Fri. May 2nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

7kখােলা বাজার২৪।। শনিবার, ১৮ মার্চ ২০১৭: কুমিল্লা দক্ষিনাঞ্চলের লাকসাম, বরুড়া, নাঙ্গলকোট, সদরদক্ষিণ ও মনোহরগঞ্জ উপজেলা জুড়ে হরেক রকম সিন্ডিকেট আর ভেজাল ওষুধে ভরে গেছে গ্রামীন হাট-বাজার এবং স্বাস্থ্য সনদ বিহীন রমরমা ঔষধের ব্যবসায় প্রতারনার শিকার এ অঞ্চলের কয়েকলাখ মানুষ।

হাট-বাজারগুলোতে ব্যাঙের ছাতার মত প্রাইভেট ক্লিনিক ও যত্রতত্র ঔষধের দোকান গড়ে উঠেছে। তার মধ্যে ৯০ ভাগ ঔষধের দোকানের কোন বৈধ কাগজপত্র নেই। সরকারী স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলো বর্তমানে নিজেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত।ঔষধ সংকট, আধুনিক বা প্রযুক্তিগত চিকিৎসা সরঞ্জাম নেই। সংশ্লিষ্ট ঔষধ প্রশাসনে কতিপয় কর্মকর্তার মাসিক কমিশন বানিজ্যের কারনে গ্রাম-গঞ্জে ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চিকিৎসা সেবা ও মানসম্পন্ন ঔষধ। ইতিমধ্যে মানসম্পন্ন ঔষধ উৎপাদনে ব্যর্থ ২০ কোম্পানীর সব ঔষধ এবং ১৪টি কোম্পানীর এন্ট্রিবায়োটিক উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। ওই ৩৪ কোম্পানীর মধ্যে ১১ কোম্পানীর লাইসেন্স বর্তমান সরকার স¤প্রতি বাতিল করেছে। আবার গত ২৭ ফেব্র“য়ারী ২০১৭ আরও ২৮টি কোম্পানীর এন্টিবায়োটিক থায়রয়েড ও ক্যান্সার প্রতিশোধক ঔষধ উৎপাদন ও বিপনন আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ঔষধ প্রশাসন বন্ধের নির্দেশ দিলেও থামছে না ওইসব ঔষধ বাজারজাত করনের দৌরাত্ব। এ অঞ্চলে পল্লী চিকিৎসক সমিতি, ড্রাগিষ্ট এন্ড ক্যামিষ্ট সমিতি, ঔষধ দোকান মালিক সমিতিসহ রয়েছে হরেক রকম সাইনবোর্ড সর্বস্ব ঔষধ ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রনকারী সংস্থা। তারপরও এ অঞ্চলে হাতেগোনা কয়েকজন ফার্মাসিষ্ট, পল্লী চিকিৎসক, ডিপ্লোমাধারী চিকিৎসক ছাড়া বেশির ভাগই ঔষধ প্রশাসনের নিবন্ধনবিহীন শত শত ঔষধের দোকানে চলছে রমরমা ভেজাল ঔষধের বানিজ্যের নামে নৈরাজ্য।

সরকারী ঔষধ পরীক্ষাগারে জানুয়ারী-১৫ থেকে জুলাই-১৫ পর্যন্ত ৪২ হাজার ৮’শ৪৬ টি ঔষধের নমুনা পরীক্ষা করে ১’শ ৫৩টি ঔষধের নমুনায় মানসম্পন্নতা পাওয়া গেছে। দেশে প্রচলিত প্রায় ২৩ হাজার ঔষধের মধ্যে ১১৭টি নমুনার গুনাগুন, মান নির্নয় ও মূল্য নির্ধারনে সরকারের হস্তক্ষেপ রয়েছে। কিন্তু বাকী সবগুলো ঔষধের নিয়ন্ত্রন করছেন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। এছাড়া আটা-ময়দা- লবন ও চিনি মিশ্রিত নিম্নমানের এ্যাভিষ্ট্রো মাইসিন নামক দ্রব্য মিশিয়ে তৈরী হচ্ছে বিভিন্ন নামের এন্টিবায়োটিক টেবলেট ও সিরাপ।ওইসব ভেজাল এন্টিবায়োটিক ঔষধ সেবনে মানবদেহের জীবানু ধ্বংস তো দূরের কথা হতে পারে জীবনাশের ঝুকি। নন-ফেনিসিলিন, ফেনিসিলিন ও সেফালোষ্পোরিন সহ হরেক রকম গ্র“পের ওইসব ঔষধ গ্রামাঞ্চলের হাটে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে।

বিগত ২রা জুলাই ২০১৫ ঔষধ নিয়ন্ত্রন কমিটির ২৪৪তম সভায় বেশ ক’টি নামী-দামী ঔষধ কোম্পানীর ৫১টি ঔষধের রেজিষ্ট্রিশন বাতিল করে অবিলম্বে বাজার থেকে ওইসব নিষিদ্ধ ঔষধ তুলে নেয়ার নির্দেশ দিলেও তা আজও কার্যকর হয়নি। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত বিভিন্ন ল্যাবরোটরীতে দেশীয় উৎপাদিত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের এনার্জী ড্রিংকস্গুলোর নমুনা úরীক্ষায় বের হয়ে আসে লোমহর্ষক চিত্র। বেশির ভাগ কোল্ডড্রিংকস্ এ রয়েছে মাত্রাতিরিক্ত সোডিয়াম বেনজোয়েট, ইথানল, ক্যাপেইন ও বিষাক্ত সেগারিনসহ হরেক রকম রাসায়নিক দ্রব্য। অথচ সেগুলো পান করে মানুষের কিডনী, মস্তিস্ক ও মৃগীরোগের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে অন্তঃস্বত্তা মা- সন্তানসহ নানাহ জটিলরোগে আক্রান্তের ঝুঁকি। স্থাণীয় চিকিৎসক, পল্লী চিকিৎসক ও বিভিন্ন ঔষধ দোকানদারদের সাথে স্থানীয় সরকারি- বেসরকারী প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোর কমিশন বানিজ্য জমে উঠেছে।