খােলা বাজার২৪।। শনিবার, ১৫ এপ্রিল ২০১৭: জেসিকা চাকমা, রাঙ্গামাটি : বিপুল আনন্দমুখর পরিবেশে রাঙ্গামাটিতে শেষ হয়েছে বৈসাবি আর বৈশাখী উৎসব। রাঙ্গামাটিসহ পাহাড়ে ২৯ চৈত্র (বুধবার) শুরু হয়ে নানা আচার অনুষ্ঠানে শুক্রবার শেষ হয়েছে পাহাড়িদের প্রাণের উৎসব তিনদিনব্যাপী বৈসাবি।
প্রতিবছর চৈত্রসংক্রান্তি পুরানকে বিদায় এবং নতুনের প্রার্থনায় তিনদিনের এই সামাজিক উৎসব পালন করে পাহাড়ি জনগণ। ইংরেজী ১২, ১৩, ১৪ এপ্রিল অথবা বাংলা ২৯-৩০ চৈত্র ও পয়লা বৈশাখে তিনদিন ধরে উৎসবটি পালন করে চাকমারা বিজু, মারমারা সাংগ্রাইং, ত্রিপুরারা বৈসুক, রাখাইনরা চাংক্রান, তঞ্চঙ্গ্যারা বিষু, অহমিয়া জনগোষ্ঠী বিহু নামে। প্রতি বছর উৎসব ঘিরে শহরসহ পল্লী-গ্রাম জুড়ে তৈরি হয় আনন্দমুখর পরিবেশ।
উৎসবের নাম ছোট আকারে ত্রিপুরাদের বৈসুক, মারমাদের সাংগ্রাইং আর চাকমাদের বিজু শব্দের আদ্যাক্ষর দিয়ে সাজানো হয়েছে বৈসাবি। আর উৎসবের মূল আকর্ষণ হল- চাকমাদের গেঙখুলি গীতের (লোকজ পালা গান) আসর ও বাঁশ নৃত্য, মারমাদের জলকেলি এবং ত্রিপুরাদের গৈরাইয়া নৃত্য।
এদিকে নববর্ষের প্রথমদিন শুক্রবার বৈসাবির সঙ্গে একাট্টা হয় বর্ষবরণ উৎসব। এ উপলক্ষে শুক্রবার সকালে রাঙ্গামাটি শহরের প্রধান সড়কে বের করা হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রাটি পৌরসভা চত্ত্বর হতে শুরু হয়ে জেলা প্রশাসন কার্যালয় গিয়ে শেষ হয়। এতে অংশ নেন, সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার, মহিলা এমপি ফিরোজা বেগম চিনু, জেলা প্রশাসক মো. মানজারুল মান্নান, পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসানসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষ। শোভাযাত্রা শেষে জেলা প্রশাসনের প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় বৈশাখীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
একই দিন বৈসাবির শেষ দিবসে উদযাপিত হয়েছে চাকমাদের গোজ্যেপোজ্যে, মারমাদের সাংগ্রাইং আপ্যাইং এবং ত্রিপুরাদের বিসিকাতাল। তার মধ্যে দিয়েই শেষ হয় তিনদিনের বৈসাবি। বৈসাবি আর বৈশাখির একাট্টা উৎসবে বর্ণিল হয়ে ওঠে পার্বত্য জনপদ রাঙ্গামাটি। উৎসবে মাতে বাঙালি পাহাড়ি।
এদিকে নববর্ষের প্রথমদিন রাঙ্গামাটির পর্যটন স্পটগুলোতে ঢল নামে বিপুল পর্যটকের। বাইরে থেকে আসা পর্যটকদের পাশাপাশি পাড়ি জমান স্থানীয়রাও। এতে মুখর হয়ে ওঠে পর্যটন কমপ্লেক্সের ঝুলন্ত সেতুসহ আশেপাশের স্পটগুলো।