Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

75খােলা বাজার২৪।। মঙ্গলবার, ১৪ মার্চ ২০১৭: ঢাকা-কলম্বো মিলে কাল ভালোই জমে উঠেছিল ‘মাহমুদউল্লাহ নাটক’। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানের সংবাদ সম্মেলনও যার শেষ দৃশ্য টানতে পারেনি। মাহমুদউল্লাহ দেশে ফিরছেন না এবং মাহমুদউল্লাহ দেশে ফিরছেন—সংবাদ সম্মেলন থেকে শোনা গেল দুই রকম কথাই।
কাল সকালে কলম্বোতে দলের ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান, মাহমুদউল্লাহ দেশে ফিরে যাচ্ছেন। বিকেলে ধানমন্ডিতে তাঁর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই কথা শুনে বোর্ড সভাপতির বিস্ময়, ‘কারও সঙ্গে কথা না বলে বলতে পারছি না সুজন (খালেদ মাহমুদ) কেন এ রকম বলেছে। রিয়াদই (মাহমুদউল্লাহ) বলেছে যে “আমি চলে যাই”, নাকি ও বলেছে, সেটা জানতে হবে। আমার সঙ্গে আলাপ না করে একটা খেলোয়াড়কে ওদের বলার কথা নয় যে “তুমি চলে যাও”।’

বিসিবি সভাপতির বিস্ময় আছে আরও। সেটা মূলত গল টেস্টের ব্যাটিং নিয়ে, ‘আমাদের শট সিলেকশন তো খুবই বাজে। শট দেখে মনে হয় আমরা টেস্টেও ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টির স্টাইলে খেলতে চাচ্ছি। ডিফেন্স করার জন্য যে খেলা, আমরা মনে হয় তা ভুলেই গেছি!’
নিউজিল্যান্ড, ভারত এবং শ্রীলঙ্কা সফর মিলে টানা চার টেস্টে হেরেছে বাংলাদেশ দল। বোর্ড সভাপতির হিসেবে এর অন্তত তিনটি ড্র হওয়া উচিত ছিল, ‘শ্রীলঙ্কার ফ্ল্যাট উইকেটে এক দিন ব্যাট করতে পারব না! নিউজিল্যান্ডে খেলেছি, ভারতে স্পিন খেলে এসেছি, এখানে খেলতেই পারব না, এটা হওয়ার কথা না। সমস্যা তাই আছে। এটা বের করতে হবে।’
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারের ধরনকে ‘হতাশাজনক’ মন্তব্য করে নাজমুল হাসান যোগ করেছেন, ‘যে রকম হচ্ছে আমাদের, এ রকম ব্যাটিং-বোলিং করলে কারও সঙ্গে জেতার কথা নয়।’ এখন থেকে তাই একটু কঠিন মনোভাব দেখানোরই আভাস তাঁর কথায়, ‘হঠাৎ একটা টেস্ট ভালো খেললে বা কেউ ব্যক্তিগতভাবে খেললে তো খুশি হয়ে বসে থাকলে চলবে না। দলের কথা, দেশের কথা ভাবতে হবে। কিছু সিদ্ধান্ত আমাদের নিতে হবে। চুপচাপ বসে থাকার কারণ নেই।’
প্রসঙ্গত, কোচের জবাবদিহির প্রসঙ্গও এসেছে। চন্ডিকা হাথুরুসিংহে একজন ব্যাটিং বিশেষজ্ঞ। সঙ্গে ব্যাটিং কোচ হিসেবে আছেন আরেক শ্রীলঙ্কান থিলান সামারাবীরা। ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার দায় কি তাঁদের ওপরও বর্তায় না? বিসিবি সভাপতি একমত নন এর সঙ্গে, ‘কোচ তো এভাবে খেলতে বলেননি। আমরা বলেছি এভাবে খেলতে? বলিনি…এভাবে খেলে আউট হতে বলব! তামিম, সাকিবদের কি বলে বোঝাতে হবে? সেই বয়স আছে? নতুনদের এসব বলা যায়। টেস্টে যে বল মারারই দরকার নাই, সেটা খেলে আমরা আউট হচ্ছি। টেকনিকের চেয়ে সমস্যাটা বেশি মানসিক। টেকনিকে কারও ঘাটতি নেই।’ বোর্ড সভাপতির মতে, দলের কোনো পরিকল্পনা কাজে না লাগলে তখন কোচকে ধরা যায়। কেউ বাজে শট খেললে বা ভালো বোলিং না করলে সেটার দায় তো আর কোচের নয়!
দল নির্বাচন প্রক্রিয়া নির্ঝঞ্ঝাট করতে হাথুরুসিংহেকে এর সঙ্গে সম্পৃক্ত করেছে বোর্ড। নাজমুল হাসানের আশা ছিল, এতে দল নির্বাচনে আর তাঁকে হস্তক্ষেপ করতে হবে না। কিন্তু মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে সর্বশেষ নাটকে পরিষ্কার, বোর্ড সভাপতির হস্তক্ষেপ তাতে এখনো ভালোভাবেই আছে। তবে নাজমুল হাসানের দাবি উল্টো, ‘নির্বাচকেরা ১৫-১৬ জনের দল তৈরি করেন। ওই তালিকা আমার কাছে আসে। আমি অনুমোদন করি। এটা আগেও ছিল, এখনো আছে। এখন কোচের মাধ্যমে আসুক বা আলাপ করে আসুক, এটা ব্যাপার নয়। একাদশ কোচ ও অধিনায়ক আলাপ করে নির্বাচন করেন। বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় অধিনায়ককে। যদি এদের মধ্যে বড় মতভেদ দেখি, তাহলেই আমি হস্তক্ষেপ করি।’
ভবিষ্যতে তিন সংস্করণের ক্রিকেটের জন্য আলাদা দল গড়ার কথা বলেছেন সভাপতি। তবে সে ক্ষেত্রে কিছু চেহারার ভিড় সব দলেই থাকবে, ‘আমূল পরিবর্তনের সুযোগ নেই। একটা জিনিস মনে রাখতে হবে—তামিম, সাকিব, মুশফিক, রিয়াদ (মাহমুদউল্লাহ), এরা আমাদের গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার। ওরা পারফর্ম করুক আর না করুক, এটা অস্বীকার করার উপায় নেই।