সেবাই এগিয়ে আসবেন, এমনটাও বিশ্বাস করেন জেলা প্রশাসক।