খােলা বাজার২৪।। রবিবার, ১৬ এপ্রিল ২০১৭: কাজী কামাল হোসেন,নওগাঁ : নিজের পাঁচ কাঠা জমি থেকে ফুলের ব্যবসা শুরু। দিন বদলের পালায় এখন লীজকৃত ১০ বিঘা জমিতে বিভিন্ন ধরনের ফুল চাষ করছেন। সেখানে প্রতিদিন ৩/৪ জন শ্রমিক কাজ করছেন। সংসারে এসেছে স্বচ্ছলতা। ফুল চাষ করে ভাগ্য বদলেছে নওগাঁ সদর উপজেলার লখাইজানি গ্রামের আব্দুস সালাম। গ্রামের নার্সারি মালিক ছলিম উদ্দিন দীর্ঘদিন থেকে ফুল চাষের সাথে জড়িত। তার নার্সারি বাগান থেকে ফুল এবং চারাগাছ বিভিন্ন হাট-বাজারে ভ্যানে করে আনানেয়া করতেন। ছলিম উদ্দিনের পরামর্শে ২০০১ সালে নিজের পাঁচ কাঠা জমিতে প্রথম গাঁধা ফুলের চাষ করেন আব্দুস সালাম। সে বছর বেশ ভাল লাভ থাকে। লাভের টাকার সাথে পরের বছর ধারদেনা করে টাকা সংগ্রহ করে এক বিঘা জমি লিজ নিয়ে সেখানে ফুল চাষ শুরু হয়। এভাবে ফুলের চাহিদা বৃদ্ধি ও দাম ভাল পাওয়ায় ফুল চাষ আরও বেড়ে যায়। এখন ১০ বিঘা জমিতে বিভিন্ন ধরনের ফুল চাষ করেন তিনি। জয়পুরহাট, বগুড়া, রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ নওগাঁর বিভিন্ন উপজেলা থেকে এসে ফুল ব্যবসায়ীরা (পাইকার) এসে ফুল নিয়ে যান। গোলাপ ১০০টি ১৫০-২০০ টাকা, রজনিগন্ধা ১০০টি ২০০-২৫০ টাকা, গাঁধা ১ হাজার ৩০০-৩৫০ টাকা। সারা বছরই ফুল বিক্রি হলেও বিশেষ দিন বিশ্ব ভালবাসা, ইংরেজি নববর্ষ ও দিবস ২১শে ফেব্রুয়ারি, ২৬ মার্চ, ১৬ ডিসেম্বর গুলোতে ফুলের চাহিদা বেশি থাকায় দামও বৃদ্ধি পায়। একদিন পর পর জমি থেকে ফুল উঠাতে হয়। আব্দুস সালাম বলেন, নিজের নামটাও ঠিকমতো লিখতে পারিনা। সকলের সহযোগীতায় ও নিজের বুদ্ধি এবং পরিশ্রমের মাধ্যমে অনেকটাই এগিয়েছি। ফুল চাষ করেই সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে। পরিবারের চারজন সদস্য। বড় ছেলে সোহেল ফুলের বাগান দেখাশুনা করে এবং ছোট ছেলে স্বাধীন নবম শ্রেনীতে পড়ছে। বড় ছেলের নামে ‘সোহেল নার্সারী’ নামকরন করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ফুল ব্যবসার লাভ থেকে বাড়ি করার জন্য ভাইয়ের জমির অংশ কিনে নিয়েছেন। সেখানে বাড়ি করার জন্য প্রক্রিয়া চলছে। এছাড়া আরো একটু ফসলি জমি কিনা হয়েছে। এবার বৈশাখ উপলক্ষ্যে ফুলের চাহিদা বেশ ভাল আছে। আর সে মোতাবেক ফুল প্রস্তুত করা হয়েছে। বাগানে গোলাপ, রজনিগন্ধা, গাঁধা ও গ্লাডিওলাস ফুলের চাষ করেছেন। আগামী বছরে রোপনের জন্য গোলাপের ভাল জাতের ১০ হাজার কার্টিং চারা প্রস্তুত করছেন। তবে বিদেশী গোলাপের একটু সমস্যা থাকায় তেমন চাষ করা হয়না। সমস্যা: ফুলে মাড়কের সমস্যা দেখা দেয়। কৃষি অফিস এ মাকড়ের বিষয়ে সঠিক কোন পরামর্শ দিতে পারেনা। কীটনাশক প্রয়োগ করেও অনেক সময় কোন লাভ হয়না।
প্রতিবেশি এছাহাক বলেন, এক সময় কৃষি কাজ ও ভ্যান চালিয়ে কষ্ট করে সংসার চালাতেন সালাম। ফুলের চাষ করার পর থেকে তার সংসার ভাল হয়েছে। এখন তার বাগানেই লোকজন কাজ করছেন।