Fri. Mar 14th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

19kখােলা বাজার২৪।। সোমবার, ১৩ মার্চ ২০১৭: বিশ্বব্যাংকের সাবেক বহিঃবিভাগীয় কর্মকর্তা ইসমত জেরিন খানের চাকরিচ্যুতির আদেশ অবৈধ ঘোষণা করেছে হাইকোর্ট। একইসঙ্গে নিম্ন আদালতের দেয়া আদেশও বহাল রাখা হয়েছে। বিচারপতি বোরহান উদ্দিনের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার এই রায় দেন। রায়ে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাংক দায়মুক্তি পেতে পারে না।

আদালতে আজ বিশ্বব্যাংকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এবং ইসমত জেরিন খানের পক্ষে শুনানি করেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এজে মোহাম্মদ আলী। তাকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট রুবাইয়াত হোসেন।

অ্যাডভোকেট রুবাইয়াত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা একটা ঐতিহাসিক রায়। বিশ্বব্যাংক জবাবদিহিতা ও আইনের ঊর্ধ্বে নয়। বাংলাদেশি কোন নাগরিক এই প্রথম বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলা করে একটা রায় পেয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, এখানে চাকরিচ্যুতি অবৈধ ঘোষণা এটা একটা ইস্যু। এছাড়া দায়মুক্তি একটা ইস্যু। বিশ্বব্যাংক দায়মুক্তি পেতে পারে না-এ রায়ের মাধ্যমে তা প্রমাণিত হয়েছে। এখন যে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে মামলা করতে পারবে।’

জানা যায়, ২০০১ সালে ইসমত জেরিন খানকে বেআইনিভাবে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস থেকে চাকুরিচ্যুত করা হয়। চাকরিচুত্যির ক্ষেত্রে যেসব আইনি বিধান অনুসরণ করার কথা ছিল সেটা করেনি। এ কারণে তিনি প্রথমে বিশ্বব্যাংকের নিজস্ব ট্রাইব্যুনালে আবেদন করলেও সুবিচার না পেয়ে ঢাকার একটি বিচারিক আদালতে মামলা করেন। এরপর ১৪ বার সমন দেয়া হলেও আদালতে হাজির না হয়ে বিশ্বব্যাংক জানায়, আইনে দায়মুক্তি থাকার কারণে এ মামলা চলতে পারে না। পরে মামলা দায়েরের সাত মাস পরে ২০০২ সালের মার্চ মাসে বিশ্বব্যাংক কর্তৃপক্ষ প্রথমে আদালতের মুখোমুখি হন।

রুবাইয়াত হোসেন বলেন, বিচারিক আদালতে মামলার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাংক হাইকোর্টে ও আপিল বিভাগে যায়। পরে আপিল বিভাগ বলে দেন, বিচারিক আদালতে বিচার হতে পারে। ওই সময় বাংলাদেশের স্থানীয় আদালতে যাতে কেউ মামলা করতে না পারে সেই দায়মুক্তির জন্য বিশ্বব্যাংক কর্তৃপক্ষ একটি স্থায়ী চুক্তি করার জন্য সরকারকে চাপ দিতে থাকে। পরে বিশ্বব্যাংককে দায়মুক্তি দেয়ার বিরুদ্ধে সমাজের বিভিন্ন স্তরে আন্দোলন শুরু হয়। তখন বাংলাদেশ সরকার বিশ্বব্যাংককে দায়মুক্তি পাবে না বলে জানিয়ে দেয়।

পরবর্তীতে আপিলের বিভাগের আদেশ অনুযায়ী ২০০৬ সালের মার্চ মাসে বিশ্বব্যাংক কর্তৃপক্ষ প্রথম বিচারিক আদালতে লিখিত বক্তব্য দাখিল করেন। পরে বিচারিক আদালতে বিচার শেষে ইসমত জেরিন তার পক্ষে ডিক্রি পান। পরে বিচারিক আদালতেই আপিল করে বিশ্বব্যাংক। ২০১০ সালে অধস্তন আদালতে আপিলেও বিশ্বব্যাংক হেরে যায়। এরপর বিশ্বব্যাংক কর্তৃপক্ষ হাইকোর্টে সিভিল রিভিশন আবেদন করেন। রোববার শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট বিশ্বব্যাংকের ওই আবেদন খারিজ করে রায় দেন।