Wed. Apr 30th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪।। বৃহস্পতিবার, ৬ এপ্রিল ২০১৭:  19কুমিল্লার লাকসাম ও মনোহরগঞ্জ উপজেলার খরা মৌসুমে তীব্র খরা, আবার শীতকালে প্রচন্ড ঠান্ডার কারনে প্রকৃতি স্বাভাবিক গতিতে চলছে না। বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বৃষ্টিপাত কম হওয়া এবং ইরি-বোরো মৌসুমে অপরিকল্পিত ভাবে ভু-গর্ভস্থ থেকে পানি উত্তোলন করায় পানি সংকট দিন দিন আরো প্রকট হয়ে দেখা দেয়।
শুকনো মৌসুমে ডাকাতিয়া নদীসহ খাল,বিল, পুকুর, জলাশয়, ডোবা পানি শূন্য থাকে। প্রায় অর্ধশতাধিক খাল জবর দখলের কারনে যৌবন হারিয়ে বিলীন হবার উপক্রম হয়ে দাড়িয়েছে। ফলে এ অঞ্চলে কৃষি, জনস্বাস্থ্য, উদ্ভিদ, প্রানি সম্পদ ও জেলে-মাঝি মাল্লারা মারাত্মক মানব জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। কুমিল্লার গোমতী নদীর সংযোগ থেকে চাঁদপুরের মেঘনা নদী সংযোগ পর্যন্ত প্রায় ৬০/৬২ মাইল জুড়ে ডাকাতিয়া নদীটির অবস্থান। শুকনো মৌসুমে এ নদী থাকে প্রতিনিয়ত পানি শূন্য। কুমিল্লার লাকসাম-মনোহরগঞ্জ উপজেলা হয়ে লক্ষীপুর ও চাঁদপুর জেলা পর্যন্ত মাইলের পর মাইল এলাকা জুড়ে কচুরীফেনা ও পলি মাটি জমে ভরাট হয়ে গেছে। তার উপর ডাকাতিয়া নদীর দুইপাড় স্থানীয় প্রভাবশালীদের জবরদখল মহোৎসবের প্রতিযোগিতা তো আছেই। নদীটি পানি পূর্ন না থাকলেও কচুরীফেনা, রাইসমিলসহ বিভিন্ন শিল্পকারখানার অপরিশোধিত বর্জ্যে পানি দোষনে কয়েক লাখ মানুষের পানি ব্যবহার স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছে। এদিকে এ অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী লাকসাম রাজঘাট, সামনে পুল ঘাট, দৌলতগঞ্জ গোলবাজার নৌ-যানঘাট, পশ্চিমগাঁও কলেজ ঘাট, ইছাপুরা ঘাট, কালিয়াপুর ঘাট, আমতলী বাজার ঘাট, মনোহরগঞ্জ বাজার নৌযান ঘাট, পোমগাঁও ঘাট, চিতোষী বাজার নৌযান ঘাটসহ প্রায় শতাধিক নৌ-যান ঘাটের অস্থিত্ব আজ বিলীন।
এ অঞ্চলের মানুষের এক সময় জীবন-জীবিকা নির্ভর ছিল এ ডাকাতিয়া নদীর উপর। নৌকা, লঞ্চ ও ষ্টীমারসহ বিভিন্ন নৌযানের মাঝি-মাল্লা ও জেলেরা এ নদীর প্রাণকে সজীব করে তুলতো। দেশের দক্ষিন-পূর্বালঞ্চলের প্রধান বানিজ্যিক নগরী হিসাবে লাকসাম দৌলতগঞ্জ বাজারকে বনিক মেলায় পরিনত হয়ে উঠতো। পারাপারের জন্য ছিল শত শত খেয়াঘাট। কিন্তু আজকাল ঐসব খেয়াঘাটের কোন অস্তিত্ব নেই। ডাকাতিয়া নদীটির দুই পাড়ে ছিল অশংখ্য খেয়াঘাট প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ পারাপার হতো ঐসব খেয়াঘাট দিয়ে। বিশেষ করে চালিতাতলি খাল, কার্জনখাল, বেরুলা খাল, ঘাগৈর খাল, মেল্লাখাল, ফতেপুর-সোনাইমুড়ি খাল, ছিলনিয়া খাল, কুচাইতলি খালসহ হরেকরকম বাহারি নামের ঐতিহ্যবাহী খালগুলোর অস্তিত্ব এখন আর নেই। এ অঞ্চলে নাগরিক সুবিধা বাড়াতে ব্রীজ, সড়ক নির্মান ও হাটবাজার স্থাপন করেছে। ফলে এ অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে কৃষি ও বানিজ্যিক নগরী। এ খেয়াঘাটগুলোকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠছিল অঞ্চল ভিত্তিক দেশের দক্ষিন পূর্বাঞ্চলের নৌ-বন্দর। দীর্ঘ ৪৬ বছর ধরে নদীটি উন্নয়নে কেহই মুখ তুলে তাকায়নি। ফলে জবরদখল কারীদের খপ্পরে অনেক খেয়াঘাট আজ বিলীন হয়ে গেছে।