খােলা বাজার২৪।। বুধবার, ১৫মার্চ ২০১৭: লিটন দাস ছিটকে পড়ায় একাদশ তৈরির কাজ আরও কঠিন হয়ে গেল টিম ম্যানেজমেন্টের জন্য। মুশফিক মনে মনে খুশি হলেও একটা বড় ধরনের ঝামেলা কিন্তু পাকালো। এমনিতেই একাদশ সাজাতে হিমসিম খাচ্ছিলেন কোচ ও ক্যাপ্টেন। মাহমুদউল্লাহর জায়গায় কাকে খেলানো হবে? মুমিনুল থাকবেন কি থাকবেন না?
গলে খেলা তিন পেসারের মধ্য থেকে একজনকে ছেঁটে ফেলে বাড়তি স্পিনার হিসেবে তাইজুলের অন্তর্ভুক্তি ঘটবে কি না- মঙ্গলবার সারাদিন কলম্বোয় আসা বাংলাদেশের সাংবাদিকদের মাঝে গুঞ্জন। অবশ্য বিকেল গড়ানোর আগে পি সারায় নেট শুরুর পর একটা বিষয় মোটামুটি পরিষ্কার হয়ে গেলো, মনে হলো মমিনুল থাকছেন না।
কারণ ব্যাটিং অর্ডার অনুযায়ী প্রথম চারজনের মধ্যে নেটে যাবার কথা মমিনুলের; কিন্তু তার বদলে শেষ মুহুর্তে দলে আসা ইমরুল কায়েস, অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম ও মেহেদী হাসান মিরাজের সাথে শুরুতেই প্যাড পরে তৈরি মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।
আর মুমিনুলের পড়নে প্যাড ও হাতে ব্যাটিং গ্লাভসের বদলে দেখা গেল বল। প্রথমে সেন্টার উইকেটে তামিমকে নক করানোর সময় আর পরে নেটেও মুমিনুল বোলারের ভুমিকায়। নেটে ব্যাটিং করার সিরিয়াল দেখে মনে হয় মাহমুদউল্লাহর জায়গায়, মানে ছয় নম্বরে খেলানো হচ্ছে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে। অথ্যাৎ, শততম টেস্টে অভিষেক হতে যাচ্ছে একজনের!
যদিও লিটন দাস আহত হয়ে বাইরে চলে যাওয়ায় টিম কম্বিনেশ তৈরিতে বড় বাধা সৃষ্টি হলো। প্রশ্ন হলো, ‘একাদশ কী চূড়ান্ত?’ লিটন দাস ইনজুরিরর কারণে খেলতে পারবেন না। মুশফিক কিপিং করবেন। তাহলে একাদশের রুপরেখা কেমন হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে ম্যানেজার খালেদ মাহমুদের কথা, ‘আসলে কাল সকালে উইকেট দেখে একাদশ চূড়ান্ত হবে। এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।’
তবে ম্যানেজারের কথায় একটা ইঙ্গিত মিলেছে, মুমিনুলের খেলার সম্ভাবনা কম; কিন্তু লিটন দাস বাদ পড়ায় এখন সে সম্ভাবনা আবার নতুন করে জেগেছে। কারণ, নেটে ব্যাটিংয়ের সিরিয়াল পরিষ্কার জানান দিচ্ছে, তামিম ইকবালের সাথে ওপেন করবেন ইমরুল কায়েস।
সে ক্ষেত্রে মুুমিনুলকে বাইরে রেখে সৌম্য সরকারকে তিন নম্বরে খেলানোর চিন্তা হয়ত হচ্ছিল। কিংবা তামিম-সৌম্য জুটি ঠিক রেখে মুমিনুলের জায়গায় ইমরুলকে সেট করার কথাও ভাবা হতে পারে।
তারপরের ব্যাটিং পজিশনগুলো মুশফিক, সাকিব, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত আর লিটন দাসকে দিয়ে পুরণের চিন্তাও নিশ্চয়ই ছিল; কিন্তু লিটন বুকের ইনজুরিতে মাঠের বাইরে ছিটকে পড়ায় একজন ব্যাটসম্যান কমে গেল। এখন মুমিনুলকে বাদ দিলে ব্যাটসম্যান আরও কমবে। সে ক্ষেত্রে মুমিনুলের ভাগ্য খুলে যেতে পারে।
শেষ মুহুর্তে তার দলভুক্তির সম্ভাবনা আছে। কারণ মুুমিনুল খেললেই সাত ব্যাটসম্যান হয়। লিটন দাস নেই। তারওপর মুমিনুলকে বাদ দিলে ব্যাটিং লাইনআপ দাঁড়ায় এমন- তামিম, ইমরুল, কিংবা সৌম্য। এদের তিনজনকে নিয়ে তিন টপ অর্ডার। এরপর চারে মুশফিক। পাঁচে সাকিব। ছয় নম্বরে মোসাদ্দেক।
এখন সাতে যদি মিরাজকে খেলানো হয়, তাহলে বাকি চারজন শুধুই বোলার হয়ে যায়। তখন সাকিব ও মিরাজকে ধরে ২+৪ = ৬ বোলার হয়ে যাবে। সেটা নিশ্চয়ই হবে না। এখন একটাই সমাধান হতে পারে। হয় মুুমিনুলকে রেখে দেয়া। না হয় সাব্বির রহমান রুম্মনকে নেয়া।
তবে টেস্টের অভিজ্ঞতা ও কার্যকরিতা চিন্তা করলে মুমিনুলের কথার সম্ভাবনাই বেশি। এদিকে তিন না দুই পেসার? তা নিয়েও আছে দ্বিধা-দ্ব›দ্ব। আজ মাঠের মাঝখানে পেসারদের স্পট বোলিং প্র্যাকটিসের সময় ম্যানেজার ও সাবেক মিডিয়াম পেসার খালেদ মাহমুদ সুজনও ছিলেন।
এখন গলের মত কলম্বোয়ও তাসকিন, মোস্তাাফিজ আর শুভাশিসকেই খেলানো হবে? না একজন বাড়তি স্পিনারের কোটায় তাইজুলের অন্তর্ভুক্তি ঘটবে? নাকি তিন পেসারের একজনকে বাদ দিয়ে রুবেল-কামরুল ইসলাম রাব্বির কেউ ঢুকবেন?
সব সম্ভাবনাই আছে। শেষ পর্যন্ত কার ভাগ্য খুলবে, সেটাই দেখার বিষয়!