Fri. May 2nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

27kখােলা বাজার২৪।। বৃহস্পতিবার , ২৩ মার্চ ২০১৭: শরীয়তপুর পৌর এলাকার শান্তিনগরে ড্রেনেজ নির্মাণ করার নামে রাস্তা কেটে দীর্ঘদিন ফেলে রাখায় জনদুর্ভোগ বেড়ে চরম আকার ধারন করে অশান্তির সৃষ্টি হয়েছে। ড্রেনের ভিতর পরে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

মেয়র বলছেন, দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য বার বার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিককে লিখিতভাবে তাগিদ দেয়া হয়েছে। এরপর পরেও নিয়ম অনুযায়ী কাজ করতে বিলম্ব করলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেবেন।

শান্তি নগর এলাকাবাসি ও পৌরসভা সূত্রে জানাগেছে, শরীয়তপুর পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের শান্তিনগর এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য শরীয়তপুর পৌর কতৃপক্ষ শান্তি নগরের পুলিশ ভবন থেকে শুরু করে সদর উপজেলা ভূমি অফিস পর্যন্ত মেইন খালের সাথে সংযুক্ত করে ড্রেন নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যে ৮ কোটি ১৬ লাখ টাকার (একটি প্যাকেজে )দরপত্র আহবান করে। দরপত্রের নিম্ম দরদাতা হিসেবে ”মেসার্স পিই আরসিআরআইএমপি” জয়েন্ট বেঞ্চার নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে ৭ কোটি টাকায় গত ২৬ সেপ্টেম্বর কার্যাদেশ দেয়। উক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দীর্ঘ প্রায় ২ মাস যাবত পালং (শরীয়তপুর ) মডেল থানার দক্ষিন কর্নার পুলিশ ভবন থেকে শুরু করে সদর উপজেলা ভুমি অফিস পর্যন্ত রাস্তার পার্শ্বে ভ্যেকু মেশিন দিয়ে মাটি খনন করে খালের ন্যায় বিরাট গর্ত করে ফেলে রেখেছে। এরপর বৃষ্টির কারনে ঐ গর্তের ভিতর বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে করে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে ব্যবসা বাণিজ্যের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। কষ্ট হচ্ছে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের যাতায়তের খুবই অসুবিধা হচ্ছে। চরম ভোগান্তিতে পড়েছে জনসাধারন। ফলে এলাকায় শান্তির চেয়ে অশান্তি নেমে এসেছে।ড্রেন যেন মরন ফাদে পরিনত হয়েছে। গত ১৮ মার্চ শনিবার বিকেল অনুমান ৩ টায় শান্তিনগর এলাকায় বসবাসরত ডামুড্যা সিড্যা হাওলাদার বাড়ির আবুল কাসেম ছৈয়াল (৬০) বাসা থেকে পালং বাজারে আসার পথে হোচট খেয়ে ভক্তের বাড়ির মন্দিরের নিকট ড্রেনের পানিতে পড়ে গুরুতর আহত হয়। স্থানীয় লোকজন ও ব্যবসায়ীরা তাকে উদ্ধার করে রক্তাক্ত অবস্থায় শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করে। জরুরী ভিত্তিতে দুর্ভোগ থেকে উত্তরণ চায় শরীয়তপুর পৌরবাসি।

শরীয়তপুর পৌর এলাকার শান্তি নগরের বাসিন্দা শান্ত বলেন, দীর্ঘদিন যাবত ড্রেন নির্মানের নামে ভ্যেকু দিয়ে মাটি খনন করে ফেলে রাখায় জনদুর্ভোগ বেড়ে গেছে। গত শনিবার আবুল কাসেম ছৈয়াল নামে এক বৃদ্ধ ড্রেনে পড়ে মারা গেছে। আমরা এর থেকে উত্তরণ চাই।

পালং বাজারের ব্যবসায়ী আঃ হক বিপ্লব বলেন, ভক্তের বাড়ির নিকট ড্রেনের ভিতর পড়ে হৃদয়ের বাবা কাসেম ছৈয়াল গুরুতর আহত হয়। তাকে সদর হাসপাতালে নেয়ার পর ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করে।

হৃদয় ছৈয়াল বলেন, আমার বাবা বাসা থেকে পালং বাজারে আসার পথে ওষ্ঠা খেয়ে ড্রেনের পানিতে পড়ে গুরুতর আহত হয়। এরপর তাকে হাসপাতালে নেয়ার পর ডাক্তার মৃত ঘোষনা করে।

এ ব্যাপারে ”মেসার্স পিই আরসি আর আই এমপি” জয়েন্ট বেঞ্চার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিক কে বার বার ফোন করেও পাওয়া যায়নি।

শরীয়তপুর পৌরসভা নির্বাহী প্রকৌশলী লক্ষীকান্ত হালদারবলেন, শরীয়তপুর পৌর এলাকার শান্তি নগরের ড্রেন নির্মান কাজটা ধীরগতি। এ ব্যাপারে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিক কে লিখিত ভাবে ৩ বার তাগিদ দেয়া হয়েছে। এরপরেও দ্রত কাজ শেষ না করলে বিধিমত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শরীয়তপুর পৌরসভার সচিব মোঃ এনামূল হক বলেন ড্রেন করতে গিয়ে যাতে কোন নাগরিক দুভোর্গে না পড়ে এ জন্য ঠিকাদারকে ১০০ ফুট করে মাটি কেটে ড্রেনের কাজ শেষ করে পুনরায় ১০০ ফুট মাটি কাটতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু ঠিকাদার এক সাথে সব টুকু ড্রেনের মাটি কেটে ফেলে রাখার কারনে জনগনের দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত কাজ শেষ করতে লিখিত তাগিদ দেয়া হয়েছে।

শরীয়তপুর পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম কোতোয়াল বলেন, যাতে জনদুর্ভোগ না হয় সে জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য তিনবার লিখিত তাগিদ দেয়া হয়েছে। ড্রেনে পড়ে মানুষ মারা গেছে এটা আমার জানা নেই। তবে খুব শীঘ্রই কাজ শুরু করবে।