খােলা বাজার২৪।। শুক্রবার, ১৭ মার্চ ২০১৭: শেরপুরের সীমান্ত অঞ্চলের আদিবাসী ও দরিদ্র জনগোষ্ঠী আয়ের অন্যতম উৎস ছিল হস্তশিল্প, তাঁত শিল্প ও কুটির শিল্প। কিন্তু পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে আজ তাঁত শিল্প, হস্তশিল্প ও কুটির শিল্পের কর্মকান্ডগুলি বিলুপ্তির পথে প্রায়। যুগ যুগ ধরে এ অঞ্চলের আদিবাসী ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীরা হস্তশিল্প, তাঁত শিল্প ও কুটির শিল্পের মাধ্যমে নানা জাতের সামগ্রী তৈরী করে নিজেরা ব্যবহার করত এবং বাজারজাত করে দেশের অভ্যন্তরীন চাহিদা মিটাতে যোগান্তকারী অবদান রেখে আসছিল। কিন্তু বর্তমান সময়ে নানা প্রতিকুলতার কারণে এখন আর তাদের ঐহিত্যবাহী হস্তশিল্পের নানা কারুকার্য্যরে সামগ্রী তৈরী করতে পারছে না। আদিবাসীদের হস্ত শিল্পের মাধ্যমে তৈরী হত তাঁতের তৈরী নানা ধরণের বাহারী ডিজাইনের কাপড়। তাঁত শিল্পের মাধ্যমে তৈরী করত, বাহারী রকমের শাড়ী, লুঙ্গী, গামছা, তোয়ালে, ব্যাগ, চাঁদর ইত্যাদি তাঁতের সামগ্রী। তাঁতের তৈরী কাপড়ে ছিল নানা ধরনের আকর্ষণীয় বাহারী রঙয়ের বৈচিত্র কারিগরী নকশা করা বিভিন্ন রকমের পোষাক। এতে একদিকে যেমন আদিবাসী ও দরিদ্র হস্ত শিল্পীদের জীবন-জীবিকার আয়ের উৎস উন্মুক্ত ছিল। তেমনি দেশের পোষাক ও নানা ধরণের হস্ত শিল্পের বিভিন্ন আসবাবপত্র তৈরীতে বিশেষ অবদান। উল্লেখ্য, অত্র পাহাড়ী অঞ্চলে হস্তশিল্পের নানা সামগ্রী তৈরীর কাচাঁমাল সুলভ মূল্যে অত্রাঞ্চলে পাওয়া যেত। ধীরে ধীরে এই শিল্প বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অত্র সীমান্ত অঞ্চলের বহু আদিবাসী ও দরিদ্র শিল্পকর্মীরা বেকার হয়ে পড়েছে। কর্ম না থাকায় সংসারে অভাব অনটনের কারণে কর্মক্ষম ব্যক্তিরা কর্মের সন্ধানে ঢাকায় পাড়ি দিয়েছে। বয়স্ক ও কিশোর কিশোরীরা বাড়িতে বসে বেকার জীবন-যাপন করছে। তাদের কুটির শিল্পের মধ্যে ছিল, বেতের চেয়ার, মোরা, শীতল পাটি, মাছ ধরা পলো, খলই, কুলা, চালুন, সোফাসেট, টি-টেবিল, বই রাখার তাক, শিশু দোলনা, ধারাই, মুইনক্যা, টাল্লা ঘরের আসবাবসহ আরও নানা ধরণের প্রয়োজনীয় বাহারী নকশার জিনিসপত্র তৈরী করতো।
প্রকাশ থাকে যে, এই সমস্ত হস্তশিল্প, তাঁত শিল্প ও কুটির শিল্পগুলি পৃষ্ঠ পোশকতার অভাবেই এই সমস্ত হস্ত শিল্প, তাঁত শিল্প ও কুটির শিল্পগুলি আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে। তাই অত্র সীমান্ত অঞ্চলের আদিবাসী হস্তশিল্প, তাঁত শিল্প ও কুটির শিল্পের শিল্পীদের দাবী- যদি সরকারী ভাবে তাদেরকে সহায়তা দেওয়া হয়, তাহলে তারা আবারও তাদের হস্ত শিল্প, তাঁত শিল্পের ঐহিত্যবাহী নানা বৈচিত্রের সামগ্রী তৈরীতে আবারও মনোযোহী হয়ে উঠবে। এতে একদিকে যেমন বিলুপ্ত শিল্পের প্রাণ ফিরে পাবে, তেমনি বহু বেকার পরিবারের কর্মসংস্থানের পথ উন্মুক্ত হবে।