Mon. Jun 16th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪।। সোমবার, ৩ এপ্রিল ২০১৭: 49 ভোলার মনপুরার উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে বাঁধ না থাকায় জোয়ারের পানিতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে প্রায় ৪ কোটি টাকার রবিশস্য। এতে আর্থিকভাবে লোকসানের মুখে পড়েছেন চাষীরা।

এনজিও থেকে ঋন নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা। এতে একদিকে যেমন তাদের বরিশস্য আবাদে আগ্রহ হারিয়ে গেছে অন্যদিকে স্বপ্নভঙ্গ হয়ে যাওয়া ঋনের দায় নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।
অদিনের বৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতির পর নতুন করে মনপুরার উপজেলার হাজিরহাট, মনপুরা এবং দক্ষিন সাকুচিয়া ইউনিয়নের অন্তত ১০টি গ্রামের হাজারো কৃষক এ মৌসুমে মুগ, ফেলন, মরিচ, চিনাবাদাম, তিল ও সয়াবিনসহ বিভিন্ন বরিশস্যের আবাদ করেছিলেন। এ ফসল আবাদ করতে গিয়ে তাদের এনজিও ও ব্যংক থেকে মোটা অংকের ঋন নিতে হয়েছে।
কিন্তু বাঁধ না থাকায় গত চারদিনের চার দফা অতি জোয়ারের পানিতে এসব ফলস তলিয়ে গেছে। লবনাক্ত পাণিতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমির রব্যিশস্য। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষকরা।
সোনার চর এলাকার কৃষক মো: জাফর জানান, কৃষি ব্যাংক থেকে ২০ হাজর টাকা লোন নিয়ে তিনি মুগ ডাল াল করেছেছেন কিন্তু জোয়ারের পানিতে সব তলিয়ে গেছে।
ঈশ^রগঞ্জ এলাকার নসু মিয়া জানান, ২ কড়া জমিতে মরিচ ও মুগ ডল করেছে, পানিতে সব নষ্ট হয়ে গেছে। একই কথা জানান, খোকন। তিনি বলেন, দারদেনা করে ১৫ হাজার টাকা দিয়ে ফসলের আবাদ করলেও পুরো ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে।
কাউয়ার টেক এলাকার বাবর আলী বলেন, জোয়ারের পানিতে ডাল, মরিচ ও চিনা বাদাম ভেসে গেছে, একই কথা আরেক কৃষক জাকির হোসেন। তিনি বলেন, কয়েকদিন আগের বৃষ্টি ক্ষেত নষ্ঠ হয়েছে, মনে করেছি এবার ঘুরে দাড়াতে পারবো কিন্তু জোয়ারের পানিতে সব শেষ।
কৃষকরা জানালেন, অতি জোয়ারের ১০ গ্রামের কৃষকদের মাথায় হাত পড়েছে, যারা ফলস বিক্রির টাকা দিয়ে ঋন পরিশোধ করবেন তাদের মধ্যে অনেকেই এখন দিশেহারা। তাদের ঘুরে দাড়ানো কোন অবস্থাই খুজে পাচ্ছেন না।
সরেজমিন গিয়ে গেছ গেছে, বিস্তীর্ন ফসলের ক্ষেতে যখন কৃষসকরা ফসল তোলার কথা ভাবছিলেন ঠিক তখনি এমন বিপর্যয় কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না তারা। বিকল্প ব্যবস্থ্য়া ঘুড়ে দাড়ানোর নেই কোন উপায়। তাই চোখ-মুখে তাদের আতংকের ছাপ। ফসলে দিকে চেয়ে আছেন কৃষকরা। তবে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তিল, মুগ ডাল, ফেলন, চিনা বাদামের।
উপেজলা কৃষি অফিসের দেয়া তথ্য মতে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে মনপুরা উপজেলার হাজিরহাট, মনপুরা, উত্তর সাকুচিয়া ও দক্ষিন সাকুচিয়া ইউনিয়নে ১০ হাজার ৯১১ হেক্টর জমিতে রবিশস্যে আবার হয়েছে। এরমধ্যে মুগ ডাল ৯ হাজার ৫’শ হেক্টর, ফেলন ১২০ হেক্টর, মিস্টি আলু ১৫০ হেক্টর, মরিচ ৬০০ হেক্টর, বাতাম ১৬০ হেক্টর, সয়াবিন ৫ হেক্টর তিল ৬ হেক্টর এবং সবজি ৩২০ হেক্টর। এরমধ্যে জোয়ারের পানিতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, ১৩৫০ হেক্টর জমির মুগ, ২৫ হেক্টর জমির ফেলন, ১৮০ হেক্টর জমির মরিচ, ৩৫ হেক্টর চিনা বাদাম, ৬ হেক্টর তিল, ৫ হেক্টর সয়াবিন এবং ৫০ হেক্টর জমির সবজি। মোট ক্ষতিগ্রস্থ জমির পরিমান ১৬ ৮০ হেক্টর। যা টাকার অংকে ৩ কোটি ৯৭ লাখ ৯৭ হাজা টাকা বলে কৃষি অফিস জানিয়েছে।
এ ব্যাপারে মনপুরা উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারি উদ্ভিদ সংরক্ষন অফিসার গুপিনাথ দাস বলেন, বিপর্যয় কাটাতে কৃষকদের রবি মৌসুমে চাষাবাদ বন্ধ দিয়ে আউশ মৌসুমে চাষাবাদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে, এতে করে কৃষকরা ক্ষতি পুশিয়ে নিতে পারবে।
ভোলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (ডিভিশন-২) নির্বাহী প্রকৌশলী মো: কাওসার আলম বলেন, মনপুরা উপজেলায় সাড়ে ৩ কিলোমিটার বাধের কাজের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে, তবে এখন পর্যন্ত অনুমোদন হয়নি।