খােলা বাজার২৪।। বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ ২০১৭: শেরপুর জেলার সিংহভাগ লোক কৃষি ফসলের উপর নির্ভরশীল। তাই অত্রাঞ্চলের অধিকাংশ লোক কৃষি ফসল উৎপাদন করে তাদের জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও শেরপুর জেলায় প্রচুর পরিমানে বোরো ফসল চাষাবাদ করা হয়েছে। মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবং ধানের বাজার ভাল থাকায় কৃষকরা লক্ষমাত্রার চেয়ে বেশী জমি বোরো চাষ করেছে। কিন্তু বৈরী আবহাওয়া কারণে কৃষকদের রোপনকৃত বোরো ফসল প্রতিনিয়ত ভারী বর্ষণের কারণে নিম্নাঞ্চলের বোরো ফসলি জমিগুলি তলিয়ে যেতে শুরু করেছে। এতে কৃষকদের মাঝে হতাশা ও আতংকের মধ্যে পড়েছে। যদি আরও ভারী বর্ষন ও পাহাড়ী ঢল হয়, তাহলে বোরো ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হবে। উল্লেখ্য, গত ৭দিনের অসময়ের কাল বৈশাখী ঝড়-তুফান, শীলা বৃষ্টি ও টানা বর্ষণে যে সমস্ত নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু হয়েছে সেগুলি হলো, দাড়িয়ারপাড়, কান্দুলী, সালধা, গজারমারী, ধলী, চতল, আয়নাপুর, দুপুরিয়া, জিগাতলা, হাসলিবাতিয়া, বগাডুবি, বনগাঁওসহ আরও বহু এলাকা। ইতি মধ্যেই অতি বর্ষণে বন্যার পানি জেলার শত শত একর জমির বোরো ধান ক্ষেতে পানি প্রবেশ করেছে। ফলে উঠতি বোরো ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কৃষি বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, টানা ১সপ্তাহের বর্ষণের ফলে জেলার বিভিন্ন নদ-নদী গুলিতে পানিতে টয়টুম্বুর। কিছু সংখ্যাক নদীর বাঁধের কিছু অংশ ভেঙ্গে গেছে। ফলে ধানশাইল ইউনিয়নের ধানশাইল, বাগেরভিটা, উত্তর ও দক্ষিণ দাড়িয়ারপাড়, নওকুচি, বাকাকুড়া, গান্ধিগাঁও এবং গৌরীপুর ইউনিয়নের বনগাঁও ও চতল গ্রামের শতাধিক একর জমির বোরো ধান ক্ষেতে পানি প্রবেশ করেছে। গৌরীপুর ইউনিয়নের হলদিবাটা গ্রামের কৃষক ছাইফুল ইসলাম বলেন, তাঁর প্রায় ২ একর জমির বোরো ক্ষেতে পানি প্রবেশ করেছে। পাশের গ্রামের কৃষক ফারুক ও বিল্লাল মিয়া বলেন, তাদের ৭ একর বোরো ক্ষেতে পানি প্রবেশ করেছে। ক্ষতিগ্রস্থ্য কৃষকরা এখন উঠতি বোরো ধান নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন।
এব্যাপারে কৃষি কর্মকর্তা মো. কোরবান আলী বলেন, অতিবর্ষণে বোরো ক্ষেতগুলোয় পানি জমেছে। এখনও তেমন ক্ষতি হয়নি। তবে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে ফসলের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
প্রকাশ থাকে যে, চলতি বোরো মৌসুমে শেরপুর জেলার শেরপুর সদর-২১/২২ হাজার হেক্টর, ঝিনাইগাতী উপজেলা পর্যায়ে প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর, শ্রীবরদীতে ২৫/২৭ হাজার হেক্টর, নালিতাবাড়ীতে ৩০/৩৫ হাজার হেক্টর ও নকলা উপজেলায় ১২/১৩ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে। তবে কৃষি বিভাগের সূত্রমতে উক্ত হিসাবের পার্থক্য রয়েছে। যদি ভারী বর্ষণ না হয় তাহলে গত বছরের চেয়ে এবার আরও বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে কৃষি বিভাগ আশা করছে।