খােলা বাজার২৪।। সোমবার, ১০ এপ্রিল ২০১৭: কুমিল্লার লাকসাম ও মনোহরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ভাঙারি ব্যবসার অন্তরালে যত্রতত্র গড়ে উঠেছে শক্তিশালী বিভিন্ন অপরাধী সিন্ডিকেট। ফলে তারা এলাকায় চুরি, ছিনতাই, মাদক, জুয়া, যৌনসহ বিভিন্ন অপরাধী তৎপরতার সাথে জড়িত। স্থানীয় প্রশাসনের নাকের ডগায় ওইসব চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন অপকর্ম প্রকাশ্যে চালিয়ে গেলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের রহস্যজনক নীরব ভূমিকা নিয়ে এলাকার জনমনে নানাহ প্রশ্ন দানা বেঁধে উঠেছে।
উপজেলা দুটোর বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠা ভাঙ্গারী ব্যবসাকে কেন্দ্র করে ওইসব দোকানী ও সিন্ডিকেট সদস্যরা স্বল্প বেতন কিংবা কমিশনে স্থানীয় মাদকসেবী, বখাটে যুবক ও ছিচকে চোরদের এ পেশার কাজে লাগিয়ে এবং তাদের ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রকার লোহার মালামাল, টিন, ষ্টিল, তামা, পেপার, বই, এল্যুমিনিয়াম, প্লাষ্টিক ও টায়ার জাতীয় দ্রব্য কম দামে ক্রয়ে বিশাল মজুদ গড়ে তুলে দেশের বিভিন্ন স্থানে মিল-কারখানায় বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এ পেশায় দু’উপজেলায় প্রায় শতাধিক ভাঙ্গারী দোকানের সাথে প্রায় দুই সহস্রাধিক শিশু-কিশোর এবং নারীরা জড়িত। এছাড়া রয়েছে এ অঞ্চলে প্রায় ৩০ টি ভাঙ্গারী মালামাল ভাঙ্গার কারখানা। এদের মূলত সংশ্লিষ্ট বিভাগের কোন বৈধ কাগজপত্র নেই।
ভাঙারি ব্যবসায়ীরা তাদের নিযুক্ত ফড়িয়া- হকার কিংবা খুচরা ক্রেতাদের মাধ্যমে এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে হরেক রকম সেন্ডিকেট সদস্যরা রাতের অন্ধকারে টিউবওয়েলের মাথা, লোহার পাইপ, গাড়ীর যন্ত্রাংশ, প্লাষ্টিক সামগ্রী, নতুন-পুরাতন রড, সরকারী-বেসরকারী দপ্তর কিংবা আবাসিক এলাকায় পরিত্যাক্ত পড়ে থাকা বিভিন্ন মালামাল নিয়ে এসে ভাঙ্গারী দোকানে বিক্রি করে দিচ্ছে। এ দু’উপজেলার ভাঙ্গারী ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন টনকে টন বিভিন্ন মালামাল ট্রাক যোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ ও স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ক্যাডারদের ব্যবহার করে এ ভাঙ্গারী ব্যবসাটি খুবই লাভজনক বিধায় উপজেলা দুটোর আনাচে-কানাচে, শহর ও গ্রামঞ্চলের অলিগলিতে গড়ে উঠেছে অসংখ্য ভাঙ্গারী দোকান। ভাঙ্গারী দোকানগুলোতে শ্যালু যন্ত্রাংশ, ইলেকট্রনিক্স মোটর, রেলওয়ের স্লিপার ও পাতসহ অন্যান্য মূল্যবান যন্ত্রাংশ, ফ্যান, দরজা-জানালার গ্রিল, টিউবওয়েল, যানবাহনের যন্ত্রাংশ, সাইকেল- রিক্সাসহ বিভিন্ন পরিবহনের চাকা, বিদ্যু সরঞ্জাম, কৃষি যন্ত্রপাতি, এল্যুমিনিয়াম ও তামার দ্রব্য, লোহার পাত ও পাইপ এবং রডসহ বিভিন্ন লৌহজাত দ্রব্য প্রকাশ্যে বেচাকেনা ও প্রতিনিয়ত দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার হচ্ছে। এসবের পিছনে স্থানীয় মাদক, ছিচকে চোর, বখাটে যুবক, যৌন মহিলা ও শিশু-কিশোর, কিশোরীদের বিভিন্ন অপরাধী সেন্ডিকেট সহযোগিতা দিয়ে আসছে।