Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

mmmmmmmmmmmmmখােলা বাজার২৪।। শনিবার, ৮ এপ্রিল ২০১৭: প্রায় একযুগ ধরে নতুন পদ সৃষ্টি না হওয়ার সরকারি কলেজগুলোর শিক্ষা কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি উপরের পদসংখ্যা কম থাকায় পদোন্নতি জটিলতাও দেখা দিয়েছে। এ কারণে কিছু কিছু বিষয়ে একযুগের বেশি সময় একই পদে চাকরি করতে হচ্ছে সরকারি কলেজের শিক্ষকদের। এ ধরনের জটিলতা নিরসন করার উদ্যোগ নিয়েছেন সরকার। বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারের সরকারি কলেজের ‘অধ্যাপক’ পদ দ্বিগুণের বেশি হচ্ছে। ‘সহযোগী অধ্যাপক’ পদও এক হাজারের বেশি সৃষ্টি হবে। অনার্স ও মাস্টার্স কলেজে বিষয়ভিত্তিক ১২ জন শিক্ষকের পদ সৃষ্টি হচ্ছে। কর্মকর্তারা বলেন, গত বছর ২৫শে অক্টোবর সরকারি কলেজে পদ সৃষ্টির জন্য সারসংক্ষেপ প্রস্তুত ও উপস্থাপন করতে মাউশি তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। কমিটির আহ্বায়ক করা হয় মাউশির মনিটরিং অ্যান্ড ইভাল্যুয়েশন-এর পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. সেলিম মিয়াকে। সদস্য সচিব করা হয় মাউশির ঢাকা অঞ্চলের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফকে। সদস্য করা হয় তৎকালীন ঢাকা কলেজের প্রভাষক ।
কমিটি গত সপ্তাহে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পদ বাড়লেও সরকারের বাড়তি অর্থ খরচ হবে না। নতুন পদ সৃষ্টির মধ্য দিয়ে শিক্ষা ক্যাডারে বহু বছর ধরে পদোন্নতি বঞ্চিতদের মুখে হাসি ফুটবে। শিক্ষক সংকটও দূর হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (কলেজ) মোল্লা জালাল উদ্দিন বলেন, প্রতিবেদন এখনো আমার হাতে পৌঁছেনি। পাওয়ার পর তা
অনুমোদনের জন্য জনপ্রশাসন ও অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। তিনি বলেন, রাজধানী ও জেলা পর্যায়ের অনার্স মাস্টার্স কলেজে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বিবেচনা করে পদ সৃষ্টি করা হবে। প্রক্রিয়াটি প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে বলে তিনি জানান।
প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, সারা দেশে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের ২১৬টি সরকারি কলেজ রয়েছে। এর মধ্যে মহানগর ও জেলা শহরে অবস্থিত ১৫৩টি এবং উপজেলায় ৬৩টি। স্নাতক পাস ৬৫টি কলেজ রয়েছে। এর মধ্যে মহানগর ও জেলা শহরে ১৯টি এবং উপজেলায় ৪৬টি। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের ২৬টি কলেজ রয়েছে। এর মধ্যে মহানগর ও জেলা শহরে ২৩টি এবং উপজেলায় তিনটি। প্রতিবেদন তৈরিতে সদ্য জাতীয়করণ করা কলেজ ও টিসার্স ট্রেনিং কলেজগুলোকে তালিকাভুক্ত করা হয়নি।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, সারা দেশের ৩০৭টি কলেজে বর্তমানে অধ্যাপক পদে ৫১৬ জন শিক্ষক কর্মরত আছেন। নতুন করে এক হাজার একশত পাঁচটি অধ্যাপকের পদ সৃষ্টির প্রস্তাব করা হয়েছে। সহযোগী অধ্যাপকের পদ আছে দুই হাজার দুই শত ৪৬টি। প্রস্তাব করা হয়েছে তিন হাজার দুই শত ৮২টি। সহকারী অধ্যাপকের পদে বর্তমানে চার হাজার তিনশত ৫৭ জন কর্মরত আছেন। নতুন করে প্রস্তাব করা হয়েছে চার হাজার একশত ৫৩টি। প্রভাষক পদ বর্তমানে আট হাজার একশত ৩১ জন কর্মরত আছেন। প্রস্তাব করা হয়েছে তিন হাজার দুই শত ৯৬টি। মহানগর ও জেলার স্নাতক, স্নাতকোত্তর পর্যায়ের কলেজে অধ্যাপকের পদ আছে ৫০৪টি প্রস্তাব করা হয়েছে ১১০৫টি। সহযোগী অধ্যাপকের পদ আছে ১৮৯৯টি,  প্রস্তাব করা হয়েছে ১২১২টি। সহকারী অধ্যাপক পদ আছে ৩১৩৩টি, প্রস্তাব করা হয়েছে ২৯৪২টি। প্রভাষক পদ আছে ৪৯৭৯টি, প্রস্তাব করা হয়েছে ২২৮৩টি। মহানগর ও জেলাসমূহের স্নাতক (পাস) পর্যায়ের কলেজে বর্তমানে কোনো অধ্যাপক পদ নেই। নতুন করে প্রস্তাবও করা হয়নি। সহযোগী অধ্যাপক পদ আছে ১৪টি, প্রস্তাব করা হয়েছে ১৯২টি। সহকারী অধ্যাপক পদ আছে ১২৮টি, প্রস্তাব করা হয়েছে ১৬৩টি। প্রভাষক পদ আছে ৩৮৩টি, প্রস্তাব করা হয়েছে ১৫৯টি। মহানগর ও জেলা পর্যায়ের উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের কলেজে বর্তমানে কোনো অধ্যাপক পদ নেই। নতুন করে প্রস্তাবও করা হয়নি। সহযোগী অধ্যাপক পদ আছে দুটি,  প্রস্তাব করা হয়েছে ৯৬টি। সহকারী অধ্যাপক পদ আছে ১১৮টি, প্রস্তাব করা হয়েছে ২১০টি। প্রভাষক পদ আছে ২৪২টি, প্রস্তাব করা হয়েছে ১৬৪টি। উপজেলায় স্নাতক, স্নাতকোত্তর পর্যায়ের কলেজে অধ্যাপকের পদ আছে ১২টি। নতুন করে এ  পদে প্রস্তাব করা হয়নি। সহযোগী অধ্যাপকের পদ আছে ২৭৯টি, প্রস্তাব করা হয়েছে ৩৯১টি। সহকারী অধ্যাপকের পদ আছে ৬৭৩টি, প্রস্তাব করা হয়েছে ৪০৫টি। প্রভাষকের পদ আছে ১৫৬৩টি, প্রস্তাব করা হয়েছে ৩৪২টি।
এ প্রস্তাবকে অভিনন্দন জানিয়ে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সভাপতি মো. আইকে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার বলেন, এটা আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি। আশা করি জনপ্রশাসন ও অর্থ মন্ত্রণালয় এতে সায় দেবে।