খােলা বাজার২৪।। শনিবার, ১৮ মার্চ ২০১৭: দিনাজপুরের চাঞ্চল্যকর পীর ফরহাদ চৌধুরী ও তার মুরিদ পারুল বেগম হত্যা ঘটনায় ২ জন নিজেদের দোষ স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেছেন।
শুক্রবার রাতে দিনাজপুরের অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট এফএম আহসানুল হকের খাস কামরায় তার নিকট হত্যা ঘটনা স্বীকার করে ওই ২ জন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন।
দিনাজপুর কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক শহীদ সোহরাওয়ার্দী জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় বোচাগঞ্জ থানায় অফিসার্স ইনচার্জ এবং এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আরজু মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন এই চাঞ্চল্যকর মামলার গ্রেফতারকৃত আসামী নিহত ফরহাদ চৌধুরীর আধ্যাত্মিক গুরু কুড়িগ্রাম জেলার ভুরঙ্গামারী উপজেলার পাথরডুবি গ্রামের ইসাহাক আলী (৬৫) ও বোচাগঞ্জ উপজেলার দৌলা গ্রামের ফয়েজুল হকের পুত্র সাইদুর রহমান (৪৫) এর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী গ্রহণের জন্য আদালতে সোপর্দ করেন। বিচারক সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত তাদের জাবনবন্দী গ্রহণ করেন।
দিনাজপুরের পুলিশ সুপার মোঃ হামিদুল আলম শুক্রবার রাতেই সাংবাদিকদের সাথে এই চাঞ্চল্যকর হত্যা ঘটনায় সাফল্য নিয়ে মতবিনিময় করেন। তিনি বলেন, নিহত ফরহাদ হোসেন চৌধুরীকে তার আধ্যাত্মিক গুরু ইসাহাক আলীর নির্দেশে ভাড়াটিয়া খুনিরা হত্যা করেছে। ১২ মার্চ ইসাহাক আলীর দরবার শরিফ কুড়িগ্রাম জেলার ভুরঙ্গামারী উপজেলার পাথরডুবিতে ওরশ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। ওই দিন দিনাজপুর থেকে ২টি বাসে তার মুরিদেরা কুড়িগ্রাম গিয়েছিল। সেখানেই ফরহাদ চৌধুরীকে হত্যা করার বিষয়ে আলোচনা হয়। ১৩ মার্চ ইসাহাক আলীর নির্দেশে অপর আটক আসামী সাইদুর রহমানের সহায়তায় ৫ জন কিলার ফরহাদ হোসেন চৌধুরী প্রথমে বালিশ চাঁপা দিয়ে দুর্বল করেন এবং পরে গুলি করে হত্যা করে। ঘটনাটি দেখে ফেলায় তার পালিত কন্যা মুরিদ পারুল বেগমকেও একইভাবে গুলি করে হত্যা করে। এই হত্যা ঘটনায় ভাড়াটিয়া খুনিরা ওই এলাকারই দুস্কৃতিকারী। তাদের অর্থের বিনিময়ে এই খুনের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। তিনি জানান, স্বীকারোক্তিতে পীর ইসাহাক আলী বলেছেন, ফরহাদ চৌধুরী নামাজ-কালাম না পড়ে গান-বাজনা ও জিকির করার জন্য মুরিদদের বিপথগামী করায় তাকে অনেকবার এপথ থেকে সরে আসার জন্য বলা হয়। কিন্তু ফরহাদ তার আধ্যাত্মিক গুরুর নির্দেশ অমান্য করে দিনের পর দিন এধরনের অশালীন পদ্ধতিতে কথিত মুরিদদের নিয়ে ধর্মের অপব্যাখ্যা প্রচার করায় তাকে হত্যা করে দুনিয়া থেকে সরে দেয়া হয়েছে।
স্বীকারোক্তি প্রদানকারী ২ জনকে শুক্রবার রাতেই আদালত থেকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলার পালিয়ে থাকা ওই ৫ আসামীকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।