Fri. May 2nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

10kখােলা বাজার২৪।। শনিবার, ১৮ মার্চ ২০১৭: জয়পুরহাট জেলার কৃষকেরা যে জমিতে এক সময় চাষ করত আখ, গম, পাট, সরিষা, এখন সে জমিতে চাষ করছে ভুট্টা। কৃষকরা ভুট্টা চাষের কথা এক সময় চিন্তাও করতে পারেনি। অথচ আগের সেই দৃশ্যপট পুরোটাই এখন পাল্টে গেছে। ভুট্টা এখন কম খরচে অধিক লাভজনক ফসল হওয়ায় দিন দিন জেলায় ভুট্টা চাষ ব্যপক হারে বেড়েছে।

জেলা সদরের কৃষক রেজাউল ইসলাম, আব্দুস সালাম, আফছার আলী বলেন ভুট্টা চাষে খরচ কম এবং বাজারে দামও ভালো। প্রতি বিঘা জমিতে দুই কেজি বীজ লাগে। প্রতি কেজি বীজের মূল্য ৩০০-৩৫০ টাকা। সার, সেচ, মজুরী, ভুট্টা মাড়াই ও ঔষুধসহ ৮-৯ হাজার টাকা বিঘায় খরচ হয়। বিঘা প্রতি ফলন পাওয়া যায় ৩৫-৪০ মণ পর্যন্ত। ভুট্টা শুকোনোর পরে তারা গত বছর ৮শ-৯শ টাকা মণ দরে বিক্রি করেছেন। এতে খরচ বাদে ১২-১৪ হাজার টাকা করে লাভ করেছেন।

ক্ষেতলাল উপজেলার কৃষক আল-আমীন বলেন, গত বছর পাঁচ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছিলেন। এবার তিনি ছয় বিঘা জমিতে হাইব্রিড জাতের ভুট্টা চাষ করেছেন। গত বছর তার বিঘাপ্রতি ফলন হয়েছিল ৩৮-৪০ মণ। ভুট্টা শুকিয়ে তিনি ৪শ টাকা মণ দরে বিক্রি করেছিলেন। তার এলাকায় ভুট্টা চাষ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। জয়পুরহাটে বিপুলসংখ্যক পোল্ট্রি খামাড় গড়ে ওঠায় এবং জেলায় পোল্ট্রি ফিডের কারখানা হওয়ায় ভুট্টার চাহিদা ব্যাপক হওয়ায় কৃষকরা আশানুরুপ দাম পেয়ে ভুট্টা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

জয়পুরহাট জেলায় এবার ভূট্টা চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ৫৪৪ হেঃ এখন পর্যন্ত লক্ষমাত্রা অর্জন হয়েছে ৩৯৬ হেঃ। বিগত ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে লক্ষমাত্রা অর্জিত হয়েছে ৪০৫ হেঃ, এবং লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিল ৩৪৪ হেঃ। এর মধ্যে জয়পুরহাট সদর উপজেলায় ১৬৫ হেক্টর, পাঁচবিবি উপজেলায় ১৯০ হেক্টর, ক্ষেতলাল উপজেলায় ০৬ হেক্টর এবং আক্কেলপুর উপজেলায় ৩৫ হেক্টর জমিতে ভূট্টা চাষ হয়েছে। সময়মত কৃষকদের অল্প মূল্যে বীজ-সার নিশ্চিত করা এবং সংরক্ষন ও বাজারজাত করা হলে জয়পুরহাট জেলার কৃষকদের মাঝে ভুট্টার চাষ ব্যপকভাবে বৃদ্ধি পাবে।

জয়পুরহাট জেলা কৃষি স¤প্রসারন অধিদপ্তর এর উপ-পরিচালক সুধেন্দ্রনাথ রায় বলেন জেলায় ১৯৯১-৯২ সাল থেকে হাতে গোনা কিছু সংখ্যক কৃষক পরীক্ষামূলকভাবে জমিতে ভুট্টা চাষ শুরু করেন। কৃষি বিভাগ বছরের পর বছর ধরে ভুট্টা চাষে চাষীদের আগ্রহ বৃদ্ধি ও ভুট্টার চাহিদা বহুবিধ ব্যবহার এবং জেলায় পোল্ট্রি শিল্পের প্রসার ঘটায় ভুট্টার চাহিদা বেড়েছে প্রচুর। জেলায় সাদা হল্যান্ড জাতের আগাম আলু বিক্রি করে ওই জমিতে ভুট্টার ফলসও করা হচ্ছে। ভুট্টা চাষে খরচ কম এবং হাইব্রিড জাতের ভুট্টার ফলনও ভাল। বাজারে প্রচুর চাহিদা থাকায় ভুট্টা বিক্রি করে কৃষকেরা প্রতি বিঘা জমি থেকে খরচ বাদে ৮-১০ হাজার টাকা লাভ করেছেন। কৃষকরা এখনও ভুট্টা লাগানো অব্যাহত রেখেছে। জেলায় চলতি মৌসুমে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৪৪ হেক্টর জমিতে, যা থেকে ভুট্টা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ হাজার ৬৩৫ মেঃটন।