Tue. Jun 17th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

jute-ministryখােলা বাজার২৪।। রবিবার, ৯ এপ্রিল ২০১৭: বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম বলেছেন,“ ধান, চাল, গম, ভুট্টা, সার ও চিনি সহ ১৭টি পণ্য সংরক্ষণ ও পরিবহনে পাটের বস্তার সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে সারাদেশে আবারো আগামী ১৫ মে থেকে বিশেষ অভিযান শুরু হবে । কারাদন্ড, অর্থদন্ড, ব্যাংক ঋণ সুবিধা বন্ধ, লাইসেন্স বাতিল, আইআরসি বা ইআরসি বাতিলের বিধান রেখে ‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন, ২০১০ বাস্তবায়নে এবার আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে আরো কঠোর হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এজন্য এবার বিশেষ অভিযানে কারাদন্ড, অর্থদন্ড এ দুটি দন্ড উপর অধিক গুরুত্ব প্রদান করা হবে। যদিও ধান, চাল, গম, ভুট্টা, সার ও চিনি সংরক্ষণ ও পরিবহনে দেশের বিভাগ, জেলা, উপজেলা, থানা পর্যায়ে মোবাইকোর্ট পরিচালনা অব্যাহত রয়েছে।”

সচিবালয়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আজ রবিবার সকালে আন্ত:মন্ত্রণালয় সভায় তিনি একথা বলেন।

এ সময় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: ফয়জুর রহমান চৌধুরী,গোপাল কৃষ্ণ ভট্টাচার্য্য (অতি: সচিব), পাট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোছলেহ উদ্দিন, বিজেএমসির চেয়ারম্যান ড. মো: মাহমুদুল রহমান,বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়েশন(বিজেএমএ) এর প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন স্টোক হোল্ডারগণ এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন।

“পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন -২০১০” এর সুষ্ঠু বাস্তবায়ন পর্যালোচনা, ভবিষ্যৎ করণীয় নির্ধারণ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট স্টোক হোল্ডারদের নিয়ে এ মতবিনিময় সভা আয়োজন করা হয়।

সভায় জানানো হয়, আইনটি সমূর্ণরূপে বাস্তবায়িত হলে প্রতিবছর ১০০ কোটি পাটের বস্তার চাহিদা সৃষ্টি হবে । স্থানীয় বাজারে পাট ও পাটজাত পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে, পাট চাষীরা পাটের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত হবে এবং সর্বোপরি পাটের উৎপাদন বৃদ্ধিসহ পাটের শিল্প ও পরিবেশ রক্ষা পাবে । গত ৩০ নভেম্বর,২০১৫ থেকে সপ্তাহব্যাপী ‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন-২০১০’ এর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য দেশজুড়ে এক বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয় এবং উক্ত অভিযান এখনও অব্যাহত রয়েছে । এ অভিযানে জেলা প্রশাসন মাঠ পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট দপ্তর/প্রতিষ্ঠান/চেম্বার/বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া এর সহযোগিতায় জনগনকে উদ্বুদ্ধ করা সহ ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার মাধ্যমে আইন বাস্তবায়নে সাহসী ও গতিশীল ভূমিকা পালন করেছে । তার ফলশ্রুতিতে দেশের যে কোন শহর-বন্দরে, হাটে- বাজারে বর্ণিত আইনের অধীন ধান, চাল, গম, ভুট্টা, সার ও চিনি সংরক্ষণ ও বিপণনে পাটজাত মোড়ক বা বস্তা দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে। আইনটি বাস্তবায়নে সাধারণ মানুষ এখন সচেতন হয়েছে । তদুপরি লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, দেশের বিভিন্ন বাজারে এখন কিছু কিছু আড়ৎ/দোকান/প্রতিষ্ঠানে/বিভিন্ন সুপার সপ এ প্লাষ্টিকের ব্যাগে পণ্য মোড়কীকরণ করে বাজারজাত করা হচ্ছে যা রোধ করা প্রয়োজন । ‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন-২০১০’ অনুযায়ী ছয়টি পণ্য (ধান, চাল, গম, ভূট্টা, সার ও চিনি) মোড়কীকরণে পাটজাত পণ্যের ব্যবহার প্রায় শতভাগ বাস্তবায়ন হয়। এ জন্য গত ৬ মার্চ,২০১৬ তারিখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ৪১ ব্যাক্তি/প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয় । এ আইন বাস্তবায়ন অগ্রগতি বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের সকল যুগ্ম সচিবদের সমন্বয়ে ০৯ (নয়)টি মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে ।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আবারো ধান, চাল, গম, ভুট্টা, সার ও চিনি সংরক্ষণ ও পরিবহনে প্লাষ্টিকের বস্তার ব্যবহার লক্ষ্য করা যাচ্ছে । ‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন-২০১০’ এ সব পণ্যের ক্ষেত্রে সঠিক ভাবে পালন হচ্ছে কিনা তা মনিটরিং এর জন্য আবারো ঢাকাসহ সারা দেশে বিশেষ অভিযান পরিচালিত হবে । এজন্য সকল বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকগণকে এ আইন সুষ্ঠু বাস্তবায়নে পূর্বের ন্যায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনাসহ মনিটরিং এর জন্য আবারো নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।”

উল্লেখ্য, আইন অনুযায়ী ০৬(ছয়)টি পণ্য অর্থাৎ ধান,চাল,গম,ভূট্টা,সার ও চিনি পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহারের জন্য নির্ধারিত হয়েছে । পরবর্তীতে ২১/০১/২০১৭ তারিখে আরো মরিচ,হলুদ,পেয়াজ,আদা,রসুন,ডাল,ধনিয়া,আলু,আটা,ময়দা,তুষ-খুদ-কুড়া সহ মোট ১৭ (সতের)টি পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহারের জন্য নির্ধারিত করা হয়েছে । ‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন, ২০১০ এর ধারা ১৪ অনুযায়ী পাটের মোড়ক ব্যবহার না করলে অনূর্ধ্ব এক বছর কারাদন্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত করা হবে। এ অপরাধ পুনঃসংগঠিত হলে সর্বোচ্চ দন্ডের দ্বিগুণ দন্ডে দন্ডিত করা হবে । স্থানীয় প্রশাসন ও ব্যবসায়ীদের সার্বিক সহায়তায় ৩০নভেম্ব,২০১৫ হতে সপ্তাহকাল ব্যাপী বিশেষ অভিযানকালে সমগ্রদেশে এ সময়ে ১৬০৮টি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার মাধ্যমে ১.৫১ কোটি টাকা অর্থ দন্ড এবং ০২ জনকে কারাদন্ড প্রদান কার হয় । গত জুলাই/২০১৬ হতে মার্চ/২০১৭ পর্যন্ত সমগ্র দেশে ৮৪৭টি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার মাধ্যমে ৭৬.৯৬ লক্ষ টাকা অর্থ করা হয়েছে ।