Thu. May 1st, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

22খােলা বাজার২৪।। মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল ২০১৭:  বাংলাদেশে অবৈধভাবে বসবাসকারী মিয়ানমারের অনিবন্ধিত নাগরিকদের মধ্যে রোহিঙ্গা মুসলমান ছাড়াও কিছু সংখ্যক হিন্দু এবং বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীও আছে। চলমান অনিবন্ধিত মিয়ানমারের নাগরিক শুমারিতে চাঞ্চল্যকর এই তথ্য উঠে এসেছে। আগামী জুনের পর এই শুমারির ফলাফল প্রকাশ করা হতে পারে।

বাংলাদেশে অবস্থানরত মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির সংখ্যা নির্ধারণ করার জন্য এই শুমারি শুরু হয়। শুমারির জন্য বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো কর্তৃক গৃহীত ‘’বাংলাদেশে অবস্থানরত অনিবন্ধিত মিয়ানমারের নাগরিক শুমারি ২০১৫’ নামের এই প্রকল্পটি শুরু হয় ২০১৫ সালের এপ্রিলে। গত ডিসেম্বরে এই প্রকল্প সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু গত অক্টোবরে মিয়ানমার থেকে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ শুরু হলে প্রকল্পের মেয়াদ চলতি জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
বাংলাদেশে অবস্থানরত অনিবন্ধিত মিয়ানমারের নাগরিক শুমারি প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশে অবস্থান করা অনিবন্ধিত মিয়ানমারের নাগরিকদের মধ্যে রোহিঙ্গা ছাড়াও কিছু সংখ্যক হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী রয়েছে। তবে সংখ্যায় তা নগণ্য।’

আলমগীর হোসেন আরো বলেন, ‘গত ডিসেম্বরে শুমারির ফলাফল প্রকাশ করার কথা ছিলো। কিন্তু সদ্য প্রবেশ করা রোহিঙ্গাদেরকেও এই প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত হলে মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয় জুন পর্যন্ত।’

‘অনিবন্ধিত অবস্থায় বসবাস করা মিয়ানমারের নাগরিকদের মাঠ পর্যায়ের ডাটা সংগ্রহ করার কাজ শেষ হয়েছে, এখন চলছে ডাটা এন্টি্র কাজ। যথাসময়ে প্রকল্পটি শেষ করে মিয়ানমারের নাগরিকদের সম্পর্কে তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে,’ যোগ করে তিনি।

জাতিগত নিপীড়নের শিকার হয়ে রোহিঙ্গা মুসলমানরা মিয়ানমার থেকে আশ্রয়ের আশায় বাংলাদেশে চলে আসে।

তবে কী কারনে বৌদ্ধ ও হিন্দুরা এখানে চলে এসেছে সেই সম্পর্কে ধারণা দিতে পারেননি শুমারি পরিচালনা প্রকল্পের প্রধান আলমগীর হোসেন।

তিনি বলেন, ‘কি কারনে তারা এখানে এসেছে তা আমাদের জানার বিষয় ছিল না, আমরা শুধু জানতে চেয়েছি তারা কোন দেশের নাগরিক এবং কখন থেকে তারা এখানে বসবাস করছে।’

মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী জেলা কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক আলী হোসেন জানিয়েছেন, মিয়ানমার থেকে আসা অনিবন্ধিত নাগরিকদের মধ্যে বেশির ভাগই রোহিঙ্গা দুটি নিবন্ধিত ক্যাম্প এবং আরো কয়েকটি অনিবন্ধিত ক্যাম্প ছাড়াও দেশে বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করছে, জরিপ শেষে জানা যাবে তাদের প্রকৃত সংখ্যা।

তিনি আরো জানান, নিবন্ধিত ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনের তত্ত্বাবধানে আছে। তাদের সংখ্যা ৩০ হাজারের মতো। আর অনিবন্ধিত ক্যাম্পের রোহিঙ্গাদেরকে সীমিত আকারে খাদ্য, ঔষধ, শিক্ষা ও স্যানিটেশন সুবিধা দেয় আন্তর্জাতিক অভিবাসী সংস্থা আইওএম।

তবে, আইওএমের কক্সবাজার অফিসের একজন কর্মকর্তা সৈকত বিশ্বাস জানিয়েছেন, তারা কক্সবাজার জেলার মোট চারটি অনিবন্ধিত ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদেরকে সীমিত আকারের ত্রাণ সহায়তা দিয়ে থাকেন।

এরমধ্যে টেকনাফের লেদা ক্যাম্পে ২০হাজার, উখিয়া উপজেলার শামলাপুরে ১০ হাজার, বালুখালীতে ১২ হাজার এবং কুতুপালং ক্যাম্পে ৬৫ হাজার রোহিঙ্গাকে সেবা প্রদান করা হয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।

পরিসংখ্যান ব্যুরো সূত্রে আরো জানা গেছে, চট্টগ্রাম বিভাগের চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান এবং বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালী জেলায় রোহিঙ্গাসহ মিয়ানমারের নাগরিকদের সন্ধানে শুমারি চালানো হয়। এরমধ্যে বেশির ভাগ রোহিঙ্গার অবস্থান সনাক্ত হয়েছে কক্সবাজার এবং চট্টগ্রাম জেলায়।