Thu. May 1st, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

7kখােলা বাজার২৪।। রবিবার, ১৯ মার্চ ২০১৭: সিপিডি’র সস্মানিত ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, দারিদ্র্য বিমোচনে ক্ষুদ্রঋণের বিরাট অবদান রয়েছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে ক্ষুদ্র ঋণগ্রহীতাদের দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি আয়বর্ধক কাজে সম্পৃক্ত করা হলে দারিদ্য বিমোচন টেকসই হবে। একইসাথে সরকারের নানা সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচী বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণও জরুরী।

গতকাল শনিবার (১৮ মার্চ) বিএফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত বিতর্ক অনুষ্ঠান ইউসিবি পাবলিক পার্লামেন্টে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

ড. মোস্তাফিজ আরো বলেন, ক্ষুদ্রঋণের বড় একটি সমস্যা হলো ঋণ গ্রহীতারা কেউ কেউ একটি সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ করতে গিয়ে আবার অন্য একটি সংগঠন থেকে ঋণ নিচ্ছে যা তাদেরকে দারিদ্রচক্রেই আবর্তিত রাখছে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ক্ষুদ্রঋণের সমস্যা দেখা গেলেও সামগ্রিকভাবে দারিদ্র বিমোচনে ক্ষুদ্রঋণের অবদান রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের ঋদ্রঋণ কর্মসূচীর মডেল অনুসরণ করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, দেশে এখনো দেড় কোটি লোক চরম দরিদ্র এবং তিন কোটি লোক দারিদ্র্য-সীমার নিচে বাস করছে। বর্তমানে জিডিপির ২.২% সামাজিক সুরক্ষা খাতে ব্যয় হলেও এই খাতে জিডিপি’র ৪% বরাদ্দ করা প্রয়োজন।

সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচীর উপকারভোগী নির্ধারণে কিছু অনিয়মের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, উন্নয়ন কর্মসূচী অন্তর্ভুক্তিমুলক না হলে সমাজে শ্রেনী বৈষম্য বাড়বে।

তিনি আরো বলেন, ৫০ লক্ষ মানুষকে ৩০ কেজি করে চাল দেয়া কর্মসূচীর ক্ষেত্রে যাদের পাওয়ার কথা তাদের কেউ কেউ অন্তর্ভুক্ত হন নি আবার যাদের পাওয়ার কথা নয় তাদের অনেকেই অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।

সভাপতির বক্ত্যবে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, দারিদ্র একটি অভিশাপ। এর থেকে মুক্তির লক্ষ্যে বাংলাদেশে ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থা নিয়ে জিও-এনজিওগুলো দীর্ঘদিন ধরে কাজ করলেও এর সফলতা ও ব্যর্থতা নিয়ে ভিন্নমূখী বক্তব্য পাওয়া যায়। অভিযোগ রয়েছে ক্ষুদ্রঋনের যাতাঁকলে পড়ে অনেক দরিদ্র মানুষ তাদের সহায়-সম্বল হারিয়ে পথে বসেছে। আবার অনেক দরিদ্র মানুষ ক্ষুদ্রঋণের উপকারভোগী হিসেবে ঘুরে দাঁড়ানোর চিত্রও রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, সরকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সুরক্ষার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচী নিয়ে কাজ করছে। এর মধ্যে বয়স্কভাতা, বিধবাভাতা, দুস্থ মহিলা ভাতা, কর্মজিবী ল্যাকটেকটিং মাদার কর্মসূচী, প্রতিবন্ধীভাতা, টিআর, কাবিখা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচীর উপকার ভোগী নির্ধারণে অস্বচ্ছতা, অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে এর বাস্তবায়নে বাঁধার সম্মুখিন হতে হচ্ছে। দেখা যায় দরিদ্র মানুষের পরিবর্তে অবস্থাসম্পন্ন লোকেরা সুবিধা ভোগীর তালিকায় স্থান পাচ্ছেন। স্থানীয় পর্যায়ে সামজিক সুরক্ষা খাতের তালিকা তৈরিতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারগনের প্রভাব থাকায় অনেক ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিবেচনা প্রাধান্য পাচ্ছে।

প্রতিযোগিতায় ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটিকে পরাজিত করে ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ ও সাংবাদিক দৌলত আক্তার মালা। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।