Mon. Jun 16th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

52খােলা বাজার২৪।। শুক্রবার, ১০ মার্চ ২০১৭: দুর্নীতির কেলেঙ্কারির জেরে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট পার্ক জিউন হাইকে দেশটির সাংবিধানিক আদালত বরখাস্ত করার খবর ইতিমধ্যেই অনেকেই জেনে গেছেন।কিন্তু বিচিত্র একটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই তার দুর্নীতির এই খবরটি জনসম্মুখে প্রকাশিত হতে শুরু করে। আর এই ঘটনার নেপথ্যে ছিল ছোট্ট একটি কুকুর ছানা।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পার্ক জিউন হাই মূলত বান্ধবী চোই সুন-সিলের কারণেই ফেঁসে যান। চোই সুন সিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল প্রেসিডেন্টের বান্ধবী হওয়ার সুযোগে তিনি বিভিন্ন অন্যায় সুযোগ লাভ করেছিলেন এবং অনেক প্রতিষ্ঠান থেকেই অর্থ গ্রহণ করেছিলেন।

প্রভাবশালী চোই সুন-সিলের কথিত প্রেমিক সাবেক ফেন্সিং তারকা কো ইয়ং তাই এর সঙ্গে কুকুর নিয়ে একটি ঝগড়ার পর থেকেই তার দুর্নীতির খবরগুলো ফাঁস হতে শুরু করে। কান টানলে যেমন মাথা আসে সেরকম চোই এর দুর্নীতির পাশাপাশি স্বয়ং প্রেসিডেন্টের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টিও সামনে চলে আসে।
যদিও ৪০ বছর বয়সি সুঠামদেহী কো’র সঙ্গে প্রেমের গুজবকে ৬০ বছর বয়স্ক চোই বরাবরই অস্বীকার করেছেন। বরং নিজেদের বন্ধু হিসেবেই পরিচয় দিতে তিনি ভালোবাসতেন। তাদের সেই কুকুর বিষয়ক ঝগড়ার বর্ণনা সাংবাদিকদের কাছে অপমানিত কো’ই দেন।
তিনি জানান, একদিন চোই তার মেয়ের পোষা কুকুরছানাটি দেখার দায়িত্ব দেন কো’কে। তিনি সেই কুকুরটি নিজের বাড়িতে রেখে গলফ খেলার জন্য চলে যান। কিন্তু বাড়ি ফেরার পর দেখেন চোই বসে আছেন। কুকুর ছানাকে একা ফেলে রাখার জন্য তিনি চরম ক্ষিপ্ত ছিলেন কো’র উপর। এরপর দুজনের মধ্যে বাক বিতন্ডার শুরু হয়। চোই তার কথিত প্রেমিককে গালাগালি করতে থাকেন।
ক্ষুব্ধ কো পরিশেষে সিদ্ধান্ত নেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে চোই’র সম্পর্কের বিষয়টি গণমাধ্যমের কাছে তিনি ফাঁস করে দিবেন। এরপর তিনি বিভিন্ন প্রমাণ সংগ্রহ করে তা স্থানীয় মিডিয়ার হাতে তুলে দেন।
উল্লেখ্য, এশিয়ান গেমসে ফেন্সিংয়ে স্বর্ণ পদক লাভ করেছিলেন কো। এরপর তিনি মেয়েদের পোশাক ও হাতব্যাগ তৈরির একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। ভিলোমিলো নামের সেই কোম্পানির সূত্র ধরেই চোই সুন সিলের সঙ্গে তার পরিচয় ঘটে। তার কোম্পানি থেকে চোই’র মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের পোশাকও সরবরাহ করা হয়।
গত অক্টোবরে কো টিভিতে একটি সাক্ষাৎকারে পার্ক জিউন হাইয়ের সঙ্গে চোই সুন সিলের সম্পর্কের বিষয়ে মুখ খুলেন। এরপর ব্যাপক তদন্ত শুরু হয়। জনগণও প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। প্রাথমিক পর্যায়ে জিউন হাই এসব বিষয় অস্বীকার করলেও পরবর্তীকালে তিনি সবকিছু স্বীকার করে নিতে বাধ্য হন। তবে তিনি জানান, সরকারি কাজে তার বান্ধবীকে নাক গলানোর সুযোগ দিলেও তিনি নিজে কোনো দুর্নীতি করেননি।
অবশেষে শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়ার সাংবিধানিক আদালতের রায়ে প্রেসিডেন্ট পার্ক জিউন হাই বরখাস্ত হন।