Fri. May 2nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

30kখােলা বাজার২৪।। বৃহস্পতিবার , ২৩ মার্চ ২০১৭: নরসিংদীতে সদর উপজেলার চিনিশপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ঘোড়াদিয়া এলাকার সরকারী-বেসরকারী সুবিধা বঞ্চিত সহায়-সম্বলহীণ ভাসমান দরিদ্র প্রতিবন্ধী পরিবার দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর যাবৎ অতীব-মানবেতর জীবন-যাপন করে আস্ছে। দারিদ্রতার কষাঘাতে জর্জড়িত ভাসমান প্রতিবন্ধী পরিবারটিকে বাচিঁয়ে রাখতে একমাত্র উপার্জনকারী প্রতিবন্ধী শিশু ইয়ামিনের মা মোসাঃ আনোয়ারা বেগম মানুষের বাসায়-বাসায় দিনের পর দিন খেটে সংসারের অথৈ-বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছে।

প্রতিবন্ধী শিশুটির পিতা শারীরীক কর্ম-অক্ষম মোঃ রফিকুল ইসলাম ভূইয়া পরিবারের বেহাল-দশা দূরীকরণে কোন প্রকার ভূমিকা না রাখতে পেরে পরিবারের প্রধান কর্তা ব্যক্তি হয়েও অসহায়ত্বের গ্লানি মাথায় নিয়ে অর্থোর্পাজনের কোন উপায় না পেয়ে প্রতিবন্ধী শিশুটি ও পরিবারের দারিদ্রতার চরমাবস্থা দূরীকরণে দ্রুতসম্ভব সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠাণসহ স্থানীয় ধর্নাঢ্য ব্যক্তিবর্গ এবং সমাজ-সেবীদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসার আবেদন জানিয়েছেন। কালের বিবর্তনে দীর্ঘ ১৬ বছর পূর্বে একই জেলার রায়পুরা উপজেলার রহিমাবাদ খামার এলাকার মরহুম সাদত আলী ভূইয়া’র পুত্র প্রতিবন্ধী ইয়ামিনের পিতা শারীরীক কর্ম-অক্ষম মোঃ রফিকুল ইসলাম ভূইয়া পৈতৃক ভিটে-মাটিসহ সহায়-সম্বল হারিয়ে সংসার চালনায় অর্থোপার্জনের কোন উপায়ন্তর খুঁজে না পেয়ে অবশেষে নরসিংদী শহরে এসে মহল্লায়-মহল্লায় বিভিন্ন মানুষের অ-ব্যবহৃত ভূমিতে সিমেন্টের খালি বস্তা ও পলিথিন দিয়ে অস্থায়ীভাবে মানবেতর জীবন-যাপন করে আসছে।

প্রতিবন্ধী ইয়ামিনের পিতা শারীরীক কর্ম-অক্ষম হওয়ায় তার মা মোসাঃ আনোয়ারা বেগম জীবিকা নির্বাহের তাগিদে মানুষের বাসায়-বাসায় আয়া-বুয়ার কাজ করে অর্জিত আয় দিয়ে কোন রকমে সংসার চালাতে থাকে। এরই মাঝে তাদের ঔরশে প্রথম পুত্র সন্তান হিসেবে জন্ম নেয় ইয়ামিন ভূইয়া। জন্ম লাভের বছর না পেরুতেই মাত্র ১০ মাস বয়সে শিশু ইয়ামিন আকস্মিক টাইফ-ওয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। প্রবল দারিদ্রতা আর অভাব-অনটনের সংসারে শিশু ইয়ামিনের পিতা-মাতা অর্থাভাবে তার সুচিকিৎসা করাতে ব্যর্থ হওয়ার এক পর্যায়ে শিশু ইয়ামিন অনাকাঙ্খিত টাইফ-ওয়েড জ্বরে আক্রান্তের ফলে দু’পা, মস্তিস্কের বিকৃতিসহ ডান হাতের কার্য-ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। এরই ধারাবাহিকতায় শিশু ইয়ামিন একজন সুস্থ-স্বাভাবিক মানব জীবন-যাপনে সম্পূর্ণরূপে অক্ষম হয়ে পড়ে। যার ফলে তাকে অতিকষ্টে হামাগুড়ি দিয়ে চলতে হয়। অনাকাঙ্খিত টাইফ-ওয়েড জ্বরে মস্তিস্কের বিকৃতি ঘটায় স্বাভাবিক চলাফেরা, কথা-বার্তা, কাজ-কর্মসহ লেখাপড়া থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়ে। বর্তমানে সে একজন প্রতিবন্ধী শিশু হিসেবে জীবন-যাপন করছে। তার বর্তমান রয়স প্রায় ১৬ বছর।

অপরদিকে প্রতিবন্ধী শিশু ইয়ামিনের জন্ম লাভের ৪ বছরের মাথায় তাদের ঔরশে মোঃ স্বাধীন ভূইয়া (১২) নামে আরেকটি পুত্র সন্তান জন্ম নেয়।শারীরীক কর্ম-অক্ষম সহায়-সম্বলহীণ ভাসমান দরিদ্র প্রতিবন্ধী শিশুটির পিতা-মাতা কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, সহায় সম্বল হারিয়ে আজ আমরা পথের ভিখারী মাথা-গোজার ঠাইটুকুও নাই। মানুষের বাসায়-বাসায় আয়া-বুয়ার কাজ করে কোন রকমে মানবেতর জীবন-যাপন করছি। দারিদ্রতা ও অভাব অনটনের মাঝে সংসারে শত কষ্ট করলেও প্রথম সন্তান ইয়ামিন’র জন্মলাভে পিতা-মাতা হিসেবে আমরা আনন্দিত হয়েছিলাম। পরবর্তীতে অনাকাঙ্খিত টাইফ-ওয়েড জ্বরে আমাদের সকল আশা-আকাঙ্খা মাটি হয়ে যায়। কপাল-পুরা এ সংসারে আমরা সরকারী-বেসরকারী কোন সুযোগ-সুবিধা পাই নাই। বর্তমানে আমরা দক্ষিণ ঘোড়াদিয়া এলাকার এড. মমতাজ বেগম’র অব্যবহৃত পতিত ভিটা-বাড়ীতে সিমেন্টের খালি বস্তা ও পলিথিন দিয়ে অস্থায়ীভাবে মানবেতর জীবন-যাপন করছি।

এমতাবস্থায় পরিবারের দারিদ্রতার দূরাবস্থা দূরীকরণে দ্রুতসম্ভব সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠাণসহ স্থানীয় ধর্নাঢ্য ব্যক্তিবর্গ এবং সমাজ-সেবীদের সহযোগিতা পেলে আমাদের প্রতিবন্ধী শিশুটির সু-চিকিৎসাসহ সংসারের অভাব-অনটন ঘোচাতে ন্যূনতম স্বচ্ছলতা ফিরে পেতাম। মানবেতর জীবন-যাপনকারী সহায়-সম্বলহীণ ভাসমান দরিদ্র প্রতিবন্ধী পরিবারটিকে রক্ষায় সচেতনমহলসহ বর্তমান সরকারের যুগান্তকারী নানামূখী উন্নয়ন ও সেবাধর্মী প্রকল্পাধীন সহায়তা অপরিহার্য।