খােলা বাজার২৪।। সোমবার, ৩ এপ্রিল ২০১৭: দেশের এক কালের বৃহত্তর জেলা হিসেবে পরিচিত কুমিল্লা জেলার প্রধান কৃষি অঞ্চল হিসেবে দক্ষিনাঞ্চলের ৫টি উপজেলা বর্তমানে আমদানী ও রপ্তানী কারক এলাকা হিসেবে গড়ে উঠেছে ব্যাপক কৃষি পণ্যের হাটবাজার। বিশেষ করে এ অঞ্চলের বিভিন্ন উপজেলা ছোট বড় ও মাঝারী ধরনের শিল্প কল কারখানা গড়ে উঠেলেও বৃহত্তর দরিদ্র জনগোষ্টি কৃষকদের কল্যানে কোন শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেনি।
স্থানীয় শিল্পপতিদের বিশাল বহর এ অঞ্চলের বাসিন্দা হলেও তাদের একান্ত আন্তরিকতা ও উদ্যোগের অভাবে লাকসাম, বরুড়া, সদর দক্ষিন, নাঙ্গলকোট ও মনোহরগঞ্জসহ এ অঞ্চলে কৃষিপণ্য রক্ষনাবেক্ষনে হিমাগারের মত প্রতিষ্ঠান স্থাপন না করায় ওইসব পন্য বাজারজাত করনে এ অঞ্চলের কয়েক লাখ কৃষক পরিবার আর্থিক ক্ষেত্রে মারাত্বক অর্থনৈতিক ঝুঁকিতে পড়েছে। তবে জেলার সদর দক্ষিন উপজেলায় ২টি হিমাগার থাকলেও অপর ৪টি উপজেলায় না থাকায় কৃষি পন্য মজুদে সমস্যার অন্তঃ নেই। কৃষিপন্যের বাজারে চরম মার খাচ্ছে এ অঞ্চলের কৃষকরা। এ অঞ্চলের কৃষক সমাজ বিভিন্ন ব্যবসা ক্ষেত্রে বহু দূর এগিয়ে গেলেও কৃষি শিল্প প্রসার লাভ করতে পারেনি। স্থানীয় কৃষকরা হিমাগারের অভাবে শীত ও গ্রীষ্মকালীন মৌসুমে কৃষিজাত পন্য নিয়ে অবর্ননীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিভিন্ন মৌসুমে দেখা যায় এ অঞ্চলের কৃষকরা প্রচুর পরিমান বাড়তি কৃষি পন্য উৎপন্ন করলেও রক্ষনা-বেক্ষনের অভাবে ঐসব পন্যগুলো নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়ে লাখ লাখ টাকা গচ্ছা দিতে হচ্ছে এবং উৎপাদিত খরচের চেয়ে বিক্রিতে কম দামে অনেক টাকা তাদেরকে লোকসানের হিসাব গুনতে হচ্ছে।
এ অঞ্চলের হাট-বাজার গুলোতে প্রায় সময় কৃষকদের উৎপাদিত কৃষি পন্য রক্ষনা বেক্ষনের অভাবে খোলা আকাশের নিছে স্তুপ দিয়ে বসে থাকতে হচ্ছে পাশাপাশি অনেক সময় প্রখর রোদও বৃষ্টিতে ভিজে কৃষি পন্য গুলো নষ্ট হয়ে গো-খাদ্য হিসাবে ব্যবহার হচ্ছে। অপর দিকে জেলা ও থানার পাশাপাশি বড় বড় হাট বাজার গুলোর সাথে অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার দুরুন উৎপাদিত কৃষিপন্য পরিবহনে রপ্তানী ক্ষেত্রে কৃষকরা বিভিন্ন সমস্যার সাথে দাদন ব্যবসায়ী আড়ৎদার ও চিহ্নিত সন্ত্রাসী ইজাদার সেন্ডিকেটের দৌরাত্ব দিন দিন প্রকট আকার ধারন করায় কৃষকরা তাদের উৎপাদিত কৃষি পন্য উৎপাদনে অনেকটা মন্থর হয়ে পড়েছে। এ ক্ষেত্রে সরকার ও বিপুল পরিমান রাজস্ব আয় থেকেও বঞ্চিত। সরকার বাজার দর নিয়ন্ত্রনে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে বলেও কৃষকরা অভিযোগ করেন এ অঞ্চলে কৃষিপন্য রক্ষনাবেক্ষনে হিমাগার স্থাপন করা প্রয়োজন। কিন্তু সরকারী ভাবে এ প্রকল্পের নামে কোন অর্থ বরাদ্দ নেই। এ অঞ্চলের স্থানীয় বিত্তশালী ও শিল্পপতিরা এ প্রকল্পে বিনিয়োগ করলে নিজেদের ব্যবসায়িক লাভ ও কৃষকদের পন্য মজুদ রাখতে যথেষ্ট সফলতা বয়ে আনতো। বিশেষ করে গ্রামীণ অর্থনীতি আরো চাঙ্গা হয়ে উঠতো।