খােলা বাজার২৪।। শনিবার, ১ এপ্রিল ২০১৭: মৌলভীবাজার পৌরসভার বড়হাট এলাকায় জঙ্গি আস্তানায় ‘অপারেশন ম্যাক্সিমাস’ শেষ হয়েছে। বেলা সোয়া ১১টার দিকে অভিযান শেষ হয়। আস্তানায় তিন জঙ্গি নিহত হয়েছে বলে অভিযান সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। বোম্ব ডিসপোজাল টিমের সদস্যরা বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করেছেন এবং সুইপিং এর কাজ চলছে। অভিযান সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
শুক্রবার রাতে বন্ধ রাখার পর শনিবার সকালে ফের অপারেশন ম্যাক্সিমাস শুরু করেন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সোয়াট টিমের সদস্যরা। অভিযান শুরুর পর বেশ কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ পাওয়া যায়।
এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যায় অপারেশন রাতের জন্য স্থগিত করা হয়। তবে রাত ৮টার পর আরও তিনটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ সময় বাড়িটিকে লক্ষ্য করে ২০-২৫ রাউন্ড গুলি চালায়।
শুক্রবার সন্ধ্যায় কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম জানান, ‘মৌলভীবাজারে ‘অপারেশন ম্যাক্সিমাস’ চলমান আছে। তবে অন্ধকার হয়ে যাওয়ায় শনিবার সকাল পর্যন্ত অভিযান স্থগিত করা হয়েছে। সকালে আবহাওয়া ভালো থাকা সাপেক্ষে পুনরায় অভিযান শুরু করা হবে।’
মনিরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘জঙ্গিরা শুক্রবার ভেতর থেকে কিছু বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। আমাদের সোয়াট দল ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করলেই জঙ্গিরা ভেতর থেকে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। আমরা ধারণা করছি, প্রচুর বিস্ফোরক রয়েছে তাদের কাছে। অপারেশনটি অপেক্ষাকৃত একটু জটিল। যে বাড়িটিতে তারা অবস্থান নিয়েছে, সেই বাড়িতে অনেক কক্ষ রয়েছে এবং একটি নির্মাণাধীন ভবন রয়েছে। এ কারণে এই অভিযান শেষ হতে আরও কিছু সময় লাগবে। বাড়িটি এখনও ঘিরে রাখা হয়েছে।’
শুক্রবার সকাল ৯টা ৫২ মিনিটে বড়হাটের এই বাড়িতে ‘অপারেশন ম্যাক্সিমাস’ শুরু হয়। এরপর দিনভর থেমে থেমে গুলি ও বিস্ফোরণ হয়। অভিযান চলাকালে জঙ্গি আস্তানার বাইরে এক সংক্ষিপ্ত প্রেস ব্রিফিংয়ে সিটিটিসি প্রধান মনিরুল ইসলাম জানান, সার্বিক পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে জটিলতার ব্যাপকতা বোঝাতে অভিযানের নাম রাখা হয় ‘অপারেশন ম্যাক্সিমাস’।
এই অভিযানে সিটিটিসি ড্রোন ব্যবহার করে দেখেছে, ডুপ্লেক্স বাড়ির আদলে সাজানো বাড়িটির ভেতরে প্রচুর বিস্ফোরক ছড়ানো-ছিটানো রয়েছে। বাড়ির ভেতর একাধিক কামরায় ৪-৫ জঙ্গি রয়েছে বলেও তারা জানান। ঘেরাওয়ের সময় থেকেই একাধিক বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে তারা। গুলিও করেছে। বড়হাটের এই বাড়ির জানালাগুলো শক্তিশালী কাঁচের তৈরি বলেও জানান সিটিটিসি প্রধান।
এদিকে সিটিটিসি ইউনিটের একজন কর্মকর্তা জানান, তারা ধারণা করছেন এই আস্তানায় আফগান ফেরত একজন জঙ্গি আছে। সে বোমা তৈরিতে দক্ষ বলেও তথ্য রয়েছে পুলিশের কাছে।